বর্ষাকালের মতো শীতকালেও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় কোনও বিচ্যুতি ঘটেনি। এই একবার তরতরিয়ে নেমে যাচ্ছে তাপমাত্রা আবার কিছুদিনের মধ্যেই এক ঝটকায় বেড়ে যাচ্ছে তাপমাত্রা। এই উঠা নামার মধ্যেই আবার মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি। এতে যেমন শরীর খারাপ হচ্ছে অহরহ তেমনি প্রভাব পড়ছে ত্বক ও চুলের ওপর। তাই ত্বক ভাল রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত ফেসিয়ালের। এদিকে ওমিক্রনের দৌরাত্ম্যে এখনও পার্লার বা সালোঁতে যেতে ভয় পান অনেকেই। অন্যদিকে আবার পার্লার বা সালোঁতে গিয়ে ফেসিয়াল করা মানেই পকেটে টান? এই অবস্থায় বাড়িতেই প্রাকৃতিক উপকরণে দিয়ে ত্বকের লাবণ্য ফিরিয়ে আনুন এইভাবে-
মনোরম পরিবেশ
বাড়িতে ত্বকের পরিচর্যার ভাল ফল পেতে প্রথম কাজ যেটা করা উচিত সেটা হল ফেসিয়াল শুরুর আগে ঘরে মনোরম পরিবেশ তৈরি করা। মোবাইল ফোন বন্ধ রাখুন। নিত্য জীবনযাপনের চিন্তা ভাবনা থেকে যতটা সম্ভব নিজেকে মুক্ত রাখুন। প্রয়োজন স্নান করে নিতে পারেন। শরীর ও মন দু’টোই চাঙ্গা হয়ে যাবে। উঁচু করে চুল বেঁধে নিন। গয়নাগাটি কিছু পরে থাকলে তা খুলে রাখুন। জোরালো আলোর বদলে বাড়িতে হালকা আলো জ্বালান। প্রয়োজনে অ্যারোমেটিক ক্যান্ডেল ব্যবহার করতে পারেন।
ত্বক পরিষ্কার করুন এইভাবে
ফেসিয়াল শুরু আগে মুখ ভাল করে পরিষ্কার করে নেওয়া দরকার। এর জন্য ডিপ ক্লেনজিং ফেস ওয়াশ বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। হাতে ফেস ওয়াশ নিয়ে ভাল করে পুরো মুখ, গলায়, কানের পিছনে আলতো হাতে মলিশ করুন। এর ফলে ঘাঁটে বা কোনে ত্বকে ময়লা জমে থাকলে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এ0ক্সফোলিয়েট করুন এইভাবে
মুখ পরিষ্কারের পরের ধাপ এক্সফোলিয়েশন। অর্থাৎ ভাল করে ঘষে ত্বকের মৃত কোষ সরিয়ে ফেলা। বাজার থেকে কেনা এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করতে না চাইলে বাড়িয়ে তৈরি করে নিতে পারেন। চিনি, দুধ ও সামান্য একটু দুধ মিশিয়ে এই মিশ্রণ মুখে ও অন্যান্য জায়গায় লাগিয়ে নিন। এবার আলতো হাতে মুখ ঘষে নিন এতে ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার হয়ে যাবে। মিনিট তিনেক পর ইষদুষ্ণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নরম তোয়াল দিয়ে ভাল করে মুছে নিন।
এক্সফোলিয়েশনের পর ভাপ নিন
এক্সফোলিয়েশনের পর মুখে ভাপ নিন। ভাপে নেওয়ার ফলে ত্বকের রোমকূপের মুখ খুলে যাবে। এক বড় বাটি গরম জল নিন। এবার একটা নরম তোয়ালে দিয়ে মুখ ঢেকে নিন এবং পুরো ভাপটা মুখে টেনে নিন। চাইলে এই জলে এসেনশিয়াল অয়েলও ঢালতে পারেন।
এবার মুখে মাস্ক লাগানোর পালা
ফেসিয়াল মাস্ক ছাড়া ফেসিয়াল অসম্পূর্ণ। আপনার ইচ্ছেমতো এবং সুবিধেমতো শিট মাস্ক কিংবা বাড়িতেই প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে তৈরি করে নিন ফেসিয়াল মাস্ক। তবে ফেসিয়াল মাস্কের আগে আপনাকে আপনার ত্বকের ধরণ বুঝেতে হবে। মধু সব ধরনেক ত্বকের পরিচর্যায় উপকারী তাই মধু ব্যবহার করতে পারেন। আবার যদি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মাড মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। যাই ব্যবহার করুন না কেন মনে রাখতে হবে এমন উপকরণ বাছুন যেগুলো একই সময় ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে পাশাপাশি এক্সফোলিয়য়েট ও ডিটক্সিফাই করে। মুখে মাস্ক লাগিয়ে এবার দুচোখে দুটো শসার টুকরো কেটে চোখে রাখুন। প্রায় পনেরো থেকে কুড়ি মিনিট রেখে মাস্ক তুলে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
ময়শ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না
সব শেষে ময়শ্চারাইজার লাগানো ‘মাস্ট’। এক্ষেত্রে, বাজার থেকে কেনা আপনার নিত্য ব্যবহারের ময়শ্চারাইজার ক্রিম বা লোশন মাখতে পারেন। যদি প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করতে চান তা হলে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার লাগাতে পারেন। পরে ক্রিম জাতীয় ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
ফেসিয়াল করার পর অন্তত দু’ঘন্টা বাইরে না বেরোনোই ভাল।
(ছবি সৌজন্য: Unsplash)