নন্দীগ্রাম: পঞ্চায়েত ভোটের আগেই এখন থেকে হিন্দু গ্রামগুলোতে দুর্গাবাহিনী তৈরি করার বার্তা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। শুধু তাই নয়, ভোট লুট হলে ব্যালট বাক্স তুলে পুকুরে ফেলে দেওয়ার নিদান দিলেন তিনি। পুরভোটে তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগে সোমবার বনধের সমর্থনে এক পথসভায় শুভেন্দু ধর্মের দোহাই দিয়ে বিজেপি সমর্থকদের উত্তেজিত করে তোলার চেষ্টা করেন। ছাপ্পা-রিগিং (West Bengal Civic Polls) করার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ভোট বাতিলের আবেদন জানাবেন বলেও জানান। সেই সঙ্গে পুলিসকে একহাত নিয়ে বলেন, আপনারাও তৈরি থাকুন বিজেপির অধীনে একদিন কাজ করতে হবে বলে। উত্তরপ্রদেশের ভোটের পরই তৃণমূল সরকারকে উৎখাতের পর্ব শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামসহ জেলা নেতাদের যে সমস্ত ‘মিথ্যা’ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, তা নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হবেন তিনি।
এদিন শুভেন্দুর ভাষণ ছিল আদ্যন্ত ধর্মীয় উসকানি ও প্ররোচনামূলক। রবিবার রাজ্যের ১০৮ টি পুরসভা ভোটে সন্ত্রাস, ছাপ্পা ও মারধরের অভিযোগে এদিন ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। সেই বনধ সফল করতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়াতে একটি পথসভা করেন। সেখানেই তিনি নন্দীগ্রামের মানুষকে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে অভয় দেন। ধর্মীয় বিভাজনের গণ্ডি কেটে বলেন, এখন থেকে হিন্দু এলাকাগুলিতে মহিলাদের একজোট করে দুর্গাবাহিনী গড়ে তুলতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটে তারাই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বুথকে আগলে রাখবে।
পুরভোটে শাসকদল পুলিস-প্রশাসন, গুন্ডাবাহিনী দিয়ে যেভাবে সন্ত্রাস, কর্মীদের মারধর করেছে, তার জন্য বিজেপির প্রার্থীরা আদালতে অভিযোগ দায়ের করছেন। তিনি বলেন, আমদের কাছে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব। এছাড়াও নন্দীগ্রামের মানুষকে বনধ তুলে নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, হঠাৎ করে বনধ ডাকায় অনেকের সমস্যা হচ্ছে। তাই দুপুরের পর আর রাস্তায় নামতে হবে না।
আরও পড়ুন: Sundarbans: সুন্দরবনে বাঘের হানায় ক্ষতিপূরণ নিয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
নন্দীগ্রামের ওসি এবং জেলা পুলিস সুপারকে সতর্ক করে বলেন, আর বেশিদিন নেই, বিজেপির অধীনে কাজ করার জন্য তৈরি থাকুন। পুলিসকে পা-চাটা বলেও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, একদিন মানুষ ভেবেছিল সিপিএমকে হঠানো অসম্ভব। কিন্তু, তাও ঘটেছিল। মহিলাদের নিয়ে গড়ে তোলা দুর্গাবাহিনীকে শাঁখ, কাসর বাজিয়ে পথে নামার ডাক দিয়ে বলেন, পঞ্চায়েত ভোট সম্ভবত ব্যালটেই হবে। প্রাণ দিতে হবে না। ভোট লুটের চেষ্টা হলে শুধু বাইরে বেরিয়ে এসে ব্যালট বাক্স তুলে পুকুরে ফেলে দেবেন।