বিশ্ব জুড়ে মারাত্মক কভিড মহামারী
যখন এক কঠিন প্রতিকূলতা, তখন তা পেরিয়ে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ম্যাচটি হতে চলেছে। খেতাব জয়ের লড়াইয়ে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দুই দল ম্যানচেস্টার সিটি ও চেলসি। প্রথমবারের মতো প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে খেলতে নামছে ম্যান সিটি। আর ২০১১-১২ মরশুমের চ্যাম্পিয়ন চেলসির এটি এই ইউরোপ সেরা টূর্ণামেন্টের তৃতীয় ফাইনাল।
কতো বাঁধা টপকাতে হল!
টুর্নামেন্ট শুরুতে ঠিক ছিল তুরস্কের ইস্তানবুলে হবে এই ফাইনাল ম্যাচটি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রবল দাপাদাপিতে পরিস্থিতিতে বদলে যেতে থাকে ফাইনালের ভ্যেনু।
তুরস্ক থেকে ইংল্যান্ড হয়ে আজ শনিবার এবারের খেতাব লড়াই ম্যাচটি হবে পর্তুগালের পোর্তোয়। ভারতীয় সময় রাত সাড়ে বারোটায় শুরু হবে ম্যাচটি। দেখা যাবে সোনি টিভি চ্যানেলে।
মাঠের চুড়ান্ত লড়াইয়ের আগে নানা পরিসংখ্যানের খবর সাজিয়ে রেখেছে উয়েফা ডটকম। ম্যাচটি দেখতে বসার আগে , কলকাতা টিভি ওয়েব পাঠকরা জেনে নিন কী কী হতে চলেছে এই ফাইনালে।
** কোচ কথা : বার্সেলোনার হয়ে ৩ বার এই ট্রফি জিতেছেন বর্তমানে সিটির কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা। একবার ফুটবলার হিসেবে, আর কোচ হয়ে ২ বার। তবে ২০১১ সালের পর থেকে এই খেতাব জয়ের স্বাদ পাননি এই স্প্যানিয়ার্ড।
** চেলসি কোচ টমাস টুখেলের এটি টানা দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ওঠা । গতবারের ট্রফি জয়ের লড়াইয়ে তাঁর সেই সময়ের দল পিএসজি হেরে গিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ।
** চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ডের দুটি দল। প্রথমবার ২০০৮ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হেরেছিল চেলসি। ২০১৯ সালে টটেনহ্যাম হটস্পারকে হারিয়েছিল লিভারপুল।
** এ নিয়ে ১৪ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বা ইউরোপিয়ান কাপ জিততে যাচ্ছে ইংল্যান্ডের কোনও ক্লাব। সবচেয়ে বেশি ১৮ বার এই ট্রফি গেছে স্পেনে।
** ম্যান সিটি জিতলে ইংল্যান্ডের ষষ্ঠ দল হিসেবে প্রতিযোগিতাটির খেতাব জিতবে তারা । আর এখনও পর্যন্ত কোনো দেশ থেকে তিনটি দলের বেশি এই টুর্নামেন্ট জেতেনি।
** এবারের টুর্নামেন্টে ৬ গোল করেছেন চেলসি ফরোয়ার্ড অলিভিয়ে জিরুদ। এই টুর্নামেন্টে একটি মরশুমে এর চেয়ে বেশি গোল করেছেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের আর্লিং হলান্ড (১০) ও পিএসজির কিলিয়ান এমবাপে (৮)। চেলসির হয়ে ৪টি গোল করেছেন টিমো ভেরনার। ম্যান সিটির দুই সর্বোচ্চ গোলদাতা ফেররান তরেস ও রিয়াদ মাহরেজ। দুজনের গোলসংখ্যা চারটি করে।
** ফাইনালের ওঠার পথে ২৫টি গোল করেছে সিটি, চেলসির গোল– ২২টি। দুই দলই গোল খেয়েছে মাত্র ৪ টি করে।
** ফাইনালে ওঠার পথে কোনো ম্যাচ হারেনি সিটি। চেলসি হেরেছে এক ম্যাচ। তা পোর্তোর বিপক্ষে।
** পেনাল্টি থেকে আসরে পাঁচ গোল করেছে চেলসি, এর তিনটিই করেছেন ভেরনার।
** সিটির অন্যতম সেরা গোলদাতা toআগুয়েরোর দলটির হয়ে এটি হতে যাচ্ছে ৩৯০তম ও শেষ ম্যাচ। দলটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৬০ গোল করা আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ড এবারের গ্রীষ্মেই সিটি ছাড়বেন।
** সিটি ও দলটির গোলরক্ষক এদেরসন এবারের প্রিমিয়ার লিগ আসরে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জাল অক্ষত রেখেছেন। ইউরোপিয়ান শীর্ষ পাঁচ লিগে ফ্রান্সের লিল ও তাদের গোলরক্ষক মাইক মিয়াঁর পর যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
** এর আগে সাতবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল হয়েছে একই দেশের দুই দলের মধ্যে; সবগুলোই ২০০০ সালের পর। স্পেনের দলগুলোর মধ্যে হওয়া ম্যাচগুলোর সবকটি জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ (২০০০ সালে ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে এবং ২০১৪ ও ২০১৬ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে), ২০০৩ সালে ইউভেন্তুসকে হারিয়েছিল এসি মিলান, ২০০৮ সালে চেলসিকে হারিয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আর ২০১৯ সালে টটেনহ্যামকে হারিয়েছিল লিভারপুল এবং ২০১৩ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারায় বায়ার্ন মিউনিখ।
** নবম ইংলিশ দল হিসেবে ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে খেলতে যাচ্ছে সিটি, যে কোনো দেশের হিসেবে যা বেশি; ইতালি ও জার্মানি থেকে খেলেছে ছয়টি করে দল।
** ফাইনালটি হবে পোর্তোর এস্তাদিও দো দ্রাগাওয়ে, গ্রুপ পর্বে স্থানীয় দলটির বিপক্ষে এই মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছিল সিটি। আসরে কেবল এই এক ম্যাচেই জয় পায়নি তারা। সব মিলিয়ে এই মাঠে চেলসি চার ম্যাচ খেলে জিতেছে কেবল একটি।
** সিটি জিতলে ২৩তম দল হিসেবে ইউরোপিয়ান কাপ জয়ী দল হবে তারা। ২০১২ সালে চেলসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর যা হবে প্রথম।
** মৌসুমে দুই দলের মধ্যকার চতুর্থ ম্যাচ এটি। আগের তিন দেখায় দুইবার জিতেছে চেলসি, একবার সিটি।
** সব মিলিয়ে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে ৬৮ জয় চেলসির, সিটি জিতেছে ৫৮ বার। ৪০ বার দুই দলের লড়াই হয়েছে ড্র। সবশেষ চার দেখায় তিনবার জিতেছে চেলসি।