কলকাতা: এসএলএসটি নিয়োগ মামলায় নয়া মোড় (SLST Teacher Appointment)। নিয়োগ সুপারিশপত্রে সই করেননি প্রাক্তন দুই চেয়ারম্যান। ভরা এজলাসে দাঁড়িয়ে দুই প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার এবং অশোককুমার সাহা জানিয়ে দিলেন, সুপারিশপত্রে আদৌ তাঁরা সই করেননি। ডিজিটাল সই বসিয়ে নিয়োগ সুপারিশপত্র প্রদানের বিষয়টির পুর দেখভাল করেছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের(School Service Commission) প্রোগ্রাম অফিসার স্মরজিৎ আচার্য এবং উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুই প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে এজলাসে দাঁড়িয়ে করা মন্তব্য হলফনামা আকারে জানাতে নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবারের মধ্যে ওই হলফনামা জমা দিতে হবে। ওইদিনই দুপুর ২টোয় মামলা ফের শুনানি।
এর আগেই এসএলএসটি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি। কয়েকদিন আগে তিনি দুই প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সেইমতোই প্রাক্তন দুই চেয়ারম্যান হাজির হন। এজলাসে দাঁড়িয়ে অশোককুমার সাহা জানান, তিনি নিজে থেকে কোনও সই করেননি। তাঁর সই স্ক্যান করে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে। এই সুপারিশ সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই। বিষয়টি দেখতেন প্রোগ্রাম অফিসার স্মরজিৎ আচার্য এবং উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা। একই কথা বলেন আর এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকারও।
আরও পড়ুন: Kolkata High Court: চাকরি বাতিল হওয়া ছয় অঙ্ক শিক্ষকের নিয়োগ-নথি তলব হাইকোর্টের
নিয়োগের সুপারিশপত্রে কার সই ছিল, তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন উঠেছিল। স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ একে অপরের উপর দায় চাপায়। দুই সরকারি সংস্থাই জানায়, তারা সুপারিশপত্র দেয়নি। আদালত প্রশ্ন তোলে, তাহলে সুপারিশপত্র দিল কে?
এদিন দুই প্রাক্তন চেয়ারম্যানের স্বীকারোক্তিতে প্রমাণ হয়ে গেল, কমিশনের অফিসাররাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আরও জানা গিয়েছে, একই ব্যক্তিকে দুবার নিয়োগের সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে। একটি ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর, অন্যটি ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি।
অন্য একটি মামলায় এসএলএসটি নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি-রহস্যের কিনারায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরীক্ষায় না বসেও চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোনও মেধা তালিকায় নাম নেই, পরীক্ষায় অসফল। তবু কী করে চাকরি মিলল, তা নিয়ে এদিন বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। ২৮ মার্চের মধ্যে সিবিআইকে অনুসন্ধানের প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।