Placeholder canvas
কলকাতা রবিবার, ০৫ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
Fourth Pillar | ১৬ দিন পার হয়ে গেল, কবে সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হবে শ্রমিকদের?
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  কৃশানু ঘোষ
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩, ১১:২৫:৩৪ পিএম
  • / ৭৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • কৃশানু ঘোষ

৪১ জন শ্রমিক আটকে পড়ে আছেন। গত এক সপ্তাহের প্রতিটা দিনেই আমরা শুনেছি আর মাত্র দু’ তিন ঘণ্টা, বেরিয়ে আসবেন শ্রমিকরা। তাঁদের জন্য বাইরে রাখা অ্যাম্বুল্যান্সের ছবি দেখিয়েছেন আরররণব গোস্বামী এবং তাঁর বাংলার ভাই। এ রাজ্য উত্তরাখণ্ড না হয়ে হিমাচল কি বাংলা কি কেরল হলে ক্যাঙ্গারু কোর্ট বসে যেত এতদিনে, কানের পোকা বের করে দিত এই রাষ্ট্রের পোষ্য জীবের দল। কিন্তু আপাতত হীরণ্ময় নীরবতা। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী চোখে দু’ লাখি গগলস আর মিলিটারি পোশাক পরে তেজসে উড়ছেন, হাত নাড়াচ্ছেন। সেই ছবি ভাসছে মেইন স্ট্রিম টিভির পর্দায়। হামারা বাজাজ-এর মতোই হামারা নেতার মিলিটারি হওয়ার খুব শখ ছিল বোঝাই যায়। ওদিকে এখনও পর্যন্ত অবিবাহিত দিলু ঘোষ মহুয়া মৈত্রের লিপস্টিক নিয়ে কথা বলছেন। বাংলার খোকাবাবু ইডি-সিবিআই হানার লিস্ট শোনাচ্ছেন, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগামিকাল এ রাজ্যে এসে ভাষণ দেবেন, বলবেন বিকাশের কথা, উন্নয়নের কথা, সবকা সাথ সবকা বিকাশ। ওদিকে ৪১ জন শ্রমিক আটকে আছেন এক সুড়ঙ্গে, আজ ১৭ দিন ধরে। হ্যাঁ, জানি তো এটা দুর্ঘটনা, জানি তো যে এরকম দুর্ঘটনা যে কোনও সময় ঘটতে পারে। কিন্তু কেন ঘটল দুর্ঘটনা আর দুর্ঘটনা যখন ঘটতেই পারে, তখন আগাম কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আসুন আমরা একটু দেখি। প্রথমে জানা যাক এই সুড়ঙ্গ কেন তৈরি হচ্ছে? আমাদের দেশের কোনও প্রান্তিক এলাকাকে মূল ভূখণ্ডের জন্যে জুড়ে দেওয়ার জন্য? রাস্তা দিয়ে দৈনন্দিন ব্যবহারের পণ্য যাবে? ওষুধ যাবে? ছাত্ররা চট করেই পৌঁছে যাবে স্কুলে? তাদের বিদ্যালয় আবার নতুন করে তৈরি করার মালমসল্লা পৌঁছে যাবে? না, ঘোষিত লক্ষ্য হল মানুষ যাতে আরও একটু তাড়াতাড়ি চারধামের তীর্থে যেতে পারেন, সেই কারণে এই সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গ কাটা শুরু হয়েছে।

পাহাড় পর্বতের মধ্যে দিয়ে জলধারা গেছে, এখানে সেখানে সেই সব পাথরের খাঁজে সুড়ঙ্গ তৈরি হয়েছে। সেই সুড়ঙ্গের উপর থেকে জল চুইঁয়ে পড়তে পড়তে বহু হাজার লক্ষ বছর ধরে তৈরি হয়েছে স্ট্যালাকটাইট, স্টালাগমাইড। নীচে থেকে উঠে আসা বা উপর থেকে ঝুলতে থাকা কিছু শক্ত পাথরের অংশ। এবার দক্ষিণে সেসব পাহাড় পর্বত আগ্নেয় শিলার, কাজেই অনেক কঠিন। অন্যদিকে সেই তুলনায় হিমালয় তো বয়সে অনেক নবীন, কাজেই এর গঠন বেশ ভঙ্গুর। আর যেখানে জল আছে সেখানে জল জমে বরফ হয়, জলের সারফেস টেনশন ইত্যাদি বেশ কিছু বিষয়ের ফলে এই স্টালাকটাইট ক্রমশ শিবলিঙ্গের চেহারা নেয়। প্রতি শীতে পূর্ণ শিব, গলতে থাকেন আবার ঠান্ডা পড়ে আবার পূর্ণ আকার। এসব গুহাতে বহু মানুষ ধ্যান করতেন, তাঁদেরই কেউ কেউ এই আদতে এক ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার কথা মানুষের কাছে আনেন, দলে দলে মানুষ সেই সব জায়গাতে যেতে থাকেন। গড়ে ওঠে চারধাম তীর্থ, মানে কেদার-বদ্রী হয়ে দেশের চার কোণে। বিজ্ঞানমনস্ক কেউ কেউ বলতেই পারেন যে এক স্ট্যালাকটাইট, স্টালাগমাইডের খেলা দেখতে পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ?

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | রাত পোহালে রাজস্থানে ভোট, কী হতে চলেছে?

আসলে লক্ষ মানুষের বিশ্বাস এর সঙ্গে জড়িয়ে এবং সেই লক্ষ কোটি মানুষের বিশ্বাসটাকেই মোদি সরকার ভাঙাতে চান, সেই লক্ষ মানুষের বিশ্বাসের ওপরে ভর দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান, আবার ক্ষমতায় আসতে চান। এই টানেল শেষ হলে ওই ওনাকেই দেখা যাবে, তেজসে চড়ার সময়ে মিলিটারি সেজেছিলেন, এবারে ওই তিনিই গেরুয়া কাপড় পরে এই টানেলের উদ্বোধনে এসে হর হর মহাদেব বলবেন। একবারও কেউ ভাবছেন না এই অনাবশ্যক কাজের জন্য গোটা হিমালয়ের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নেপালে বার বার ভূমিকম্প তো এমনি এমনি হচ্ছে না, যাঁরা নেপালে সদ্য গিয়েছেন, তাঁরা জানেন কীভাবে গাছ কাটা হয়েছে, কীভাবে হোটেল আর রিসর্টে ভরে গেছে নেপাল, কীভাবে ধস নামছে প্রায় রোজ। ঠিক সেই ছবি আমাদের হিমালয় জুড়ে, কী পশ্চিম কী পূর্ব হিমালয়, প্রত্যেকটা জায়গায় পরিকল্পনাহীনভাবে গড়ে উঠছে রাস্তাঘাট, মল, রিসর্ট, পার্ক, টানেল। ফল আমাদের চোখের সামনে। ধস নামছে, ভেঙে যাচ্ছে বাঁধ, রাস্তা তলিয়ে যাচ্ছে, মানুষ মরছে। আজ থেকে ২০ বছর আগে লাদাখের প্যাঙ্গং লেকের ধারে কোনও থাকার জায়গা ছিল না, আজ গিয়ে দেখুন মেলা বসে গেছে। সেই মানুষেরা জায়গা নোংরা করছে, প্যাঙ্গংয়ে আছে মণিমুক্তো, তাই কিছু উন্মাদের দল কোঁচড় ভরে পাথর নিয়ে ফিরছে। প্যাঙ্গংয়ের জল ঘোলাটে হচ্ছে, সোমোরিরির কথা তো বাদই দিলাম। জোশিমঠে কিছুদিন আগেই আমরা দেখেছি, বাড়ি ঘরদোর ফেটে চৌচির, রাস্তা ধসে গেছে, আমরা চামোলিতে দেখেছি একই কাণ্ড। কেদার যাওয়ার রাস্তায় দেখেছি, কল্পা কিন্নর যাওয়ার রাস্তা তো মরণখাদ, আমরা জানি। কিন্তু সেসবের দিকে না মানুষের নজর আছে না সরকারের। আর এই সরকারের তো টিকে থাকার শর্তই হল এক তীব্র হিন্দুত্ব, তাই চারধামের গাজর ঝুলিয়ে রাস্তা হচ্ছে। একটা টানেল করতে গিয়ে ধস নামাটাও নতুন কিছু নয়, বহুবার বহু জায়গায় হয়েছে। প্রশ্ন হল সরকার কি সেই বিবেচনা মাথায় রেখেছিল? ধস নামলে তাঁদের উদ্ধার কীভাবে করা হবে? কোন যন্ত্রপাতি দরকার? কী কী প্রিকশান, মানে আগে থেকেই কোন কোন ব্যবস্থা রাখতে হবে?

না, একটাও ছিল না, আর তাই অন্ধের মতো হাত-পা ছুড়ছে প্রশাসন। কারও কাছে কোনও ক্লু নেই, কেউ জানে না ঠিক কী হয়েছে আর কী করতে হবে। প্রতিদিন বলছে এই তো আর তিন ঘণ্টা। মাত্র গতকাল একজন জানিয়েছেন ২৫ ডিসেম্বরের আগে বের হলে হয়, মানে আরও এক মাস? ভেতরে ৪১ জন শ্রমিক, ৪১ জন মানুষ বসে আছেন, কারও মাথায় আছে সেটা? কীসের উন্নয়ন, কীসের ভগবান? ৪১টা পরিবারের মানুষ প্রতিদিন ক্ষয়ে যাচ্ছেন, প্রতিদিন। এই লোকজনেরা কারা? ওই টানেলের পাশেই ওই ঠান্ডাতে ঝুপড়ি করে রাতে থাকেন আর সকাল হলেই মাটি খোঁড়া আর বইবার কাজ করেন, দিনান্তে মজুরির টাকা পান। খবরে প্রকাশ এখন নাকি তাঁদের লুডো দেওয়া হয়েছে, তাঁরা আরামসে নাকি লুডো খেলছেন। যে মিডিয়ার যে অ্যাঙ্কর এই কথা বলছেন তাঁর ধারণার মধ্যেও আছে ভেতরের মানুষগুলোর সঙ্গে কী চলছে? বের হয়ে আসার পরে তাদের কী কী হতে পারে? আমার এক বন্ধু সাইক্রিয়াটিস্ট বলছিলেন এরকম আবদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুভয় যে ট্রমা তৈরি করে তার থেকেই পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার তৈরি হয়। সারা জীবনের জন্য সেই মৃত্যুভয় তাঁকে ঘিরে থাকে, তিনি নাকি লুডো খেলছেন? আরেকটা দিক থেকে ভাঙলেই কেবল চাপা পড়ে মরে যাবেন জানার পরে কেউ লুডো খেলতে পারে? কিন্তু মিডিয়া তাই দেখিয়ে যাচ্ছে। কেবল তাই নাকি, ঘটনাস্থলের পাশেই তৈরি হয়ে গেছে মন্দির। গোটা উত্তরাখণ্ডে রটনা, পাহাড় নাকি রক্ত চাইছে, মন্দিরে সেই দেবতাদের তুষ্ট করার যজ্ঞ চলছে, উত্তরাখণ্ড, দেশের অনেক জায়গায় সেই যজ্ঞ চলছে। ভাবুন আয়রনিখানা, মহাতীর্থ কেদার বদ্রী যাওয়ার জন্য সুড়ঙ্গ কাটছেন যাঁরা তাঁরা আটকে গেলেন টানেলে, ১৬ দিন ধরে তাঁদের উদ্ধার করা যাচ্ছে না। আজ এই মেশিন তো কাল অন্য মেশিন ভেঙে যাচ্ছে, কিন্তু সেই তাঁদের যেন কিছু না হয় তার জন্য আবার নতুন করে মন্দির গড়ে উঠল। এই শ্রমিকরা বেরিয়ে এলে ওই মন্দির আরেক তীর্থস্থান হয়ে উঠবে। অন্যদিকে এই টানেল কাটতে গিয়ে যে টন টন মাটি পাথর বার করা হয়েছে, সেগুলো কোথায়? সেগুলোকেও জমা করা হয়েছে ওইখানেই। একটা ভালো বর্ষা এলেই ওই বিশাল টন টন আবর্জনা নীচের গ্রামগুলোকে মাটির নীচে পুঁতে দেবে, ঠিক যেমনটা হয়েছিল মানস সরোবর যাবার রাস্তায় লিপুলেখ-এর কাছে। যেখানে গোটা ক্যাম্প সমেত মানস যাত্রীরা ওই গার্বেজের তলায় চাপা পড়ে কেবল মরেছিলেন তাই নয়, তাঁদের শরীরও খুঁজে পাওয়া যায়নি। যাঁদের মধ্যেই ছিলেন কবীর বেদির স্ত্রী প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী মন্দিরা বেদী। মার্চের মধ্যেই এই রাস্তা শেষ করার কথা ছিল, কেন? মার্চ কেন? কারণ মে মাসে ভোট, মোদিজি বুক ঠুকে বলতে পারতেন চারধাম যাত্রা আপনাদের জন্য এখন আরও সহজ করে দিল আপনাদের সরকার। এখনও ৪১ জন টানেলে আটকে, মোদিজি একটা কথাও বলছেন না। এক অসভ্য বর্বর সরকার আমাদের দেশকে দেশের মানুষকে মধ্যযুগে নিয়ে চলেছে, ঝাড়খণ্ডে দিহাড়ি, মানে পার ডে রোজগার ৩৪০ টাকার বদলে ৪০০ টাকা পাবেন, ৬০ টাকা বেশি। এই বলে যাঁরা চলে গেলেন সুড়ঙ্গ কাটতে, সেই তাঁরা আজ ১৬ দিন ধরে আটকে পড়ে আছেন, কিছু বলুন, প্রতিবাদ করুন।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
জেনে নিন রবিবাসরীয় রাশিফল
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
শুভেন্দু-অভিজিতের নামে তমলুক থানায় এফআইআর দায়ের
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
ত্রিমুকুট জয়ের স্বপ্ন অধরাই! আইএসএল চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসি
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
গলার স্বর বিকৃত করা হয়েছে, সিবিআই তদন্ত চান গধাধর
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
দুহাজার টাকার বিনিময়ে বিজেপি ধর্ষণের মিথ্যে অভিযোগ লিখিয়েছে, কী লজ্জা
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
কলকাতা পুলিশের তলবে সাড়া দিলনা রাজভবন
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
ভিডিও সাজানো, আইপ্যাকের কাজ, দাবি শুভেন্দুর
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
চুম্বনের আগে মাথায় রাখুন এই বিষয়গুলি
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
বাম, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে জয়ী করার আহ্বান বুদ্ধদেবের
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গা থেকে উদ্ধার প্রচুর বোমা
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
বিদায়… ইন্ডাস্ট্রি ছাড়ছেন রূপঙ্কর!
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team