কলকাতা: সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukhopadhyay) ভারতরত্ন পাওয়ার যোগ্য ছিলেন বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার কোচবিহারে এক সভায় প্রয়াত শিল্পীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘সন্ধ্যা দির চলে যাওয়াটা কিছুতেই মানতে পারছি না। আমার অত্যন্ত পছন্দের মানুষ ছিলেন সন্ধ্যাদি। ভারতরত্ন পাওয়ার যোগ্য ছিলেন তিনি।’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের (Sandhya Mukhopadhyay Passes Away) সাম্প্রতিক পদ্মশ্রী বিতর্ক নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘জীবনের শেষ পর্ব এসে খুব বড় ধাক্কা খেয়েছেন তিনি। তাঁর মতো বড় মাপের শিল্পীকে শেষ বয়সে পদ্মশ্রী দেওয়ার প্রস্তাবে খুবই দুঃখ পেয়েছেন সন্ধ্যাদি।’
জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ফোনে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই খবর শুনে তখনই তা প্রত্যাখ্যান করেন গীতশ্রী। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার ঐতিহ্যকে অপমান করছে। সারা জীবন তিনি অসংখ্য মানুষের প্রাণ ভরা ভালোবাসা পেয়েছেন। এটাই অনেক। পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যান করে শিল্পী সঠিক কাজ করেছেন।’
ওই বিতর্ক চলাকালীনই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁকে প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সটান পৌঁছে যান হাসপাতালে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি শিল্পীকে ভালো চিকিৎসার জন্য বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন। সেখানেই এতদিন চিকিৎসা চলছিল তাঁর। বয়সজনিত অসুস্থতা ছাড়াও একাধিক উপসর্গ ছিল তাঁর। মঙ্গলবার সকাল থেকে অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। সন্ধ্যে সাড়ে সাতটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গীতশ্রী।
আরও পড়ুন: Sandhya Mukhopadhyay: রবীন্দ্রসদনে শায়িত গীতশ্রী, সন্ধ্যায় কেওড়াতলায় শেষকৃত্য
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে রয়েছেন। কর্মসুচি কাটছাঁট করে বুধবার বিকেলেই তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন। তাঁর উপস্থিতিতে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শিল্পীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। এদিন কোচবিহারের এক অনুষ্ঠানে শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মমতা বলেন, জীবনে এত মানুষের ভালোবাসা সন্ধ্যাদি পেয়েছেন যে তাঁর কাছে এই পদ্মশ্রী বা হতশ্রীর কোনও মূল্য নেই। আমি হতশ্রী কথাটা বিপরিতার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করছি। তিনি অনেক আগেই ভারতরত্ন পেতে পারতেন। তা না করে শেষ বয়সে পদ্মশ্রীর প্রস্তাব দিয়ে তাঁকে চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে।
গীতশ্রীর দেহ এখন শায়িত রবীন্দ্র সদন চত্বরে। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সেখানে মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেব। তারপরই শেষকৃত্যের জন্য মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ক্যাওড়াতলা মহাশ্মশানে। সেখানে তাঁকে গান স্যালুট দেওয়া হবে। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গীতশ্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।