চণ্ডীগড়: পঞ্জাবের মোট ভোটব্যাংকের (Punjab Polls 2022) প্রায় অর্ধেকই মহিলা। তা সত্ত্বেও সেখানকার রাজ্য রাজনীতিতে মহিলারা (Women neglected) কিন্তু সে ভাবে গুরুত্ব পাচ্ছেন না। বা, তাঁরা নিজেরাই সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকছেন।
পঞ্জাব বিধানসভার (Punjab Election) ১১৭ আসনে ১,৩০৪ জনের মনোনয়ন জমা পড়েছে। তা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় মহিলা প্রার্থী (Women Voter) মাত্র ৯৩ জন। শতকরা হিসেবে, মোট মনোনয়নের ৭ শতাংশেরও কম! এই ৯৩ জন মহিলার মধ্যে কংগ্রেস-বিজেপি-র মতো মেইনস্ট্রিম পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন ৩৭ জন। ছোট দলগুলি থেকে প্রার্থী করা হয়েছে ২৮ জনকে। নির্দলের হয়ে ভোট ময়দানে নেমেছেন ২৯ জন মহিলা।
মনোনয়নের তালিকা থেকেই স্পষ্ট, মহিলাদের প্রার্থী করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে একটা অনীহা রয়েছে। কিন্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে ভোট বৈতরণি পার করতে হলে, মহিলাদের মুখাপেক্ষী না হয়ে উপায় নেই। কারণ, পঞ্জাবের মোট ভোটব্যাংকের বড় ভাগীদার কিন্তু মহিলারাই। ২.১৪ কোটি ভোটারের মধ্যে ১.০২ কোটিই মহিলা ভোটার। তাই মহিলা ভোট নিজেদের পালে টানতে কুসুর করছে না কোনও রাজনৈতিক দলই। নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশের সময় মহিলা ভোটব্যাংক (Vote bank) তাদের মাথায় রাখতে হয়েছে।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আমআদমি পার্টির কথাই ধরা যাক। তাদের প্রতিশ্রুতি, পঞ্জাবে ক্ষমতায় এলে, ১৮-ঊর্ধ্ব মহিলাদের জন্য মাসে ১০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। একই রাস্তায় হেঁটেছে শিরোমণি আকালি দল ও কংগ্রেসও। মহিলাদের মাসিক ২০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা তারা ঘোষণা করেছে।
কংগ্রেসের প্রতীকে ১১ মহিলা প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে সাত জনই কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতিতে রয়েছেন। আপের প্রতীকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে ২ জন বর্তমান বিধায়ক। বাকিরা প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ।
পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ রোঙ্কি রামের অভিমত, পঞ্জাবে মহিলারা যে কোনও কারণেই হোক সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করছেন না। যে কারণে রাজনৈতিক দলগুলিতে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব কম। প্রার্থী করার মতো মহিলা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রোঙ্কির অভিমত, রাজনীতিতে মহিলাদের সক্রিয় করতে হলে, শুধু মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা বললে হবে না। আগে পার্টির গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনতে হবে।
আপ (AAP) প্রার্থী ইন্দ্রজিত্ কৌর মান অবশ্য মনে করছেন পঞ্জাবের রাজনীতিতে মহিলাদের ভবিষ্যত্ উজ্জ্বল। আগে মহিলাদের রাজনীতিতে নিরুত্সাহিত করা হতো। কিন্তু, এখন সেই ছবিটা বদলেছে।
তাঁর দাবি, মহিলারা রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলে, অদূর ভবিষ্যতে মহিলা রাজনীতিতে আরও বেশি করে যোগ দেবেন। মহিলা প্রার্থীদের জন্য আলাদা করে সংরক্ষণ প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি মনে করেন না। ইন্দ্রজিত্ কৌরের কথায়, ‘আমরা ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ চাই না। আমরা লড়াই করে ৫০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো জায়গায় পৌঁছনোই লক্ষ্য।’
আরও পড়ুন: Mamata attacks Yogi: যোগী না, আসলে উনি ভোগী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ মমতার
কংগ্রেসের (Congress) মহিলা প্রার্থী করণ কৌর ব্রারও কিন্তু মনে করছেন রাজনীতিতে মহিলাদের ভবিষ্যত্ উজ্জ্বল। করণ চান, রাজনৈতিক দলগুলো মহিলাদের আরও বেশি করে প্রার্থী করতে উত্সাহিত করুক। কারণ, মহিলারা বিধানসভা বা লোকসভায় যেতে না পারলে, তাদের সমস্যাগুলো উপেক্ষিতই থেকে যাবে।