Placeholder canvas
কলকাতা মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar | মোদিজি চান মুখে তালা ঝোলাতে
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  Bipasha Chakraborty
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৫ মে, ২০২৫, ০৩:২৫:০৫ পিএম
  • / ১৬ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • Bipasha Chakraborty

মুখে চতুর্থ স্তম্ভের কথা বলেই চলেছেন মোদিজি, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ইত্যাদি নিয়ে বুকনিবাজি একদিনের জন্যেও থামেনি। এসবের মধ্যেই রিপোর্টার উইদাউট বর্ডার, রিপোর্টার সান্স ফ্রন্টিয়ারস, সংক্ষেপে আর এসএফএর ২০২৫-এর রিপোর্ট হাতে পেলাম। আমাদের দেশ ১৮০টা দেশের মধ্যে এ বছরে ১৫১-তে আছে। হ্যাঁ, আগেরবারের থেকে সামান্য উপরে কিন্তু এখনও আমার দেশের চতুর্থ স্তম্ভ বিপজ্জনক অবস্থাতেই আছে। তথ্য বলছে বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ভারতের বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং ক্রমাগত পড়ছে। ২০১৭ সালে ভারত ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৩৬তম ছিল, ২০১৮ সালে ১৩৮তম। ২০২০-২১ সালে এটি ১৪০-এর কাছাকাছি ছিল। ২০২২ সালে ১৫০তম এবং ২০২৩ সালে ১৬১তম স্থানে নেমে যায়, যা ভারতের সবচেয়ে খারাপ অবস্থান। এপ্রিল ২০২৫ সালের রিপোর্টে ভারত সামান্য উন্নতি করে ১৫১তম স্থানে উঠেছে, কিন্তু আরএসএফ এখনও ভারতের পরিস্থিতিকে ‘খুব গুরুতর’ বলছে। আর এক্কেবারে সংক্ষেপে তার কারণ হিসেবে জানিয়েছে তিনটে কথা। ১) মিডিয়া মালিকানার কেন্দ্রীকরণ, মানে কয়েকটা বড় ব্যবসায়ী হাউসের হাতে চলে গেছে আমাদের দেশের চতুর্থ স্তম্ভ, সেই ব্যবসায়ীরা তাঁদের স্বার্থেই সরকারের তোষামোদ করেই যাচ্ছেন। ২) রাজনৈতিক বিভাজন, বিশাল সংখ্যক মিডিয়া যদি সরকারের পক্ষে হয়, তাহলে এক ছোট হলেও কিছু মিডিয়া আবার চোখ নাক কান বুঁজেই সরকারের বিপক্ষে। ৩) শাস্তিহীনতা, মানে সাংবাদিকদের মারা হচ্ছে, খুন করা হচ্ছে, পেটানো হচ্ছে, মিথ্যে মামলা দেওয়া হচ্ছে কিন্তু তার কোনও প্রতিকার নেই। বলা হচ্ছে এগুলোই প্রধান কারণ, যার ফলে আমাদের দেশের চতুর্থ স্তম্ভ আজ এক বিপদজনক অবস্থায় আছে।

আসুন সেই বিপজ্জনক অবস্থাটার কিছু তথ্য আর ছবি দেখে নেওয়া যাক। বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে, আর দোষীরা বেশিরভাগ সময় পার পেয়ে যায় বা গেছে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যাঙ্গালোরের অ্যাক্টিভিস্ট-সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে গুলি করে মারা হয়। ২০১৮ সালের জুনে শ্রীনগরে ‘রাইজিং কাশ্মীর’-এর সম্পাদক শুজাত বুখারীকে হত্যা করা হয়। ২০২০ সালের জুনে উত্তরপ্রদেশে একটি জমি কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশের পর রিপোর্টার শুভম মণি ত্রিপাঠীকে খুন করা হয়। ২০২৫ সালের শুরুতে আরও দুই সাংবাদিক—ছত্তিশগড়ের মুকেশ চন্দ্রকার আর উত্তরপ্রদেশের রাঘবেন্দ্র বাজপাই—খুন হয়েছেন। সিপিজে, কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস, এই হত্যাগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি বারবার জানিয়েছে কিন্তু কিছুই হয় নি, বরং যে অভিযুক্তদের ধরা হয়েছিল, তারাও জামিনে জেলের বাইরে। আরএসএফ, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স বলছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৪০ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, আর দোষীদের খুব কম ক্ষেত্রেই শাস্তি দেওয়া গেছে। পরের ছবিটা গ্রেপ্তার ও আইনি হয়রানির। অনেক সাংবাদিককে ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেফতার বা মামলায় জড়ানো হচ্ছে। ২০২০ সালে আহমেদাবাদের সাংবাদিক ধবল পটেলকে মুখ্যমন্ত্রীর কোভিড প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি প্রতিবেদনের জন্য গ্রেপ্তার করে দেশদ্রোহের মামলা দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের মার্চে কাশ্মীরের সাংবাদিক ইরফান মেহরাজকে (ওয়ান্ডে ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা) তার রিপোর্টিংয়ের জন্য আনলফুল অ্যাকটিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট আইনে গ্রেফতার করা হয়।

২০২৪ সালের শেষে ফ্যাক্ট-চেকার মহম্মদ জুবাইরকে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জন্য নতুন ভারতীয় দণ্ডবিধির, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীনে দেশদ্রোহের অভিযোগে মামলা করা হয়। ২০২৫ সালে আসামে সাংবাদিক দিলওয়ার হুসেন মজুমদারকে একটি রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কের দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করার পর মারধর করে জাতিগত অপরাধ আইনে জেলে পাঠানো হয়। এমনকি সম্পাদক ও অ্যাঙ্করদের বরখা দত্ত, রাহুল পণ্ডিত, এঁদের বিরুদ্ধেও মানহানির মামলা করা হয়েছে। সরকারের সমালোচনা করা সাংবাদিকরা নিয়মিত ভয়ভীতি, অনলাইন গালাগালি আর অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন, হয়েই চলেছেন, কোথাও প্রতিকার নেই। উদাহরণ দিতে গিয়ে সিপিজে জানিয়েছে, এক বিজেপি সাংসদ মিথ্যাভাবে অভিযোগ করেছিলেন যে রিপোর্টার্স কালেকটিভ এর আনন্দ মঙ্গনালে একজন বিদেশি এজেন্ট যিনি নাকি “অর্থনীতি ধ্বংস করছেন”। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে বিরাট করে খবর হলো, ওনাকে হুমকি দেওয়া শুরু হলো। এরপরে আছে সাংবাদিকতা দমনের জন্য ব্যবহৃত নানান আইন যা উদাহরণ দিয়ে লেখা হয়েছে এই রিপোর্টে। দেশদ্রোহ আইন আইপিসি ১২৪এ, এই ব্রিটিশ আমলের আইনটি বারবার ব্যবহার করা হচ্ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, এই “কঠোর” দেশদ্রোহ আইন যেখানে জামিনের সুযোগও কেড়ে নেওয়া হয় তা ভিন্নমত দমনের জন্যই ব্যবহৃত হয়, হচ্ছে। ধবল পটেল (২০২০) আর মহম্মদ জুবাইর (২০২৪) এর বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা হয়েছে। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে, তাই এটি সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার বড় হাতিয়ার।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | ভারত থেকে কোটিপতিরা পালাচ্ছেন কেন? যাচ্ছেন কোথায়?

সন্ত্রাসবিরোধী আইন: ইউএপিএ র মত সাংঘাতিক আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে, যেখানে একজন সাংবাদিককে বলা হচ্ছে আপনি রাষ্ট্রের পক্ষে বিপদজনক। ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর জম্মু ও কাশ্মীরে অন্তত ছয়জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা হয়, যদিও পরে বেশিরভাগ জামিনে ছাড়া পান, একটা মামলাতেও পুলিশ চার্জশিটও দিতে পারেনি। ২০২৩ সালের শেষে ভারতে সাতজন সাংবাদিক জেলে ছিলেন, বেশিরভাগই ইউএপিএ বা জম্মু ও কাশ্মীর পাবলিক সেফটি অ্যাক্টের অধীনে। এই আইনগুলো দীর্ঘদিন বিনা অভিযোগে আটক রাখার সুযোগ দেয়, আর আরএসএফ ও সিপিজে বলছে এগুলো আসলে “মিডিয়াকে চুপ করানোর” হাতিয়ার। সরকারের নতুন হাতিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি আইন। আইটি অ্যাক্ট আর নতুন ডিজিটাল নিয়ম নতুন ধরণের সেন্সরশিপের পথ খুলেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সরকার ইউটিউব ও টুইটারকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় ভূমিকা নিয়ে একটি বিবিসি ডকুমেন্টারি সরিয়ে ফেলতে বাধ্য করে। কোনও বিচার ছাড়াই, কোনরকমের শুনানি ছাড়াই এটা করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের শুরুতে টুইটার ভারতে বিবিসি পাঞ্জাবি ও কয়েকজন পাঞ্জাবি সাংবাদিকের অ্যাকাউন্ট ব্লক করে, সরকারের “আইনি অপসারণ” অনুরোধের পর, কেন এই আইনি অপসারণ তাও জানানো হয়নি। এবং আছেই তো মানহানি ও অন্যান্য আইন। ফৌজদারি মানহানি আইন এখনও রয়েছে, এবং সরকারের সমালোচনাকারী মিডিয়ার বিরুদ্ধে এটি ব্যবহৃত হয়। কাশ্মীরে পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট (পিএসএ)-এর মতো আইনে বিনা অভিযোগে সাংবাদিকদের আটক করা যায়।

২০২২ সালে নতুন মিডিয়া অ্যাক্রেডিটেশন নির্দেশিকা জারি হয়, যেখানে অস্পষ্ট কারণে যেমন “বিদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষতি”, “নৈতিকতা” বা মানহানি, সমস্যা হলো এগুলোর কোনও ব্যাখ্যাও থাকেনা আর এগুলো তো মাপাও যায় না, কিন্তু সাংবাদিকদের প্রেস পাস বাতিল করা যায়। এবারে দেখা যাক সরকারি নীতি আর সেন্সরশিপ ব্যবস্থাগুলো, অন্যতম হল ইন্টারনেট বন্ধ। ভারত বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট শাটডাউন করে। ২০২০ সালে বিশ্বের ৭০% ইন্টারনেট বন্ধ ভারতে হয়েছিল, বেশিরভাগই জম্মু ও কাশ্মীরে। ২০১৯ সালের আগস্টে কাশ্মীরে কয়েক মাস ধরে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, যা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, সাংবাদিকদের খবর সংগ্রহ, সম্পাদকদের সঙ্গে যোগাযোগ বা রিপোর্ট পাঠানোর কাজে বড় বাধা সৃষ্টি করেছে। বিক্ষোভের সময় বিশেষ করে কাশ্মীরে বা অন্যত্র এখনও হুট বলতে ঝুট ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়, যা সাংবাদিকদের কাজ থামিয়ে দেয়। এরপরে আছে কন্টেন্ট সেন্সরশিপ। কেন ওটা লিখেছেন? কেন এটা লিখেছেন? এগুলোর মধ্যে দিয়েই একধরণের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে রাজনৈতিক দলের চাপ বারায় আর সেটাতেও কাজ না হলে সরকার সরাসরি মিডিয়া সেন্সর করে। “জাতীয়তাবিরোধী” বলে বিবেচিত কন্টেন্ট নিয়মিত নিষিদ্ধ বা ব্লক করা হয়। ২০২৩ সালে বিবিসি-সহ বিদেশি মিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়; সমালোচনামূলক প্রতিবেদনের জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল আর নিউজ ওয়েবসাইট ব্লক বা ট্যাক্স রেইডের মুখে পড়ে। সিপিজে জানায়, মোদীর গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে বিবিসি ইন্ডিয়ার একটি ডকুমেন্টারি ইউটিউব ও টুইটার থেকে শেষমেষ সরাতে বাধ্য করা হয়। কখনও কখনও টিভি চ্যানেলকে সরকারি খবর প্রচারের আগে অনুমোদন নিতে হয়।

সরকার মিডিয়া মালিকদের উপরও চাপ সৃষ্টি করে—যেমন এনডিটিভির প্রতিষ্ঠাতা প্রণয় রায়, তাঁর স্ত্রীর ওপরে ২০১৯ সালে তদন্তের মধ্যে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, যা অন্য স্বাধীন মিডিয়ার জন্য সতর্কবার্তা হিসেবেই দেখা হয়েছিল। আরেক সোজা উপায় হল, প্রবেশাধিকারে বাধা ও অ্যাক্রেডিটেশন। সাংবাদিকদের প্রায়ই সরকারি প্রবেশাধিকার দেওয়া হয় না, ঢুকতেই দেওয়া হবে না, খবর কীভাবে হবে? ২০২২ সালের নতুন অ্যাক্রেডিটেশন নিয়মে মিডিয়া সংস্থাগুলোকে ৬ মাস অন্তর স্টাফের তালিকা সরকারের কাছে জমা দিতে হচ্ছে, তালিকার বাইরে কেউ থাকলে তাকে “অপরাধী” হিসেবে গণ্য করা হতে পারে। এই নিয়মে “জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা, মানহানি” ইত্যাদি অস্পষ্ট কারণে প্রবেশাধিকার বাতিল করা হচ্ছে, যার কোনও মাথামুন্ডু নেই। ফলে, বিক্ষোভ, সংসদ বা সংঘাতপূর্ণ, দাঙ্গাগ্রস্ত এলাকার খবর সংগ্ঘ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা হয়রানি বা প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়েন। এমনকি সাধারণ সংবাদ সম্মেলনেও অনেকসময়েই শুধু সরকারপন্থী মিডিয়াকে ঢুকতে দেওয়া হয়। এবং শেষমেষ কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক চাপ। বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, যারা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ, তারাই এখন বেশিরভাগ টিভি ও প্রিন্ট মিডিয়ার মালিক। রয়টার্স জানাচ্ছে, স্বাধীন নিউজ চ্যানেল এনডিটিভি ২০২২ সালে আদানি গ্রুপের হাতে চলে যায়, যার ফলে ‘ভারতের শেষ স্বাধীন মিডিয়ার একটি হুমকির মুখে’ এরকম খবরও হয়েছিল, যা অনেকটাই সঠিক। একইভাবে, মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, নেটওয়ার্ক১৮ , যার মধ্যে সিএনএন-নিউজ১৮, সিএনবিসি-টিভি১৮ ইত্যাদি সবকটা চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করে। সমালোচকরা বলছেন, এই “ক্রস-ওনারশিপ” কর্পোরেশনগুলোকে সরকারের সুবিধা করে দেয়, সেটাও প্রকাশ্যেই, সব্বাই তা জানে। সাংবাদিক হরতোষ বাল বলেছেন, “অনেক কর্পোরেটের জন্য মিডিয়া মালিকানা অন্য ব্যবসা বাড়ানোর একটা মাধ্যম।” আরএসএফ বলছে, এই “মিডিয়া মালিকানার কেন্দ্রীকরণ” ভারতের মিডিয়ার বহুত্ববাদের বহুস্বরের জন্য এক বিরাট হুমকি। সরকারি বিজ্ঞাপন হারানোর ভয় বা ট্যাক্স তদন্তের চাপে অনেক মিডিয়া নিজে থেকেই স্ব-সেন্সরশিপ করে।

একজন সাংবাদিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ২০২২ সালে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে জিতলে তার পত্রিকা তাকে যৌন হিংসা ও মুসলিম ইস্যু নিয়ে রিপোর্ট করা বন্ধ করতে বলে, পুলিশি হয়রানি আর রাজ্যের বিজ্ঞাপন হারানোর ভয়ে। মজার কথা হল যেখানে যে দল ক্ষমতায় আছে, দল মত নির্বিশেষে রাজনীতিবিদরা প্রকাশ্যে মিডিয়ার উপর হামলা চালান। ২০২৫ সালের মার্চে তেলঙ্গানার কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে একটি সমালোচনামূলক সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছিল বলে সাংবাদিকদের ‘পোশাক খুলে প্যারেড’ করানোর হুমকি দেন। সোশ্যাল মিডিয়া ও সংসদে বিজেপি নেতারা ভিন্নমত আছে এমন সাংবাদিকদের ‘জাতীয়তাবিরোধী’ বলে ডাকেন, যা অনলাইন হামলাকে উসকে দেয়। সিপিজে এই ধরনের বক্তব্যকে “প্রেসের স্বাধীনতার উপর হামলা” বলে নিন্দা করেছে। এবং এসবের পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবেই ভারতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ক্রমশ বিচ্ছিরি আকার নিচ্ছে। আরএসএফ বলছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৪০ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, আর ১৯৮টি “গুরুতর হামলা” রেকর্ড করা হয়েছে। সিপিজে’র ২০২৩ সালের তথ্যে ভারতে ৭ জন সাংবাদিক জেলে ছিলেন, বেশিরভাগই সন্ত্রাস বা জননিরাপত্তা আইনে। অনেককে “মিথ্যা খবর” বা রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ধরা হয়। ২০২৩-২৪ সালেও জমি অধিকার, সংসদীয় কেলেঙ্কারি বা গণঅসন্তোষের খবর করা সাংবাদিকদের উপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, ভারতে সাংবাদিক হত্যার দোষীদের শাস্তি দেওয়ার হার খুবই কম। গত এক দশকে ভারতে প্রেসের স্বাধীনতার উপর হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা বেড়েছে। শারীরিক হামলা, কঠোর আইন, প্রায় সম্পূর্ণ সেন্সরশিপ আর মিডিয়া মালিকানার কেন্দ্রীকরণই এর জন্য দায়ী। আরএসএফ, সিপিজে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ভারতের মিডিয়া পরিবেশের অবনতির কথা বারবার তুলে ধরছে। ফলে আমরা দেখতেই পাচ্ছি ভারত এখন বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে নীচের দিকে, আর সাংবাদিকরা ভয় ও সেলফ সেন্সরশিপ, স্ব-সেন্সরশিপের মধ্যে কাজ করছেন। ২০১৪ তে অচ্ছে দিনের শ্লোগান দিয়ে মোদি সরকার এসেছিল, সেই আচ্ছে দিন তো আসেই নি, এখন সেই আচ্ছে দিন না আসার কথা মানুষ জেনে ফেলবে তাই সংবাদ, সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার কাজটা করছেন মোদিজি।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০
১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭
১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪
২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

কবে তৃণমূল যাচ্ছেন দিলীপ? মুখ খুললেন স্ত্রী রিঙ্কু
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
ভারতের পর বিদেশের একাধিক বিমান সংস্থা পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়াচ্ছে…
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
রুটটফ রেস্তরাঁ নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্টের
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
কেন ফিল্ডিং করছেন না রোহিত, খোলসা করলেন কোচ
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
প্রথম ভারতীয় ছবি হিসেবে নজির ‘দেবী চৌধুরানী’র
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
‘রোদের নিশানা’য় সোহিনী
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
মোদির সঙ্গে দেখা করতে গেলেন রাহুল গান্ধী, কী নিয়ে আলোচনা?
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
পরনে দুধ সাদা শাড়ি-নেটের ব্লাউজ, বোল্ড অবতারে মিমি
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
জামিন বাতিল অরবিন্দের
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
মা হতে চলেছেন শোভিতা!
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
খুনের হুমকি পেলেন শামি, শুরু হল তদন্ত
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
ভারতীয় সেনার ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের চেষ্টা! নেপথ্যে পাক হ্যাকার?
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
বঙ্গীয় হিন্দু মহামঞ্চের উদ্যোগে নাম বদল, উত্তেজনা বিশ্বাস কলোনিতে
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
‘ভেজা ফ্রাই’ খ্যাত বিনয় পাঠকের বিরুদ্ধে গল্প চুরির দায়ে আইনি নোটিশ বাঙালি পরিচালকের!
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team