নয়াদিল্লি: অমর জওয়ান জ্যোতির অর্নিবাণ শিখাকে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের শিখার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি৷ প্রতিবাদে ছত্তীশগড়ে অমর জওয়ান জ্যোতির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন রাহুল গান্ধী৷ তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে খুশি সেনাবাহিনীর অনেকেই৷ রবিবার মাসিক রেডিয়ো অনুষ্ঠান মন কি বাতে এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ তিনি বলেন, ‘অনেক জওয়ান আমাকে চিঠি লিখে অমর জওয়ান জ্যোতির প্রজ্জলিত শিখাকে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন৷’
আজ গোটা দেশ শ্রদ্ধার সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর ৭৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে৷ তাই এ বছরের প্রথম মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের অনেকটা অংশজুড়ে ছিল মহাত্মার মাহাত্ম্য৷ ৩০ জানুয়ারি শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয় দেশে৷ শহীদদের অবদানের কথা স্মরণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে জাতীয় যুদ্ধ স্মারক এবং অমর জওয়ান জ্যোতির প্রসঙ্গ৷ মোদি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দেশের জন্য আত্মবলিদান দেওয়া সব জওয়ানদের নাম লেখা আছে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে৷ বেশ কয়েকজন প্রাক্তন জওয়ান আমাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, শহীদদের স্মরণে ওখানে প্রজ্জলিত অমর জওয়ান জ্যোতির শিখা আসলে শহীদদের অমরত্বের চিহ্নকে বহন করছে৷’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অমর জওয়ান জ্যোতির মতো দেশের জন্য প্রাণত্যাগ করা শহীদরা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়৷ তাঁদের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে৷ অমর জওয়ান জ্যোতি এবং জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের শিখাকে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ ওই আবেগঘন মুহূর্তে যুদ্ধে স্বজনহারা অনেক পরিবার তাঁদের কথা ভেবে চোখের জল ফেলে৷’
এর পাশাপাশি প্রকৃতি ও জীবজন্তুর সঙ্গে ভারতীয়দের ভালোবাসার কথাও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে৷ বিশেষ গুরুত্ব পায় কলারওয়ালি বাঘিনী এবং রাষ্ট্রপতির বডিগার্ড বিরাটের কীর্তি৷ কিছুদিন আগে মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চে মারা যায় ‘সুপারমম’ বাঘিনী কলারওয়ালি৷ হিন্দু মতে সৎকার করা হয় তার৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পেঞ্চ ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের এক বাঘিনীর মৃত্যুর পর ভারতীয় সংস্কৃতির এক ঝলক দেখতে পায় গোটা বিশ্ব৷ লোকে তাকে কলারওয়ালি বাঘিনী বলে ডাকত৷ যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে কলারওয়ালির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়৷ প্রকৃতি এবং জীবজন্তুর প্রতি ভারতীয়দের ভালোবাসা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে৷’ অন্যদিকে ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দায়িত্ব থেকে অবসর নেয় বিরাট নামে একটি ঘোড়া৷ ১৩ বছর বিরাট রাষ্ট্রপতির বডিগার্ড হিসাবে দায়িত্ব সামলেছে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক জীবের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তা ভালোবাসার চেহারা নেয় ৷ এমনই ছবি দেখা যায় প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন৷ রাষ্ট্রপতির বডিগার্ড হিসেবে অবসর নেয় বিরাট৷ এই বছর সেনাদিবসে তাকে সিওএস দেওয়া হয়৷ তার অসামান্য অবদানের জন্য অবসরের পর বিরাটকে যথাযোগ্য মর্যাদায় ফেয়ারওয়াল দেওয়া হয়৷’