কলকাতা: রবিবার ধর্মতলার (Dharmatala) ডোরিনা (Dorina) ক্রসিংয়ে বরযাত্রীদের নিয়ে পালটি খাওয়া মিনিবাসটির কোনওরকম ফিটনেস সার্টিফিকেট (FC) ছিল না। হাওড়া আরটিও বাঁকড়া-পার্ক সার্কাস রুটের এই মিনিবাসটিকে অনেক আগেই কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। দুর্ঘটনার পর, প্রাথমিক এই রিপোর্ট সামনে এলে প্রশ্নের মুখে কলকাতা ট্রাফিক পুলিস (Kolkata Traffic Police)। আরটিও-র কালো তালিকাভুক্ত একটি বাস পুলিসি নজর এড়িয়ে কী করে মহানগরীর রাস্তায় দিনের পর দিন চলতে পারে? কলকাতা ট্রাফিক পুলিসের কর্তাদের কাছ থেকে এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর রবিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনার কারণ জানতে বাসটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হবে।
এ দিন দুর্ঘটনার পর ডোরিনা ক্রসিংয়ে মিনিবাসটির কাগজপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায়, বাসটির বয়স ১২ বছর ২ মাস ১৪ দিন। বাসটির মালিক মারা যাওয়ার পর, আইনি ভাবে অন্য কারও নামে বাসের মালিকানা পরিবর্তন করা হয়নি। যে কারণে রিজিওন্যাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বাসটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে দেয়। স্বাভাবিক কারণেই এর পর বাসটির ফিটনেস পরীক্ষা করানো যায়নি। বিমার নবীকরণও হয়নি। এই অবস্থাতেই বাসটি বাঁকড়া-পার্ক সার্কাস রুটে কী করে এতদিন চলছিল, তা নিয়ে নানমহল থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যেখানে পান থেকে চুন খসলে, জরিমানা করা হয়, সেখানে কেন বাসটির কাগজপত্র ট্রাফিক পুলিসের নজরে এল না?
রবিবার বরযাত্রী নিয়ে পার্ক সার্কস থেকে হাওড়ায় যাওয়ার সময় ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাসটি। রাস্তার ধারের একটি ত্রিফলায় ধাক্কা মেরে উলটে যায়। শিশু-সহ বরযাত্রীদের ২৩ জন আহত হন। আহতদের এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। অনেকেরই মাথায় চোট রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যে কারণে আহতদের সিটি স্ক্যান করানো হচ্ছে। ডিসি ট্রাফিক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় আহত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
অনেকেই মনে করছেন, রবিবার আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। সৌভাগ্যবশত তা হয়নি। মিনিবাসটিকে উদ্ধারের সময় দেখা যায়, বাসটির একটি পাত্তি ভাঙা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, চাকা ফেটেই মিনিবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। চালক বেসামাল হলে, বাসটি পালটি খায়। যদিও দুর্ঘটনাগ্রস্ত মিনিবাসটির যাত্রীরা অভিযোগ করেন, চালক অকারণে রেষারেষি করছিলেন। ফলে, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ নিয়ে ধন্দ রয়েছে। যে কারণে বাসটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করাবে পুলিস।