কুকুর বিড়ালকে একদিন খেতে দিলেই দ্বিতীয় দিন থেকেই লেজ নাড়তে শুরু করে। যিনি আদর করলেন, যিনি খেতে দিলেন, তাঁকেই প্রভু হিসেবে মেনে নিতে তাদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু বাঘ, সিংহ? স্বাধীন সত্তা? বিনা প্রশ্নে অনুগত হবার কোনও সংকেত দেয় না, মানে লেজ নাড়ায় না। এমনিতে মোদিজির দুটো মোড। একটা হল দেশে থাকলে, সেই মোডটা হল টোয়েন্টি ফোর ইনটু সেভেন ইলেকশন ক্যাম্পেইন মোড। ধরুন আমেদাবাদে প্লেন দুর্ঘটনাস্থলে গেছেন, সেখানেও ট্রিম করা দাড়ি, নতুন কুর্তা পাজামা আর গুছিয়ে ফোটোশেসন, আমি এসেছিলেম- এই বার্তা দেওয়া। অন্য মোডটা হল বিদেশ ভ্রমণ, সেখানে ওনার একটাই লক্ষ্য, নিজেকে বিশ্বগুরুর জায়গাতে দাঁড় করানো। তো সেই বিশ্বগুরুর বস্তায় এখন কেজি কেজি গ্যামাক্সিন। এই তো জি-সেভেন বৈঠকে গেলেন, রাষ্ট্রপ্রধানদের ছবি তোলা হবে, তিনি দ্বিতীয় সারিতে। প্রথম সারিতে ইউক্রেনের জেলেনিস্কি, মেক্সিকোর ক্লদিয়া সেইনবম, ব্রাজিলের লুলা ডি সিলভা, মোদিজি দ্বিতীয় সারিতে। মানে ঐ বিশ্বগুরুর বাজারে মন্দা চলছে। তো সেই জন্য আপাতত তিনি প্রথম মোডে।
এমনিতেই সামনে বিহারের ভোট তারপরেই বাংলা, তামিলনাড়ু, কেরালা। পরের বারের সবকটাতে হার ১০০% নিশ্চিত, তাই এই বিহারের ওপরে ওনার জোর বেশি। এদিকে দেশের ২৬ জন নাগরিকদের খুন করা হয়েছে, ওদিকে একটা যুদ্ধ শুরু করেও প্রভুর নির্দেশে তা বন্ধ করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে এক টালমাটাল অবস্থায় দেশের বিরোধীদের কথায় কথায় দেশবিরোধী পাকিস্তানের সমর্থক বলা দল হঠাৎই মানুষের নজর ঘোরাতে উদারতার মুখোশ এঁটে জানিয়েছিলেন, দেশের সরকার পক্ষের এবং বিরোধী সাংসদেরা দেশের হয়ে ৩৩টা দেশে যাবেন, তাঁদের দেশের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলবেন, পাকিস্তানের সঙ্গে উগ্রপন্থার যোগাযোগের প্রমাণগুলো দেখাবেন। শুনে তো সব্বাই হাঁ, ভুতের মুখে রাম নাম? কিন্তু আসাউদ্দিন ওয়েইসি থেকে শশী থারুর, সিপিএম-এর জন ব্রিটাস থেকে তৃণমূলের অভিষেক ব্যানার্জী চললেন বিদেশ সফরে। ওনারা বিদেশে দেশের মান ইজ্জত বাঁচানোর কাজ করছেন, এদিকে আমাদের ফেকুবাবু উনিজি তখন বিহারের নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত, পশ্চিম বঙ্গের সরকার যে এক্কেবারে অপদার্থ তা বোঝাতে শিলিগুড়িতে বক্তৃতা দিচ্ছেন- ‘রগ রগ মে সিন্দুর দৌড় রহা হ্যায়’, মানে শিরায় শিরায় সিঁদুঁর দৌড়চ্ছে। ওদিকে সেই কবে থেকেই ভাঙা রেকর্ডের মত সাধের লাউ, থুড়ি সাধের বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্প সাহেব বলেই চলেছেন যে আমি এই যুদ্ধ বিরতি করালাম, আমি বলেছি যুদ্ধ বিরতিতে রাজী না হলে বাণিজ্য করতে দেব না। ওরা রাজি হয়েছে। পাকিস্তান বলেছে, হ্যাঁ ঠিক কথা। মোদিজির মুখে আলিগড়ি তালা। ক’দিন আগে পর্যন্ত ওনার ল্যারিঙ্গো ট্রাকিয়াল চেম্বারে সবটা হাওয়া পুরে বার করে চিৎকার করে বলতেন, যুদ্ধে তো জিতছিল দেশ, কিন্তু নেহেরু কেন যুদ্ধ বিরতি মেনে নিল? তার সঙ্গে এক ঝুড়ি মিথ্যে, যা উনি স্বাভাবিকভাবেই না বলে থাকতে পারেন না, সেসবও বললেন। বললেন প্যাটেলের কথা শোনেননি নেহেরু। না উনি প্যাটেল পড়েছেন, না দেশের ইতিহাস।
সে থাক কিন্তু ট্রাম্পের আদেশ শিরোধার্য করে যুদ্ধ বিরতি মেনে নেওয়ার কথায় মৌনিবাবা হয়ে বসে আছেন। তিনি নাকি ট্রাম্প সাহেবকে ফোনে জানিয়েছেন, স্যার আপনি সত্যিটা বলছেন না। কী কান্ড ভাবুন, ট্রাম্প মিথ্যে বলছেন, সেটা ভারতের প্রধানমন্ত্রী জোরগলায় মিডিয়াকে বলতে পারছেন না, বললেই হয়তো, আদানি চাক্কি পিসিং অ্যান্ড পিসিং অ্যান্ড পিসিং। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন ২২ এপ্রিল যে ঘটনা ঘটেছিল, আজ সেই ঘটনার কতটুকু আমরা জানি? আর ঠিক সেই কথাগুলোই জোর গলায় বলেছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হ্যাঁ, দেশের কথা ভেবেই তিনি প্রতিনিধি দল নিয়ে বিদেশে গিয়েছেন। কিন্তু ফিরে এসে এক্কেবারে মোক্ষম প্রশ্নটা তুলেছেন। আমরা তো গেলাম, সাংসদরা তো গেলেন, কিন্তু তারপর কী পেলাম? না উনি লেজ নাড়াচ্ছেন না, প্রশ্ন করছেন। তিনি বললেন, “৩৩টি দেশে যাওয়ার পরেও কতগুলো দেশ খোলাখুলি ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে? সেই তালিকাটা কোথায়?” “২৬ জন নাগরিক নিহত হওয়ার পরেও কেন্দ্রীয় সরকার তার দায়বদ্ধতার বা স্বচ্ছতার লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। কী হল তদন্তের জানান, কে দায়ী জানান, যুদ্ধবিরতি কেন হল জানান।”
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ, ভারত কোথায় দাঁড়িয়ে?
আসলে আমাদের দেশের ভার গিয়ে পড়েছে এক স্ট্রিট স্মার্ট উনিজির ওপরে, যেখানে যেমন পারছেন সেখানে তেমন বলে যাচ্ছেন। এমনিতে টেলিপ্রম্পটার সামনে না থাকলে বক্তৃতা দিতে পারেন না, কিন্তু কথা বলার সময় তো ওনার টেলিপ্রম্পটার লাগে না, তখন এক্সট্রা টুএবি বের হতেই থাকে। জাপানে গিয়ে বলছেন, জাপানের সঙ্গে আমার পুরনো সম্পর্ক, চীনে গিয়ে বলছেন, চীনের হিউয়েন সাং নাকি ওনার গ্রামেই থাকতেন, গ্রিসের মেগাস্থিনিস ওনার পিসের ছেলের মাসির ননদের পরিচিত ইত্যাদি ইত্যাদি। কাজেই সেসব বলার শুরুয়াতি রি অ্যাকশন তো ভালোই থাকে, ছিলও। কিন্তু যত দিন গেছে ততই সব্বাই বুঝেছে, বা বলা ভাল সারহীন এই মানুষতাকে চিনে ফেলেছে, এখন আর কেউ গুরুত্ব দিতেই রাজি নন। জর্জিয়া মেলেনি প্রথম সারিতে থাকলেও উনিজি এখন দ্বিতীয় সারিতে। পহেলগাঁও হামলার পরে জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন—প্রত্যেকেই “দু পক্ষের সংযম” দেখানোর পরামর্শ দিয়েছে। কোনও শক্তিধর দেশ সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়নি, একটা কথাও বলেনি। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদেও পাকিস্তানকে দায়ী করে কোনও কঠিন প্রস্তাব পাশ হয়নি। আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিয়ো দিল্লি ও ইসলামাবাদ দুই পক্ষকেই ফোন করেন এবং উত্তেজনা কমানোর আবেদন জানিয়েছেন মাত্র। ভারতের পক্ষ থেকে এই ন্যারেটিভের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানানো হয়। কারণ, এতে হামলাকারী আর আক্রান্তকে এক আসনে বসানো হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান পুরো ঘটনাকে ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’-র প্রয়োজনীয়তা হিসেবে তুলে ধরে সফলভাবে আন্তর্জাতিক সহানুভূতি অর্জন করে নিয়েছে। OIC-এর (ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন) পক্ষ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে ‘কাশ্মীরে অবৈধ কার্যকলাপ’-এর অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে, তুরস্ক ও আজারবাইজান সরাসরি পাকিস্তানের ‘সংযম’-এর প্রশংসা করে এবং আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে। ভারতের কড়া প্রতিক্রিয়া ও জনগণের বয়কট সত্ত্বেও এসব দেশের অবস্থানে কোনও পরিবর্তন আসেনি। একবার ভাবুন, পৃথিবীর ৩৩টা দেশে গেলেন আমাদের সাংসদেরা। কিন্তু সেই দলের একজনও গেলেন না বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মায়নামারে। না এই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা কিন্তু দেখলেন এই অবজ্ঞা, দেখলেন তাঁদের প্রতিবেশি হিসেবে সামান্য মর্যাদার কথা ভাবেন না এই নরেন্দ্র মোদি। যে কোনও মানুষ জানে প্রথম সম্পর্ক ভালো রাখতে হয় ঘরের ভেতরে, ভাইয়ে-ভাইয়ে। সেখানে মোদিজি যা করেছেন সব্বাই জানেন। দেশ আজ বিভক্ত আর সেই বিভাজনের দায় এই আরএসএস–বিজেপির। এরপর মানুষ চায় তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে। একসময়ে ভালো সম্পর্ক তো ছিল, আজ তা তলানিতে ঠেকেছে। সেটাকে শুধরে নেওয়ার কোনও চেষ্টাই নেই। সরকারের ব্যবস্থাপনায় ৩৩টা দেশে গেলেন সাংসদেরা। বিরাট এক ঘোষণা, নিশ্চই তাল মিলিয়ে খরচও হয়েছে। তো কী পেলাম সেই উদ্যোগ থেকে? ৩৩টা দেশ ঘুরে আসার পরে হাতে কী রয়েছে আমাদের? আসুন দেখা যাক।
আমরা কেন এই ৩৩ টা দেশে গিয়ে এক সামুহিক প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম? সেই প্রচারের লক্ষ্য কী ছিল?
১) সারা বিশ্বে পাকিস্তান যে এক রাষ্ট্র যারা উগ্রপন্থাকে আশ্রয় দেয়, স্টেট স্পনসরড টেররিজমের জন্ম দেয়, সেটা বলতে।
২) পহলগাম অ্যাটাকের পরে ভারত যা বলেছে তার জন্য সমর্থন যোগাড় করতে।
৩) পাকিস্তানের জন্য বিভিন্ন স্যাংসন বা পাকিস্তানের ওপর বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক চাপ তৈরি করার জন্য।
৪) পাকিস্তান যাতে আইএমএফ বা অন্য সাহায্য না পায় তার ব্যবস্থা করতে।
৫) ওআইসি বা রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন ফোরামে পাকিস্তানের বক্তব্যকে খন্ডন করতে।
৬) ফিনানসিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফ-এ পাকিস্তানকে ব্ল্যাক লিস্টেড করতে যাতে তাদের আর্থিক সাহায্যগুলো বন্ধ হয়। যা ভারত মুম্বাই অ্যাটাকের পরে করতে পারেছিল।
তো কী হয়েছে? মানে এই যে ৩৩ তা দেশে ভারতের সাংসদেরা গেলেন এই লক্ষ্যগুলো নিয়ে, ফিরে আসার পরে আমরা কী পেলাম?
১) পাকিস্তান কে একটা দেশও আজ পর্যন্ত টেরর স্পনসর করছে এমন কথা বলেনি। একটা দেশও না। আমেরিকা, ইউকে বা ফ্রান্স পাকিস্তানের নামও নেয় নি।
২) পহলগাম নিয়ে আমরা যা বলেছি, সেই ন্যারেটিভ একটা দেশও সমর্থন করেনি। তারা প্রত্যেকে ঘটনার নিন্দে করেছে। কিন্তু পাকিস্তান এই কাজ করেছে সেটা কেউ বলেনি। জার্মানি জাপান ঘটনার নিন্দে করেছে, কিন্তু ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেনি।
৩) কোনও রকমের স্যাংসন বা ডিপ্লোম্যাটিক প্রেসার তৈরি করা যায়নি। চীন, সৌদি আরব, আজারবাইজান বা তুরস্ক সমর্থন করেছে।
৪) পাকিস্তানের কোনও ফান্ড আটকানো যায়নি। উল্টে আইএমএফ, বিশ্বব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ঋণ বা বিনিয়োগ পেয়েছে পাকিস্তান। যুদ্ধের পরে ভারত আন্তর্জাতিক মহল থেকে কোনও জরুরি ঋণ, বাণিজ্যিক সুবিধা বা বিনিয়োগ পায়নি। বরং ইউরোপের নির্বাচনী ব্যস্ততার অজুহাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা আরও পিছিয়ে যায়। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। যুদ্ধবিরতির ঠিক পরে ৯ মে ২০২৫-এ আইএমএফ পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন ডলারের কিস্তি টাকা দিয়েছে, এবং আরও ১.৪ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু সহনশীলতা ঋণ অনুমোদন করেছে—যদিও ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আপত্তি জানানো হয়েছিল। বিশ্বব্যাঙ্ক পাকিস্তানের সঙ্গে ১০ বছরের ‘কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক’ কার্যকর করেছে, যেখানে মানবসম্পদ ও জ্বালানি খাতে বহু-বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্কের সহযোগী আইএফসি পাকিস্তানের রেকো ডিক খনিতে ৩০ কোটি ডলারের ঋণ প্রদান করে। সৌদি আরব, ইউএই ও চীন আইএমএফ চুক্তির অংশ হিসেবে বাড়তি অর্থনৈতিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়। সৌদি সরকার ১০,০০০ বাড়তি হজ ভিসা দেয়, যা ধর্মীয় পর্যটনের মাধ্যমে আয় বাড়াতে সাহায্য করে। ইউএই নিশ্চিত করে যে পাকিস্তানিদের কর্মভিসায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই, ফলে রেমিট্যান্স আসা অব্যাহত থাকে।
৫) ওআইসি, অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কন্ট্রিজে পাকিস্তান যা যা বলেছে তার বিরুদ্ধে কিছুই করা যায়নি। উলটে কাতার পাকিস্তানের কথাগুলোই আবার বলেছে।
৬) এফএটিএ-এর স্যাংশন নতুন করে কিছুই হয়নি। আগেও পাকিস্তান গ্রে লিস্টে ছিল, এখনও তাই আছে। ব্ল্যাক লিস্টেড হয় নি। পাকিস্তান ২০২৫ সালে বেলারুসের সঙ্গে শ্রম অভিবাসন সংক্রান্ত চুক্তির আলোচনা শুরু করেছে আর রোমানিয়া পাকিস্তানসহ নেপাল ও শ্রীলঙ্কার জন্য ১ লক্ষ কর্মস্থানের কোটা খোলা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভারত এই ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ সুবিধা পায়নি। বরং মে মাসে যুক্তরাজ্য ভারতীয় ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ও কর্মীদের উপর অতিরিক্ত প্রোফাইলিং আরোপ করে।
ভারতকে সবচেয়ে বড় সমর্থন কে দিয়েছে? ইজরায়েল, যা আগামী দিনে ভারতের বিদেশনীতিকে প্রভাবিত করবে। খেয়াল করে দেখুন, ইরান থেকে রটিয়ে দেওয়া হল ইজরায়েল পরমাণু আক্রমণ করলে পাকিস্তান জবাব দেবে। পাকিস্তান কিন্তু সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা এরকম কিছু ভাবছেই না। নিশ্চিতভাবেই আমেরিকার নির্দেশেই এই কথা তারা বলেছে। মানে মধ্যপ্রাচ্যে আরও কিছু ডার্টি জব, নোংরা কাজ করানোর জন্য আমেরিকার দরকার পাকিস্তানকে, তাই তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছুই করবে না। ওদিকে এই সেদিন পর্যন্ত ভারতের দারুণ বন্ধু রাশিয়া আজ পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ঠিক করে নিতে চায়। আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়তে হলে চীনের সখ্যতা তাদের দরকার। চীনের সঙ্গেই হাত ধরে তারা পাকিস্তানের বন্দরগুলোকে ব্যবহার করতে চায়, এখন তা পরিস্কার। মানে পাকিস্তান, আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ইরান, সৌদি সব মিলিয়েই একটা বিদেশনীতি তৈরি করতে পেরেছে। আবার এই সুযোগে বাংলাদেশ বা নেপালের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করে তুলেছে। বিদেশনীতি অবকি বার ট্রাম্প সরকার বলে হয় না, বিদেশ নীতির এক ধারাবাহিকতা খুব জরুরি, মোদিজি সেসবের ধারও ধারেন না। আসলে তিনি দেশের সাংসদদের ৩৩ টা দেশে পাঠিয়েছিলেন, এইটুকুই যা। সেখান থেকে কিছু আসবে, কোনও হাতে গরম ফল পাব, তা কেউ ভাবে নি, উনিও না। দু’মাস হতে চললো পহলগাম ঘটনার, মোদিজি সেটাকে এক নির্বাচনী প্রচার করে তোলা ছাড়া কোনও কাজই করেননি।