তিন তিনটে বছর ধরে বহু আলোচনা, বহু বিতর্কের পরে ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর বহু প্রতিক্ষিত সংবিধান, দেশের সংবিধান পেয়েছিল, দেশের মানুষ, ১৯৫০-এর ২৬ জানুয়ারি সেই সংবিধানকে সামনে রেখেই ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের যাত্রা শুরু, লাল কেল্লায় দাঁড়িয়ে দেশের নেতারা জানালেন, দেশ জমিনদারদের নয়, দেশ আমীর ওমরাহদের নয়, দেশ সাধারণ মানুষের, তাঁরা ভোট দিয়ে নির্বাচন করবেন সরকার, গণতান্ত্রিক সরকার। প্রাচীরে, মিনারে, বন্দরে, ক্ষেতে, খামারে সেদিন তেরঙ্গা উঠেছিল, দেশ হমারা হ্যায়। কতটা গণতন্ত্র? কী তার সীমাবদ্ধতা?
সে গণতন্ত্রে সবার রোটি কাপড়া মকান জুটবে কি না, সে প্রশ্ন তো ছিলই, কিন্তু তারও আগে ছিল, মানুষের মৌলিক অধিকার, দাবি জানানোর অধিকার, সভা সমাবেশ করার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সর্বজনীন ভোটাধিকার। ছিল, এসব ছিল। তাই ২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবস, কিছু পেয়েছি, অনেকটা পাইনি, তার জন্য লড়াই এর অধিকারও এই সংবিধানে আছে, এখনও পর্যন্ত আছে। তাই সেই সংবিধানকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক মানুষজনের সংবিধান দিবস, এক পবিত্র শপথ, গণতন্ত্রের শপথ। তো সেই সংবিধান দিবস পালন করলো বিজেপি আর এস এস এর সরকার, হক আছে? দায় আছে? স্বাধীনতা আন্দোলনে বিশ্বাসঘাতক দলের, সে অধিকার আছে? তাদের কোনও নেতা, এই মোদি, যোগী, শাহ তো ছেড়েই দিন, আদবানি, বাজপেয়ী, মুরলিমনোহর যোশীরা একবারের জন্যও বলেছেন, তাঁদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তাঁরা অনুতপ্ত।
বলেছেন একবারও যে সেদিন তাঁরা অমার্জনীয় অপরাধ করেছেন? ক্ষমা চেয়েছেন তার জন্য? স্বাধীনতা তো ছেড়েই দিন, ইংরেজদের কাছে মুচলেকা দেওয়া তাঁদের সংগঠনের প্রাণপুরুষ সাভারকরের কথা চেড়েই দিন, গান্ধী হত্যাকারী ষড়যন্ত্রের অংশিদারদের ছেড়েই দিন, যখন সংবিধান তৈরি হচ্ছিল, সংবিধান সভায় বিতর্ক চলছিল, দেশ কোন পথে চলবে, নাগরিকদের কোন আইন মেনে চলতে হবে, তাদের দায়িত্ব কী, তাদের অধিকার কী, সেসব নিয়ে যখন চুল চেরা বিতর্ক হচ্ছিল, তখন আর এস এস, জনসঙ্ঘ কি করছিল? তাদের ভূমিকা কী ছিল? সংবিধান সভার দিকে চেয়ে দেখুন, সেদিনের প্রধানমন্ত্রীর তিক্ততম সমালোচক বাবাসাহেব ভিমরাও আম্বেদকর সংবিধান সভার চেয়ারম্যান, এটাই গণতন্ত্র। অন্যদিকে জনসঙ্ঘ সংবিধান সভা বয়কট করেছে, কেন? সংবিধান সভায় সংবিধানের খসড়া গরিষ্ঠাংশের ভোটে পাশ হল, ২৬ নভেম্বর।
৩০ নভেম্বর, আর এস এস পত্রিকা অর্গানাইজারে লেখা হল, “The worst about the new Constitution of Bharat is that there is nothing Bhartiya about it…There is no trace of ancient Bhartiya constitutional laws, institutions, nomenclatures and phraseology in it…Manu’s Laws were written long before Lycurgus of Sparta or Solon of Persia. To this day his laws as enunciated in the Manusmriti excite the admiration of the world and elicit spontaneous obedience and conformity. But to our constitutional pundits that means nothing.”
লেখা হল, এ সংবিধান ভারতীয়ই নয়, বহু বহু আগে ভারতে মনু লিখে গিয়েছেন সমাজের নিয়ম কানুন, তাই হওয়া উচিত আমাদের সংবিধানের মূল ভিত্তি, সংবিধান রচয়িতা পন্ডিতরা সেই মনুসংহিতা কে ধর্তব্যের মধ্যেই আনলেন না। সেই মনুসংহিতার পুজারিরা আজ সংবিধান দিবস পালন করছেন। সেদিন সারা দেশে তেরঙ্গা উঠেছিল, আর নাগপুরে ভাগওয়া ঝান্ডা, দেশের জাতীয় পতাকাও যে দল তোলেনি, তাদের মুরুব্বিরা আজ সংবিধান দিবস পালন করছেন, বড় বড় কথা বলছেন। যারা প্রতি পদে পদে সংবিধান উল্লঙ্ঘন করছে, তারা সংবিধানের কথা বলছে।
তাঁদের আর এক প্রাণপুরুষ, গোলওয়া্লকর, বাঞ্চ অফ থটস এ বলছেন, “Our Constitution too is just a cumbersome and heterogeneous piecing together of various articles from various Constitutions of the Western countries. It has absolutely nothing which can be called our own. Is there a single word of reference in its guiding principles as to what our national mission is and what our keynote in life is? No!”
তাঁদেরই নেতা, ধক থাকে তো সেই কথাগুলো আজ বলুন, দাড়ি ট্রিম করে আজ মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছেন কেন? হয় বলুন সেদিন গোলওয়ালকর মিথ্যে বলেছিলেন, সেদিন ভুল বলেছিলেন, বলবেন না, কারণ আজ তারা যা করছেন, তা এক নাটক। আসলে এই সংবিধানের ওপর এতটুকু শ্রদ্ধা তাদের নেই, তাঁরা এই সংবিধানের মূল ভিত্তিকে মানেনই না, এই সংবিধানকে তাঁরা ধ্বংশ করতে চান। এই সংবিধান তাঁদের ভাষায় পাশ্চাত্য ধ্যান ধারণার ভিত্তিতে তৈরি। তাঁদের আদর্শ মনু সংহিতা।
মনুসংহিতা নিয়ে বিশ্বাসঘাতক সাভারকার কী বলেছিলেন? “Manusmriti is that scripture which is most worship-able after Vedas for our Hindu Nation and which from ancient times has become the basis of our culture-customs, thought and practice. This book for centuries has codified the spiritual and divine march of our nation. Even today the rules which are followed by crores of Hindus in their lives and practice are based on Manusmriti. Today Manusmriti is Hindu Law”. এই আর এস এস – বিজেপি মোদি – শা রা সংবিধান চান না, তাঁরা মনুসংহিতা চান। সেই মনুসংহিতা তে কী বলা আছে, একটু দেখে নেওয়া যাক।
বলা আছে, পৃথিবীর বিকাশ আর উন্নয়নের জন্য ব্রাহ্মণরা সৃষ্টিকর্তার মুখ থেকে, ক্ষত্রিয়রা তাঁর বাহু থেকে, বৈশ্যরা তাঁর জঙ্ঘা থেকে আর শুদ্ররা তাঁর পা থেকে জন্ম নিয়েছে। চতুর্বর্ণের এই বর্ণনা মনুসংহিতাতেই আছে। শুদ্রদের জন্ম ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় আর বৈশ্যদের সেবা করার জন্য। বাকিরা দ্বিজ, তাই একবার জন্ম নেওয়া শুদ্ররা যদি বাকিদের মানে, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় বা বৈশ্যদের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাহলে তাদের জিব কেটে নেওয়া হবে।
অন্য তিন জাতিকে অপমান করলে সেই শুদ্রের মুখে দশ আঙুল লম্বা তপ্ত গজাল পুঁতে দেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে কথা বললে সেই শুদ্রকে গরম তেলে চুবিয়ে মারা হবে। অন্য তিন জাতির বিরুদ্ধে হাত ব্যবহার করলে তার হাত, পা ব্যবহার করলে তার পা কেটে নেওয়া হবে। শুদ্ররা অন্য জাতির মানুষদের সঙ্গে একাশনে বসলে তাকে মেরে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। তাঁদের সেই কল্পিত হিন্দু রাষ্ট্রের ভিত্তি মনু সংহিতা তে নারীদের জন্য কী বরাদ্দ রয়েছে তা দেখা যাক। মনুসংহিতার নির্দেশে কেবল শুদ্রদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠবে তা নয়, সমস্ত বর্ণের মহিলাদের সম্পর্কে মনুর নির্দেশ অসভ্য, অমানবিক।
“যেহেতু শাস্ত্রোক্ত বিধি অনুযায়ী মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমেই স্ত্রীজাতির জাতকর্ম সংস্কার পালিত হয় না তাই তাদের অন্তকরণ নির্মল হয় না। স্মৃতি শাস্ত্র ও বেদ প্রভৃতি ধর্ম শাস্ত্রের ওপর স্ত্রীজাতির কোনো অধিকার নেই। তাই তারা ধর্মজ্ঞ হতে পারে না।এমনকি কোনো মন্ত্রের ওপরেও স্ত্রীজাতির অধিকার না থাকায় তারা কোনো পাপ করলে মন্ত্রের সাহায্যে তা ক্ষালন করতে পারে না। তাই শাস্ত্রমতে স্ত্রিজাতি মিথ্যা অর্থাৎ অপদার্থ।”(৯/১৮ ) মানে হল, মহিলাদের পৈতে হয় না, তারা দ্বীজ নয়, অতএব তাদের শাস্ত্র পাঠের অনুমতি নেই। সেই কারণে তারা মন্ত্রোচ্চারণ করতে পারে না। তাই তারা অপদার্থ। লড়কে লেঙ্গে হিন্দুস্তান বোলনেবালা রূপা, লকেট, রিমঝিম, কাঞ্চনাদের একথা জানা আছে তো। নেতা ঝান্ডা হাতে দেবেন, পাশে নিয়ে ছবিও তুলবেন। কিন্তু অভিষ্ঠ হিন্দুরাষ্ট্র তৈরির পর নারীর কাজ সন্তান উৎপাদন, এবং পতি সেবা। কেবল এটাই আরও অনেক রত্ন ছড়ানো আছে, শুনুন।
ইহলোকে পুরুষদের দূষিত করা স্ত্রীলোকেদের স্বভাব। এই জন্য পন্ডিতেরা স্ত্রীলোকদের সম্পর্কে অসাবধান হন না।”২/২১৩ “স্ত্রীগণ সৌন্দর্য বিচার করেন না। যুবা কী বৃদ্ধ সে ব্যাপারেও তাদের কোনো আপত্তি থাকে না। সুরূপই হোক বা কুরূপই হোক পুরুষ পেলেই তারা তার সঙ্গে সম্ভোগ করেন।” ৯/১৪
“পুরুষের দর্শন মাত্রেই স্ত্রীজাতির মনে তার সঙ্গে মিলনের ইচ্ছা জন্মায়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তাদের চিত্তচাঞ্চল্য থাকে।” ৯/১৫
“শয়ন, আসন, ভূষণ,কাম, ক্রোধ,পুরহিংসা, কুটিলতা ও কুৎসিত ব্যবহার- এইসকল প্রবৃত্তি স্ত্রীলোকের জন্যই সৃষ্টির সময় মনু কল্পনা করেছেন।অর্থাৎ ওই সকল প্রবৃত্তি নারীদের স্বভাবগত ব্যপার।” ৯/১৭
নারীর ‘অন্তকরণ নির্মল হয় না।’ ৯/১৮
” মূর্খই হোক আর বিদ্বানই হোক কাম ক্রোধের বশীভূত পুরুষদের অনায়াসেই বিপথে নিয়ে যেতে কামিনীরা সমর্থ হয়।” ২/২১৪
আচ্ছা এই সব কথা র সঙ্গে কি দুটো ভালো কথা বলা নেই? আছে। তাও আছে। অ্যাঁও নয় ওঁও নয় ক্যোঁৎ গোছের কথাও আছে। কিন্তু এই কথাগুলও বলা আছে। এবং হিন্দু রাষ্ট্র চালানোর জন্য মনুসংহিতাই একমাত্র বিধান, নন্যহ পন্থা বিদ্যয়তে, আর কোনও পথ নেই।
নারী কে আপন ভাগ্য জয় করিবার, কেন নাহি দিলে অধিকার, হে বিধাতা? কবির এসব কথা মুখে আনাও পাপ। কারণ মনুসং হিতা তে নারী কে কিভাবে বশ করা যায় তার ভুরি ভুরি নির্দেশ আছে, রিমঝিম কাঞ্চনা লকেট দিদিমণিরা শুনুন।
“বাল্যকালে স্ত্রীলোক পিতার বশে, যৌবনে স্বামীর বশে এবং স্বামীর মৃত্যু হলে পুত্রের বশে থাকবেন।পুত্র না থাকলে স্বামীর সপিণ্ডের বশে থাকবেন। অর্থাৎ স্ত্রীলোক কখনওই স্বাধীনভাবে অবস্থান করবেন না।” ৫/১৪৮
“শাস্ত্রমতে বিবাহের পূর্বে স্ত্রীজাতিকে কন্যা অবস্থায় পিতা রক্ষা করবেন। যৌবন অবস্থায় বিবাহিত স্ত্রীকে স্বামী রক্ষা করবেন। বৃদ্ধ কালে পুত্র রক্ষা করবেন। এমনকি পতিপুত্রহীন নারীকেও নিকটস্থ পিতৃ প্রভৃতিরা রক্ষা করবেন, কোনো অবস্থাতেই স্ত্রী জাতি স্বাধীন থাকবেন না।” ৯/৩
“স্বামী প্রভৃতি আত্মীয় পরিজনেরা দিনরাত্রির মধ্যে কখনওই স্ত্রীজাতিকে স্বাধীনভাবে অবস্থান করতে দেবেন না। বরং সর্বদাই নিষিদ্ধ রূপ ও রসের ব্যাপারে তাদের অনাসক্ত করে তাদেরকে নিজের বশে রাখবেন।”৯/২
“কী বালিকা, কী যুবতী, কী বৃদ্ধা গৃহে থাকাকালীন কোনো কাজই স্বতন্ত্রভাবে করতে পারবেন না।” ৫/১৪৭
“স্ত্রীলোক কখনোই পিতা,স্বামী বা পুত্রের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার চেষ্টা করবেন না। কারণ এদের থেকে পৃথক হলে পিতৃকূল ও পতিকূল- উভয় কূলকেই তিনি কলঙ্কিত করবেন।” ৫/১৪৯
এবার কেউ তর্ক করতে পারেন যে সেই হিন্দু ধর্মেই তো সীতা, সাবিত্রী, অহল্যা, দ্রৌপদী ও কুন্তি উল্লেখ রয়েছে। হ্যাঁ রয়েছে তো, মুখ বুঁজে স্বামীর নির্দেশে বার বার নিজের সূচিতার পরীক্ষা দিয়েছেন সীতা। সাবিত্রীকে বিয়ে করতে হল এই জেনে যে তার স্বামী মারা যাবে, এবং তিনিই তাঁকে বাঁচিয়ে তুলবেন। অহল্যা, যাঁকে ধর্ষন করছেন দেবরাজ ইন্দ্র, যার পুজো মানুষ এখনও করে। দ্রৌপদী যিনি অর্জুন কে বিয়ে করতে চেয়ে তাঁর পাঁচ ভাই এর সঙ্গে জীবন কাটাতে বাধ্য হন এবং কুন্তি যিনি লোকলজ্জার ভয়ে তাঁর সন্তান কেভাসিয়ে দেন জলে। সেই পুরাণ তো ইতিহাস নয়, কিন্তু এর থেকে যে সময়ে রচনা সেই সময়ে সমাজে মহিলাদের অবস্থা সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা করা যায়। নারিদের মারধোর করার ব্যাপারে কিন্তু মনু মশাই বড্ড সদয়।
“পত্নীর সঙ্গে কখনোই তিনি (স্নাতক ব্রাহ্মণ) একপাত্রে ভোজন করবেন না ।” ৪/৪৩
“স্ত্রী,পুত্র,দাস,শিষ্য এবং সহোদর কনিষ্ট ভাই অপরাধ করলে সূক্ষ্ম রজ্জু দিয়ে অথবা বেণুদল বা বাঁশের বাখারি দিয়ে শাসনের জন্য তাদের আঘাত করবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে রজ্জু বা বাখারি দিয়ে শরীরের পৃষ্ঠ দেশেই একমাত্র আঘাত করতে হবে কখনোই উত্তমাঙ্গে বা মস্তকে আঘাত করা যাবে না।” পরিষ্কার বলে দিয়েছেন কঞ্চি, বাখারি দিয়ে বা পাতলা দড়ি দিয়ে পিঠে মারা যাবে, মাথায় না মারলেই হল।
এরপর বাড়িতে মাতাল স্বামীর কাছে বেধড়ক মার খাওয়া স্ত্রী যদি আদালতে যান, আমি অবাক হবোনা মহামান্য আদালত যদি বলেন যে স্বামী পুরুষটি বাখারি বা কঞ্চি দিয়েই মেরেছে তো? এবং যদি পিঠেই মেরে থাকে তাহলে কোই বাত নহি, মনু সংহিতা তে তো তাই বলা আছে। এগুলো মনুসংহিতার কথা, যার ওপর ভিত্তি করে ভারতীয় সংবিধান রচনা করা হোক, এটাই চেয়েছিলেন আর এস এস নেতারা, সাভারকার, গোলওয়ালকরেরা। আজ তার নির্লজ্জভাবে সংবিধান দিবসে বড় বড় কথা বলছে, নির্লজ্জ নাটক করছেন।
তাকিয়ে দেখুন মাত্র সাত বছরের ইতিহাস, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হবার পর থেকে সংবিধান প্রতি পদে লঙ্ঘিত হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রি কাঠামোকে ভেঙে চুরমার করার চেষ্টা প্রতিদিন এই সরকার চালিয়ে গেছে, আর তারাই আজ হঠাৎ সাধু সেজে সংবিধানের কথা বলছেন। আরে সংবিধানের কথা বলছিল তো সেই ছাত্র যুবরা, যারা এক হাতে মশাল, অন্য হাতে সংবিধান নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন কদিন আগে, যে সম্মিলিত প্রতিরোধের সামনে দাঁড়িয়ে নাগরিকত্ব বিল কে তাকে তুলে রাখতে হয়েছে অমিত শাহ – মোদিজীকে। অত ক্রনোলজি বোঝানোর পরেও কোথায় মোটাভাই? চেষ্টা করে দেখুন, দিল্লি শিক্ষা দিয়েছে, বাংলা বলে দিয়েছে, এবার দেশ বলবে।
সংবিধান মানে ধর্মনিরপেক্ষতা, সংবিধান মানে গণতন্ত্র, সংবিধান মানে যুক্তরাষ্ট্রিয় কাঠামো। এর কোনওটাই আর এস এস বিজেপির দর্শন নয়, তারা এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এক হিন্দুরাষ্ট্র, এক ব্রাহ্মণ্যবাদ, এক স্বৈরাচারি একদলীয় একক রাষ্ট্র তৈরি করতে চায়। দেশের মানুষ তা রুখে দেবে, দেশের কৃষক মজুর তা হতে দেবে না, দেশের ছাত্র যুবক পথে থাকবে, হাতে থাকবে মশাল আর সংবিধান, মুখে থাকবে ফয়েজ আহমদ ফয়েজ হাম দেখেঙ্গে।