ইতিমধ্যেই আমরা জেনে ফেলেছি যে ডিপসিক, একটি চীনা আর্টিফিসিয়াল ইন্টলিজেন্স সংস্থা, যারা ডিপসিক আর ওয়ান নিয়ে হাজির হতেই আমেরিকার এনভিডিয়ার ১৭ শতাংশ শেয়ার ধসে পড়েছিল। সেখানেই কি তারা থেমে আছে? তারাই তাদের আপডেটেড এআই মডেল R2-এর মুক্তির গতি বাড়িয়েছে, যেহেতু তাদের আগের R1 মডেল বিশ্ব বাজারে বড় ধরনের তহলকা তৈরি করেছিল, বাজারের সেই আবেগ জিইয়ে রাখতেই তারা R2 মডেলটা যা সম্ভবত মে মাসের শুরুর দিকে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, সেটা যত দ্রুত সম্ভব বাজারে ছেড়ে দেওয়ার প্ল্যান করেছে। নতুন মডেলটা কেবল উন্নত কোডিং নয়, এর বৈশিষ্ট হল এটা বহু ভাষায় যুক্তিসঙ্গতভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা নিয়ে হাজির হচ্ছে। মানে আপনি ইংরিজি জানেন না? আপনি বাংলা বা তামিল বা হিন্দিতেই বলুন গোছের ব্যাপার। মানে বেল্ট বেঁধে নিন, মৌসম বিগড়নেবালা হ্যায়, আবার ধস নামবে বিশ্ব বাজারে, হ্যাঁ চীন এভাবেই এগোচ্ছে। ২০২৩-এ জি টোয়েন্টি দেশগুলোর সম্মেলনের কথা মনে আছে? জি ২০ মানে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, সাউথ আফ্রিকা, সাউথ কোরিয়া, তুর্কি, ইউনাইটেড কিংডম এবং আমেরিকা আর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এই ২০টা দেশ, অঞ্চলের এক সংগঠন। ২১ সাল জুড়ে এই জোটের চেয়ারপার্সন ছিলেন ইতালির রাষ্ট্রপ্রধান, ২২ সাল জুড়ে ইন্দোনেশিয়া, ২৩ সালে ভারতের নরেন্দ্র মোদি, ২৩ সালের ৯-১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে সম্মেলন বসে, এরপরে সম্মেলনের দায়িত্ব পায় ব্রাজিল।
এরকম প্রত্যেক বছরে এই দেশগুলোর এক দেশে সম্মেলন হয়। যে দেশ জি টোয়েন্টির চেয়ারপার্সন হয় সেই দেশ সম্মেলনের দায়িত্ব পায় কিন্তু ২০২৩-এ দেশ জুড়ে প্রচার নরেন্দ্র মোদিকে রাশিয়া, জার্মানি, চীন, আমেরিকা, ইউনাইটেড কিংডমও নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছে। চারিদিকে, হাটেবাজারে এই প্রচার চলছে, ন্যাশনাল টিভিতে বিশ্বগুরু, টিভির পর্দায় মোদিজি, সারা পৃথিবী তাকিয়ে দেখছে বিশ্বে ভারতের নব উত্থান, এর আগে নাকি পৃথিবী ভারতকে চিনতও না, স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি এই কথা জানিয়ে দিলেন, আর হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটিতে তো অন্য কোনও আলোচনার কোনও স্পেস ছিল না। এবং জানিয়ে রাখি এর পিছনেও মোদিজির একটা ক্যালকুলেশন কাজ করেছিল, ২০২১-এ এই সম্মেলনের ভার ছিল ইতালি নয় ভারতের উপরে। তো নরেন্দ্র মোদি জানান যে ২০২২ আমাদের স্বাধীনতার ৭৫ বছর, কাজেই আমাদের ২০২২ দেওয়া হোক। ইন ফ্যাক্ট ৭৫ বছরের অনুষ্ঠানের শেষে ডিসেম্বরে তিনি জি টোয়েন্টির হোস্ট হলেন, যার পরিসমাপ্তি হল সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ, এবং মাথায় রাখুন ২০২৪ হল ইলেকশন ইয়ার। সেপ্টেম্বরে বাইডেন থেকে সুনক হেঁ হেঁ, জাপটে ধরছেন যাকে তাকে, ২০২৪-এ বিশ্বগুরু নির্বাচনে নামবেন এটা জেনেই। তো সেই বিশ্বগুরুর দেশের মানুষজনদের অনায়াসে হাতে হাতকড়া পরিয়ে, মাথার পাগড়ি খুলিয়ে, টয়লেট পর্যন্ত ব্যবহার না করতে দিয়ে, পানীয় জল না দিয়ে যুদ্ধবিমানে করে ফেরত পাঠানো হয়েছে ভারতীয় নাগরিকদের যাঁরা নাকি অবৈধভাবে আমেরিকাতে ঢুকেছিল। ওদিকে একরত্তি দেশ কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রথমে প্লেন ফেরত পাঠালেন, তারপর নিজেদের বিমান পাঠিয়ে আনালেন তাঁর দেশবাসীদের। বিশ্বগুরু তখন ইলন মাস্কের ছেলেকে চই চই চই চই বলে আদর করছেন।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | বিজেপি না তৃণমূল, কে বড় শত্রু?
বাইডেনকে সাথ মেরা পুরানা দোস্তি হ্যায়, জি টোয়েন্টির সময় বলেছিলেন। সম্ভবত ডোনাল্ড ট্রাম্প সাহেব সেটা খেয়ালও করেছিলেন, তাই পাশে দাঁড়িয়েই ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানকে জানিয়ে দিলেন আপনাদের দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করা অসম্ভব। সে যাই হোক আমরা বিশ্বগুরুর কথা বলছিলাম, আসুন আজ অন্য আর এক দিক থেকে এই বিশ্বগুরুমির ঢপবাজিটা আলোচনা করা যাক। পাশেই এক দেশ চীন, জনসংখ্যা আমাদের চেয়ে এখন সামান্য কম, এক দীর্ঘ সামন্ততান্ত্রিক শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে ১৯৪৯, মানে আমাদের স্বাধীনতার দু’ বছর পরে। তারপরে দেশে রাজনৈতিক উথাল পাথাল সময়ও গেছে কিন্তু আজ সেই চীন ভারতের বাজারের খেলনা থেকে বাল্ব, ইলেক্ট্রনিকস গুডসের ৭০ শতাংশ দখলে রেখেছে, সারা পৃথিবীতে এক বিরাট উত্থান চমকে দিচ্ছে প্রত্যেককে। এই সবে জানা গিয়েছে যে তাদের তৈরি এআই টুলস আর সিস্টেম আমেরিকা বা ইউরোপকে বলে বলে ডজনখানেক গোল দেবে, তার মধ্যেই খবর আসছে এটা নাকি ট্রেলার, আরও নাকি আসছে। এরমধ্যে গতকালের খবর চীন এই পর্যন্ত যত লো হাইট স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে তা আমেরিকার সংখ্যাকেও ছাপিয়ে গেছে, তারা নাকি এর ফলে বিশ্ব যোগাযোগ ব্যবস্থার বেশিরভাগটাই দখলে নেবে। ইলন মাস্কের স্টার লিঙ্কের কপালে হাত। কিন্তু চীনের রাষ্ট্রপতিকে দেখছেন নাকি ওই দেশে দেশে ঘুরে নিজেকে বিশ্বগুরু বানানোর কোনও পরিকল্পনা? কোথাও কোনও আলোচনাতে নিজেকে নন বায়োলজিক্যাল বলে ঘোষণা করা, কোথাও ময়ূর খাওয়ানো, শ্রমিকদের পা ধুইয়ে দেওয়া, গঙ্গাতে ডুব দেওয়ার মতো নৌটঙ্কিবাজি করতে? দেখবেন না, কারণ তাঁরা চুপ করে কাজ করছেন, দেশের কাজ, দেশের স্বার্থ দেখছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করার আগে নিজের দেশের প্রডাক্টের শুল্ক কমিয়ে জি হুজুরি করতে হচ্ছে না, হচ্ছে না বলেই আমাদের দু’ বছর পরে সেই অর্থে এক বিপ্লব শেষ করার পরে আপাতত আমাদের দেশের থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে গেছে তারা। আসুন আজ দেখা যাক কোথায় কোনদিকে চীন আমাদের টপকে অনেক দূর চলে গেছে। প্রথমে আসুন দু’ দেশের অর্থনৈতিক সাইজ, মানে পরিমাপ আর বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলা যাক। ২০২৩ এর আইএমএফ রিপোর্ট বলছে, চীনের মোট গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট মানে মোট সম্পদ ১৮.১ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি আর ভারতের মোট সম্পদ ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলার, পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। মাথাপিছু সম্পদ চীনের ১২৮৫০ ডলার, ভারতের ২৬১০ ডলার। চীনের বাণিজের পরিমাপ ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের হিসেব অনুযায়ী চীনের ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসা, যা দুনিয়ার ১৫ শতাংশ আর ভারতের ৪৫৩ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা, শতাংশের হিসেবে আসে না।
এবারে বিষয়টাকে পরিকাঠামোর উন্নতির দিক থেকে দেখা যাক। চীনের হাই স্পিড রেলের দৈর্ঘ্য ৪০ হাজার কিলোমিটারের কিছু বেশি, ভারতের প্রথম হাই স্পিড লাইন, মুম্বই-আহমেদাবাদ এখনও তৈরি হচ্ছে। চীনের এক্সপ্রেসওয়ে ১ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার, ভারতবর্ষের ২১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার। বিশ্বের ১০টা বন্দরের ৭টা চীনে, সাংহাই, শেনজেন ইত্যাদি আর ভারতের সবচেয়ে বড় জাহাজ বন্দর মুন্দ্রা পৃথিবীতে ৪৪ নম্বর র্যাঙ্ক-এ আছে। এবারে আসুন ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড এক্সপোর্ট-এর কথায় আসা যাক। চীন বিশ্বের ২৮-৩০ শতাংশ ম্যানুফ্যাকচারিং-এর কাজ করে, ভারত ৩.৩ শতাংশ। চীন রফতানি করে হাইটেক গুডস, ইলেকট্রনিক্স, মেশিনারি ইত্যাদি, তারা ওষুধের কাঁচামাল রফতানি করে। ভারত টেক্সটাইল, বিভিন্ন পরিষেবা আর ওষুধ রফতানি করে, যার আবার কাঁচামাল আসে চীন থেকে। এবারে বিশ্বগুরুর প্রিয় বিষয় প্রযুক্তি আর গবেষণা, চীন তার জিডিপির ২.৪ শতাংশ ৫২৬ বিলিয়ন ব্যয় করে এই টেকনোলজি আর গবেষণার পিছনে, ভারত ব্যয় করে ৭.৪৮ বিলিয়ন, আবারও সেটা জিডিপির তুলনায় শতাংশের হিসেবে কিছুই নয়। পেটেন্ট, মানে গবেষণার পরে যে নতুন আবিষ্কার হয়, তার পেটেন্ট, তার অধিকারের কথায়। চীন ২০২১-এ ১.৬ মিলিয়ন ১৬০ লক্ষ পেটেন্ট-এর অ্যাপ্লিকেশন করেছে, ভারত ৬১ হাজার ৫০০। ফাইভজি বেস স্টেশন চীনে ২০২৩-এ ২.৯ মিলিয়ন আর ভারতে ৫জি এখনও মূলত শহরে শুরু হয়েছে, ২০২২ এ কাজ শুরু হয়েছে। ঘর মে ঘুস কর মারেঙ্গে, তো মারার জন্য আমরা কতটা তৈরি, মিলিটারি ক্যাপাবিলিটিতে কোথায় আমরা? কোথায় চীন? প্রতিরক্ষা বাজেট বরাদ্দ চীনে ২৩০ বিলিয়ন ডলার, ভারতে ৭২.৬ বিলিয়ন ডলার, ২০২৩-এর হিসেব বলছি। চীন নিজের স্টিলথ ফাইটার জে ২০, এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার হাইপারসনিক মিসাইল তৈরি করছে, আমরা এখনও সেগুলো কিনছি। রিনিউয়েবল এনার্জি, সোলার বা উইন্ড এনার্জি এই দু’ দেশেই তার বিরাট সম্ভাবনা আছে। চীনে ৪৩০ গিগাওয়াট সোলার আর ৩৮০ গিগাওয়াট উইন্ড এনার্জি তৈরি হয়, সেই ২০২৩ সালের হিসেব বলছে আমাদের দেশে ৭৩ গিগা ওয়াট সোলার আর ৪৩ গিগাওয়াট উইন্ড এনার্জি তৈরি হয়। চীন পৃথিবীর ৬০ শতাংশ ইলেক্ট্রিক ভেহিকল তৈরি করছে, আমরা বিশ্ব উৎপাদনের শতাংশের হিসেবেই আসতে পারিনি, শুরু হয়েছে, তারমধ্যেই টেসলাকে ধরে ঝুলোঝুলি চলছে।
মহাকাশ গবেষণাতে আমরা কোথায়? চীন ২০১৯-এ চাঁদে পা রেখেছে, ২০২১-এ মঙ্গলে, ভারতের চন্দ্রযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নেমেছে ২০২৩-এ, মঙ্গলে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। চীনের মহাকাশ স্টেশন ২০২২ থেকে কাজ করছে, আমাদের কাজ চলছে, সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৫-এ তা হবে। শিক্ষা সাক্ষরতা, চীনে ৯৭ শতাংশ সাক্ষরতা, ভারতে ৭৪ শতাংশ, ইউনেস্কোর হিসেব ২০২৩-এর। পৃথিবীর প্রথম ১০০টা ইউনিভার্সিটির মধ্যে চীনের ৬টা ইউনিভার্সিটি রয়েছে, আমাদের একটাও নেই। আসুন স্বাস্থ্যের দিকটাও দেখে নেওয়া যাক। আমাদের গড় আয়ু ৭০, চীনের ৭৭। আমাদের দেশে মাথাপিছু স্বাস্থ্য খাতে খরচ করা হয় ৭৫ ডলার, চীনের ৮৫০ ডলার। দারিদ্রের হিসেবে চীন ২০২১-এর তথ্য বলছে সেখানে দারিদ্র সীমারেখার তলায় শূন্য শতাংশ মানুষ আছে, সেই ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে আমাদের দেশে ১১ শতাংশ মানুষ দারিদ্র সীমারেখার তলায় আছে। কিন্তু সরকার ৮০ কোটি মানুষকে ফ্রি রেশন দিয়ে যাচ্ছেন কারণ সেটা না পেলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে, হ্যাঁ, সরকার সেই কারণেই তাঁদের ফ্রি রেশন দেন। বিদেশি মুদ্রা সঞ্চয় ভান্ডার, ২০২৩-এর হিসেব অনুযায়ী চীনের আছে ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলার, ভারতের ৫৯৩ বিলিয়ন ডলার। চীনের ৬৪ শতাংশ মানুষ শহরে থাকে, ভারতের ৩৫ শতাংশ মানুষ শহরে থাকে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স খাতে বিনিয়োগ চীনের সারা পৃথিবীর ২০ শতাংশ, ভারতে সেই বিনিয়োগ মাত্র ৩ শতাংশ। ইউনিকর্নস, মানে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি টাকা নিয়ে স্টার্ট আপ কোম্পানি ২০২৩-এর হিসেবে হুরুন রিপোর্ট বলছে চীনে ৩১৬টা ইউনিকর্ন আছে, ভারতে ৬৮টা।
তাহলে দাঁড়ালটা কী? হ্যাঁ, আমাদের দেশ এগোচ্ছে, কিন্তু পাশেই এক দেশ মাত্র ১৯৪৯-এ তাদের এক শতাব্দী প্রাচীন সামন্ততন্ত্রের আগল ভেঙে বেরিয়ে এসে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, দারিদ্র দূর করতে পেরেছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য দিতে পেরেছে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা আর আবিষ্কার নিয়ে চমকে দিচ্ছে পৃথিবীকে। আর আমাদের দেশের গর্ব, ৫৫ কোটি মানুষ পুণ্যস্নান করেছেন মহাকুম্ভে, আমরা গর্ব করে বলছি এক আইআইটি পাশ ছাত্র গাঁজা খাচ্ছে আর উল্টোপাল্টা বকছে, সেটাই নাকি আমাদের ভারতবর্ষ। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন গণেশের মাথা কেটে বসানো হয়েছিল, সেটাই ছিল প্লাস্টিক সার্জারি, তিনি এ প্লাস বি হোল স্কোয়ারে এক্সট্রা টুএবি খুঁজে পান, এবং তার পরে দেশের এই পাহাড়প্রমাণ অশিক্ষা কুসংস্কার নিয়ে তিনি বিশ্বগুরু হতে চান। প্রতিবেশী দেশের একটা মানুষ তাঁর সম্পর্কে ভালো কথা বলে না, আমেরিকা পিছমোড়া করে মানুষ পাঠাচ্ছে, কানাডাতেও শুরু হয়েছে ডিপোর্টেশন। সব মিলিয়ে এক জঘন্য অবস্থা, কিন্তু তিনি গঙ্গাজলে ডুব দিয়ে নিজের মুখেই জানাবেন তিনি সাধারণ মানুষের মতো জন্ম নেননি, তিনি ভগবানের দূত, মাদার অফ ডেমোক্রেসির ফাদার মানুষ না ভগবান না অন্য কিছু তা আমাদেরই ঠিক করতে হবে। বুঝতে হবে যে অনর্গল মিথ্যে বলা এক প্যাথোলজিকাল লায়ার-এর হাতে দেশের ভার থাকলে দেশ এগোবে না, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাই এক সবাইকে নিয়ে চলার মতো ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ, এক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি আর এক সৎ আচরণ, যার কোনওটাই আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে নেই।