Placeholder canvas
কলকাতা বুধবার, ২১ মে ২০২৫ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar | ভারত-পাকিস্তান পুরোদস্তুর যুদ্ধ হওয়া অসম্ভব
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  Sanchari Chatterjee
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ০৩:২৫:১৯ পিএম
  • / ৪৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • Sanchari Chatterjee

ভারত আর পাকিস্তান, দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশী, নাড়ি ছেঁড়া ভাই বলা যায়, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের বিভাজনের মাধ্যমে যাদের জন্ম, বহুদিনের পুরনো শত্রুতা আর সংঘাতের ইতিহাস বহন করে চলেছে। অন্যকিছু না দেখে কেবল বলিউড ছবির লম্বা লিস্ট দেখলেই সাফ বোঝা যাবে, দুধ মাঙ্গোগে তো ক্ষীর দেঙ্গে, তুম কাশ্মীর মাঙ্গোগে তো চিড় দেঙ্গের মতো ডায়ালগ প্রতি মুহূর্তে দেশের এক বিরাট অংশকে পাক বিরোধী করে তুলেছে, আজ নয় বহু বছর জুড়ে। ওদিকে পাকিস্তানেও আলাদা নয়, তাদের প্রচারে কাশ্মীর তো হম লে কে রহেঙ্গে, সে দেশেও একই উত্তেজনা। সত্তরের দশকে আফগানিস্তানে কমিউনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে তালিবান জঙ্গি তৈরি করা শুরু হল, পাকিস্তান ছিল সেই জঙ্গিবাহিনী তৈরির মেশিন, তৈরির ফ্যাক্টরি। সেই জঙ্গিদের এক অংশ নেমে পড়ল কাশ্মীর দখলে, পাক সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ্য মদতে সেই জঙ্গিরা নানান সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম শুরু করেছিল। ঐতিহাসিকভাবেই এই সম্পর্কটা বরাবরই উত্তেজনাপূর্ণ, দু’ দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটা যুদ্ধ পর্যন্ত হয়েছে, বেশিরভাগই কাশ্মীর নিয়ে বিরোধের কারণে। তবে উপমহাদেশের কৌশলগত পরিবেশ ট্যাকটিকাল এনভায়রনমেন্ট একেবারে বদলে যায় যখন দুটো দেশই প্রকাশ্যে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা দেখিয়ে দেয়, ভারত ১৯৭৪ সালে, আর পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে। আজও দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা বা ছোটখাটো সংঘর্ষ ঘটে, কিন্তু এই পারমাণবিক অস্ত্রই মূল কারণ, যা এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে পুরোমাত্রার যুদ্ধ ঠেকিয়ে রেখেছে। দুই দেশের হাতে এই বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার ফলে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যাকে বলে নিউক্লিয়ার ডেটারেন্স, ‘পারমাণবিক প্রতিরোধ’ — একে অন্যের উপর বড় ধরনের হামলা করার চিন্তা করলেই, তা ভয়ঙ্কর পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকিতে পৌঁছে যেতে পারে।

এই নিয়ন্ত্রণের পেছনে যে ধারণাটা কাজ করে, সেটাই পারমাণবিক প্রতিরোধ। এর মানে হল, এক দেশ এমন একটা বার্তা দেয় যেন অপর দেশ বুঝে নেয় — যদি সে কোনও অগ্রহণযোগ্য কাজ করে যেমন বড় ধরনের যুদ্ধ শুরু করা, তাহলে তাকে এত ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে পড়তে হবে যে সেই ঝুঁকি নেওয়ার সাহস সে দেখাবে না। পারমাণবিক অস্ত্র এমন এক ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা বহন করে, যা যুদ্ধকে কার্যত আত্মঘাতী করে তোলে। দুই শত্রু রাষ্ট্র যখন পারমাণবিক শক্তিধর হয়, তখন তারা পুরোপুরি যুদ্ধ করার আগেই আটকে যায় — কারণ কেউই চায় না পরিণতি সামলাতে। ইউক্রেনের কাছে বা প্যালেস্তাইনের কাছে যদি পারমাণবিক অস্ত্র থাকত, তাহলে কবেই সেসব যুদ্ধ বন্ধ হয়ে শান্তি চুক্তি হয়ে যেত। ভারতের আর পাকিস্তানের রাষ্ট্রনায়ক আর সেনাবাহিনী এই ভয়াবহতা খুব ভালোভাবেই বোঝে — আর সেটাই তাদের যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার, মানে সুর আর একটু চড়াব কি না, তা ভাবার আগেই ঠিক আগেই আটকে যায়, ২০১৬, ২০১৯, ২০২৫ তার প্রমাণ। তবে, এই নিউক্লিয়ার ডেটারেন্সের ধারণাটা মূলত আমেরিকা-সোভিয়েত ঠান্ডা যুদ্ধের সময় তৈরি হয়েছিল। যদিও সেই মডেল দক্ষিণ এশিয়ার মতো পরিস্থিতিতে পুরোপুরি খাটে না। কারণ, আমেরিকা আর সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে তো ছিল বিশাল দূরত্ব — কিন্তু ভারত আর পাকিস্তান একেবারে পাশাপাশি দেশ, আর তাদের মধ্যে সীমান্তও খুবই বিতর্কিত। ফলে যদি মিসাইল ছোঁড়া হয়, সেটা পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র কয়েক মিনিট — মানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় খুবই কম। তার উপর আছে পুরনো যুদ্ধের ইতিহাস, সীমান্তে প্রায় নিয়মিত গোলাগুলি, কাশ্মীরের সমস্যা, একে অপরের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ — সব মিলিয়ে পরিবেশটা খুব জটিল। আর সামরিক আর্থিক শক্তির বিচারে ভারতের একটা বড়সড় সুবিধা আছে, সেটা পাকিস্তান জানে।

তাই শুধু পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেই যথেষ্ট নয়, এই দুই দেশের মধ্যে প্রতিরোধ ঠিকভাবে কাজ করতে গেলে বাইরের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন, সেটা আমরা বার বার দেখেছি। আগে পৃথিবীর বিভিন্ন যুদ্ধ বা যুদ্ধ হতে পারে এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া–আমেরিকা শিবিরে ভাগ হওয়া পৃথিবীতে এক ধরনের সাম্য ছিল, যা আজ সম্ভব নয়। ভারত আর পাকিস্তানের পারমাণবিক নীতিতেও অনেক পার্থক্য আছে, আর সেগুলোর জন্য পরিস্থিতি কখনও কখনও আরও অস্থির হয়। ভারতের ২০০৩ সালের পারমাণবিক নীতিতে বলা হয়েছে, তারা ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতি মেনে চলে — অর্থাৎ, যদি তাদের উপর পারমাণবিক হামলা না হয়, তারা আগে কখনও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না। কিন্তু কিছু রিপোর্ট বলছে, ভারত হয়তো এই নীতিতে একটু নমনীয়তা আনতে পারে, আনার কথা ভাবা হচ্ছে। যেমন, যদি কোনও রাসায়নিক বা জীবাণু অস্ত্র ব্যবহার হয়, তাহলে তারা আগেভাগেই এমনকী পরমাণু হামলা করতে পারে। তবে ভারতের মূল অবস্থান হল, যদি পারমাণবিক হামলা হয়, তাহলে তারা বিপুল প্রতিশোধ নেবে— এমন প্রতিশোধ যা শত্রুর সামরিক ক্ষমতাকে একেবারে ধ্বংস করে দেবে। ভারতের এই নীতি চীন আর পাকিস্তান — দুই সম্ভাব্য শত্রুর বিরুদ্ধেই প্রযোজ্য। যদিও চীনকে তারা ভবিষ্যতের বড় হুমকি ভাবছে, পাকিস্তান এখনও তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। অন্যদিকে, পাকিস্তানের কোনও স্পষ্ট পারমাণবিক নীতি নেই। তারা কৌশলগতভাবে ‘অস্পষ্টতা’ বজায় রাখে। মানে, তারা কখন কী করবে — সেটা আগে থেকে বলে না। তবে ব্যাপারটা মোটামুটি পরিষ্কার — পাকিস্তান প্রয়োজনে আগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতেও পিছপা নয়। তারা এমন ইঙ্গিত দিয়েছে, যদি তাদের বড় ধরনের ভূখণ্ড হারাতে হয়, কিংবা সেনাবাহিনী ধ্বংস হয়ে যায়, অর্থনীতি ধ্বংস হয় বা রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা হয় — তাহলে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে। পাকিস্তান বলেছে, তাদের অস্ত্র শুধুই ভারতের জন্য, এবং ব্যবহার তখনই হবে যখন রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। আসলে তারা মনে করে, ভারতের তুলনায় তাদের সামরিক দুর্বলতা পারমাণবিক অস্ত্র দিয়েই সামাল দেওয়া সম্ভব।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | দুনিয়াজুড়ে ট্রাম্পের দাদাগিরি

পাকিস্তান ‘ট্যাকটিকাল নিউক্লিয়ার ওয়েপন’ (TNW) নামে ছোট আকৃতির পারমাণবিক অস্ত্রও তৈরি করেছে — এগুলো সীমান্ত যুদ্ধেও ব্যবহার হতে পারে। তবে এগুলোর বিস্ফোরণ ক্ষমতা অনেক বেশি — ৩০০ কিলোটন পর্যন্ত — তাই ওগুলো ব্যবহার করলেও তাদের নিজেদের এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেটাও তারা জানে। এই দুই দেশের দুই ভিন্ন নীতির মিলেমিশে দক্ষিণ এশিয়ার ‘স্টেবিলিটি-ইনস্ট্যাবিলিটি প্যারাডক্স’ তৈরি হয়েছে— মানে, পারমাণবিক অস্ত্র যুদ্ধকে ঠেকায়, এটাই স্থিরতা, কিন্তু সেই অস্ত্র থাকার কারণেই কখনও কখনও সীমিত আকারের সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়ে অস্থিরতা বাড়ে। ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই এই ‘নিউক্লিয়ার থ্রেশোল্ড’-এর নিচে থেকে কীভাবে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা যায়, সেই পথ খুঁজে বেড়িয়েছে, বেড়াচ্ছে। পাকিস্তান কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দিয়েছে — এমন অভিযোগ ভারতের, এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে, মুম্বই অ্যাটাকের সময়ে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পাকিস্তানের বক্তব্য সেসব অতীত, বরং ভারত বালোচ বিদ্রোহীদের অস্ত্রশস্ত্র ট্রেনিং দিচ্ছে। অন্যদিকে ভারত ‘লিমিটেড ওয়ার ডকট্রিন’ নিয়েছে — অর্থাৎ, পারমাণবিক যুদ্ধ না করেও সীমিতভাবে প্রতিপক্ষের উপর আঘাত হানা। ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ, ২০০১-০২ সালেও উত্তেজনা, এমনকী ২০১৯ সালের বালাকোট বিমান হামলা— এসব ছিল এই ‘লিমিটেড স্পেস’-এর মধ্যেই। তবে এই ‘রেড লাইন’ আসলে কোথায় — সেটা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রচণ্ড মতভেদ আছে। কেউ যদি ভেবে বসে প্রতিপক্ষ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না, আর সেই ভুলে বড় ধরনের হামলা চালায় — তাহলে সেই ভুলের মাশুল হতে পারে ভয়ানক।

এই ২০২৫ সালের এখনকার যাবতীয় সংশয় সঙ্কটই এই ভয়াবহতাই দেখিয়ে দেয়। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর হামলার পরে ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ কী ছিল? বলা হয়েছিল, ‘সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান দাবি করল, সেখানে সাধারণ মানুষ মারা গেছে। যুদ্ধ ঝুপ করে উপরের স্তরে উঠে গেল। এরপর দু’ দেশের মধ্যে ড্রোন, মিসাইল, যুদ্ধবিমান নিয়ে তীব্র লড়াই হয়। ৭ মে এক ভয়ানক বিমানযুদ্ধে দুই দেশের ডজন ডজন যুদ্ধবিমান অংশ নেয় — এটিই ছিল ইতিহাসে প্রথমবার, যেখানে দুটি পারমাণবিক রাষ্ট্র এমন ঘন সীমানায় সরাসরি জেট যুদ্ধ করেছে। পাকিস্তান পাল্টা ‘অপারেশন বুনিয়ান আল-মারসুস’ চালায় — মিসাইল ও ড্রোন দিয়ে ভারতের সেনাঘাঁটি ও শহর লক্ষ্য করে হামলা করে। তবুও, দু’দেশই ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। কেন? স্রেফ ট্রাম্প সাহেব বলল আসুন একসঙ্গে কলা বেচি, তাই? না, আসলে এই ঘটনাগুলো দেখায় — সীমিত সংঘর্ষের সুযোগ পারমাণবিক অস্ত্রের ছায়ায় থাকলেও, একেবারে সর্বাত্মক যুদ্ধে গড়ানোর আগে সবাই পিছু হটে — কারণ সেই যুদ্ধের ফলাফল দুই দেশের সেনা, রাষ্ট্রনায়কেরা জানেন। কারণগুলো হল ১) নিয়ন্ত্রণহীন ধ্বংসের ভয়: পারমাণবিক যুদ্ধের পরিণতি এতটাই ভয়ংকর যে কেউ সেই পথে যেতে চায় না। লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু, আর্থিক ধস, বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা— এগুলোর ভয়ই যুদ্ধ ঠেকায়। ২) দ্রুত উত্তেজনা বাড়ার ঝুঁকি: দক্ষিণ এশিয়ার ভৌগোলিক ঘনত্ব এমন যে, একবার যদি সংঘাত শুরু হয়, সেটা খুব দ্রুত পারমাণবিক স্তরে পৌঁছতে পারে। একে বলে ‘নো এসকালেটরি বাফার’ — ভুল সিদ্ধান্তের সুযোগ নেই। ৩) পারস্পরিক সক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞান: দুই দেশই জানে, খুব ভালভাবেই জানে, সব তথ্য দুই দেশের কাছেই রয়েছে, প্রতিপক্ষের পারমাণবিক অস্ত্র কতটা ধ্বংসাত্মক। তাই কেউ ঝুঁকি নিতে চায় না।

৪) আন্তর্জাতিক চাপ: বিশেষ করে আমেরিকা দুই দেশকেই বারবার শান্তির পথে ঠেলে দেয়। ২০২৫ সালের সঙ্কটেও মার্কিন কর্মকর্তারা দিল্লি ও ইসলামাবাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান। এবারেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একবার নয় বার বার বলেছেন, আমেরিকা মধ্যস্থতা না করলে ‘মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ মারা যেত’, মানে তিনিও জানতেন কোন দিকে এগোচ্ছে এই যুদ্ধ। ৫) অর্থনৈতিক দূরবস্থা: যুদ্ধ চালানো মহাখরচের ব্যাপার। পাকিস্তান এমনিতেই ঋণগ্রস্ত আর সংকটে আছে, তাদের পক্ষে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ চালানো অসম্ভব। ভারতও তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য ধরে রাখতে যুদ্ধ চায় না। তবুও পরিস্থিতি এখনও অস্থির, মাঝে মধ্যেই সেই অস্থিরতা বাড়ে, কমে, আবার বাড়ে। কিন্তু আরও বড় সমস্যা তো আছে। ১) দুর্ঘটনাজনিত উত্তেজনা: ভুল বোঝাবুঝি, সাইবার হামলা, প্রযুক্তিগত সমস্যা, বা বিচ্ছিন্ন নেতার সিদ্ধান্তে সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে। মানে চলুক না এইরকম, মাঝেমধ্যে যুদ্ধ হবে থামবে, এরই মধ্যে হঠাৎই বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে, দু’ দেশে উন্মাদ লোকজন তো কম নেই। ২) অবিশ্বাস: ইতিহাস আর উগ্র জাতীয়তাবাদের কারণে দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে ওঠেনি, সে বিশ্বাস গড়ে উঠবে? এখনই তার কোনও সম্ভাবনা দেখছি না, বিশেষ করে বিজেপির মতো এক হিন্দুত্ববাদী, জঙ্গি জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতায় থাকলে অবিশ্বাস কমার প্রক্রিয়াটাই শুরু হবে না। ৩) অ-রাষ্ট্রীয় উগ্রপন্থী দল বা গ্রুপ এবং তাদের পেছনে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মানুষজনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন। কাশ্মীর ছিনিয়ে নেবতে পাকিস্তানে হাততালি পড়ে, তেমনিই পাকিস্তানকে দু’ টুকরো করেছে ভারত, সেই কথাতেও নির্বোধ হাততালি পড়ে। কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দাবিতে পাকিস্তানে সমর্থন থাকে, বালোচিস্তানের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের দাবি ভারতে সমর্থন পায়। লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহাম্মদের মতো গোষ্ঠী যে কোনও সময়ে যুদ্ধ বাঁধাতে পারে, কারণ তাদের পেছনে পাকিস্তানের আইএসআই-এর হাত আছে। ৪) অস্ত্র প্রতিযোগিতা: দুই দেশই অস্ত্র মজুত ও আর তার আধুনিকীকরণ চলছে সর্বদা। ভারতের মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাকিস্তানের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। চীনের পাঠানো রাডার, অন্যন্য সামরিক সিস্টেম ভারতের কাছে বিপদ। ৫) কৌশলগত দ্বন্দ্ব: ভারত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বা সীমিত যুদ্ধের ধারণা নিয়ে এগোচ্ছে, পাকিস্তান ‘ট্যাকটিকাল নিউক্লিয়ার অস্ত্র’ দিয়ে প্রতিরোধ গড়তে চাইছে— এমন একটা প্রচার যে কোনও সময়ে যুদ্ধকে পারমাণবিক যুদ্ধ করে তুলতেই পারে। এবং সবথেকে বিপজ্জনক কথা হল পর্যাপ্ত কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণের অভাব: মানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা, অনুমতি, এবং প্রতিরোধের যে কাঠামো দরকার, তা এখনও নেই, পাকিস্তানে সেনাবাহিনী আর জঙ্গিদের সম্পর্ক এই বিপদকে বাড়িয়ে তুলেছে, জঙ্গিদের হাতে এই ক্ষমতা গেলে তা কোনও চিন্তাভাবনা না করেই ব্যবহার করা হবে, এটাও ভাবা দরকার। এরকম এক বিপজ্জনক পরিবেশে ঘরমে ঘুস কর মারেঙ্গে, ৫৬ ইঞ্চ কা সিনা ইত্যাদি কথাবার্তা খুব কাজের নয়। থাকতেই হবে বাইরের সাহায্য আর ‘কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজার’ (CBM), থাকতেই হবে এই ঠিকঠাক পররাষ্ট্র নীতি, যাতে এরকম পরিস্থিতে বিশ্বে দেশগুলোর সমর্থন পাওয়া যায়, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে থাকতে হবে সুসম্পর্ক। ভারত-পাকিস্তান আগেও যেমন ‘পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা নিষিদ্ধ চুক্তি’ করেছে, তেমন আরও ব্যবস্থা আনতে পারে। তবে আসল সমাধান কাশ্মীরসহ মূল বিরোধগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান ছাড়া সম্ভব না। ভারত আর পাকিস্তান যতই উত্তেজনার মধ্যে থাকুক, দুই দেশই জানে, দু’ দেশের রাষ্ট্রনায়কেরা একটা ব্যাপারে নিশ্চিত— তারা পুরোপুরি যুদ্ধের খরচ বহন করতে পারবে না। এই উপলব্ধি, আর পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা, তাদের যুদ্ধ থেকে পিছু হটতে বাধ্য করে। যদিও ছোটখাটো সংঘর্ষ চলতেই থাকে, তবুও পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ আপাতত ঠেকানো গেছে, ঠেকানো যাবে— তার একমাত্র কারণ, এই পারমাণবিক প্রতিরোধ, নিউক্লিয়ার ডেটারেন্স।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০
১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭
১৮ ১৯ ২০২১ ২২ ২৩ ২৪
২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বিশ্বের দরবারে সম্মানিত ভারতীয় সাহিত্য, আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেলেন বানু মুস্তাক
বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
বঙ্গোপসাগরে জোড়া চক্রবৎ ঘূর্ণাবর্ত, প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস
বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
বুধের অস্তমিত দশা, এই ৬ রাশির জন্য চ্যালেঞ্জ
বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
মহাকাল দর্শনে স্বস্তিকা
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
বদলাচ্ছে ২০ টাকার নোট! আগের নোট কি তবে বাতিলের তালিকায়?
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
হাসপাতালের হুইলচেয়ার নিতে জমা রাখতে হল অ্যান্ড্রয়েড ফোন
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
১ মাসের বেশি পাকিস্তানে ছিল জ‍্যোতি, কী কী করেছিল? তদন্তে উঠে এল হাড়হিম করা তথ‍্য
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
৭ মাস বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ নোবেলের বিরুদ্ধে
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
রাহুল গান্ধীকে ‘আধুনিক যুগের মীরজাফর’ বলে কটাক্ষ বিজেপির অমিত মালব্যের
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
৩ দিন বাস ধর্মঘট, কবে থেকে? জানুন এই ভিডিয়োয়
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
নজর ছাব্বিশের ভোট! বাংলা সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী?
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
দেশের বুকে জ্বলজ্বল করবে এই শহরের নাম!
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
অধ‍্যাপকের গ্রেফতারিতে বিরাট মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের, চ‍্যালেঞ্জের মুখে গ্রেফতারি?
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
খুলবে না দরজা, হাত মেলাবে না বিএসএফ-পাক রেঞ্জার্স, ‘অপারেশন সিঁন্দুর’ আবহে শুরু রিট্রিট
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
শিলিগুড়ি-মালদা ডেমু ট্রেনে আগুন, আতঙ্কে হুড়োহুড়ি যাত্রীদের
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team