নারী পাপের উৎস। পুরুষদের দূষিত করা স্ত্রীলোকেদের স্বভাব। হ্যাঁ, এটাই আরএসএস–বিজেপির দর্শন। খোলসা করে বলা যাক। কর্নাটকে এক জনসভাতে ভাষণ দিচ্ছিলেন বিজেপি সাংসদ, মোদি ঘনিষ্ঠ অনন্ত হেগড়ে। তিনি জনসভাতে দাঁড়িয়েই বললেন আমাদের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা চাই, কারণ ওই দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই আমরা সংবিধান পালটে ফেলতে পারব। এমন নয় যে এটা কোনও নতুন কথা, এমনও নয় যে সংবিধান বদলে এক হিন্দুরাষ্ট্রের স্থাপনা যে আরএসএস–বিজেপির আসল লক্ষ্য তা আমরা জানি না, যেটা নতুন সেটা হল এই কথাগুলো প্রকাশ্যেই বলা। অর্থাৎ তাঁরা এখন মুখোশ খুলেই মাঠে নামছেন। ওদিকে গুয়াহাটি হাইকোর্টের বিচারপতিদের মতে, “শাঁখা সিঁদুর না পরা মানে নিজেকে অবিবাহিতা মনে করা বা সেই বিয়ে মেনে না নেওয়া।“ ঝরঝরে পরিষ্কার কথা, একটি হিন্দু মেয়ে যদি সিঁথিতে সিঁদুর, হাতে নোয়া পলা শাঁখা না পরে তাহলে তার স্বামী বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতেই পারে এবং চাইলে তা অনুমোদন করা হবে। আদালতের মাইবাপেরা এই কথা বলেছে, কিন্তু ইন্ডিয়ান পেনাল কোডে, এমনকী হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টেও বা আমাদের পবিত্র সংবিধানে কোথায় একথা কোথায় বলা হয়েছে তা অবশ্য তেনারা বলেননি। একটি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাতে রায় দিতে গিয়ে তাঁরা তাঁদের অবজারর্ভেশন জানিয়েছেন। কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ? কেন এ নিয়ে আলোচনা করছি? কারণ এ ধরনের অবজারর্ভেশন পরবর্তী যে কোনও মামলায় ব্যবহার করা হবে, মানে কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে উকিল বলতেই পারেন যে, হুজুর অত তারিখে গুয়াহাটি কোর্টের বিচারক বলেছেন “শাঁখা সিঁদুর না পরা মানে, নিজেকে অবিবাহিতা মনে করা বা সেই বিয়ে মেনে না নেওয়া।“ হুজুর আমার ক্লায়েন্টের স্ত্রী যিনি এই আদালতে হাজির আছেন তিনিও সিঁদুর, শাঁখা, পলা, নোয়া কিচ্ছুটি পরেন না, তার মানে হুজুর উনি এই বিয়েকে অস্বীকার করেন, তাই আমার ক্লায়েন্টের এই বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন অনুমোদন করা হোক। অন্য আর পাঁচটা যুক্তির মধ্যে এটাও এক অকাট্য যুক্তি হিসেবে বিচারকের সামনে রাখা হবে, ক্রমে এই যুক্তি ভারতের অন্য আদালতেও এবং তার পরে এক সকালে এটি বিল হিসেবে পেশ করা হবে এবং ব্রুট মেজরিটি দিয়ে সেই বিল পাশও করা হবে। তারপর শাঁখা পলা নোয়া সিঁদুর না পরলে মব লিঞ্চিং। হ্যাঁ এটাই ক্রোনোলজি। এসব রায়, অবজারর্ভেশন এমনি এমনি হচ্ছে না, এসব রায় হঠাৎ করেও হচ্ছে না, এর পেছনে যথেষ্ট পাকা মাথা কাজ করছে। এক দর্শন কাজ করছে যা আদতে এক হিন্দু রাষ্ট্রতে গিয়ে মেশে। যার জন্য ক্রমশঃ মেরুকরণ হতে থাকা সমাজে হিন্দু কট্টরবাদীরা সমাজ বা রাষ্ট্রের প্রতিটা প্রতিষ্ঠানকে তাদের অধীনে নিয়ে যাবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এখন এ কাজ সোজা কারণ যে দেশের প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, বিশ্বাস করেন যে গণেশের মাথা মানুষের ছিল, তা কেটে ফেলার পরে হাতির মাথা জোড়া দিতে শল্য বিদ্যা কেবল নয়, প্লাস্টিক সার্জারি ব্যবহার করা হয়েছিল, এবং এটা বলে তিনি প্রমাণ করতে চাইলেন যে প্লাস্টিক সার্জারি বহু আগে থেকেই আমাদের দেশে ছিল? কবে থেকে? গণেশের কাল থেকে। কোনটা গণেশের কাল? কেউ জানে না, কারণ গল্পকথার কোনও বয়স হয় না। এবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর যদি এই বিশ্বাস হয়, তাহলে দেশে বিচারপতিরা যে এই বিশ্বাসের পথেই হাঁটবেন তা বলাই বাহুল্য। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন মহাভারতের রচনাকালে ইন্টারনেট ছিল, প্রকাশ জাভড়েকর মন্ত্রী বড় নেতা, তিনি মনে করেন সমকামিতা এক ধরনের অসুখ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন হিন্দু মুসলমান কখনও একসঙ্গে থাকতে পারে না, রাজ্যের প্রজেক্টেড বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী কাঁথির খোকাবাবুও মনে করেন হিন্দু মুসলমান একসঙ্গে থাকতে পারে না। দেশের শাসকদলের প্রায়োরিটি হল বিশাল রামের স্ট্যাচু। সেই হেন দেশে একজন বিচারপতি এ ধরনের কথা তো বলতেই পারেন, কারণ এই মেরুকরণ হতে থাকা সমাজের তিনিও তো একজন। তাহলে কী দাঁড়াবে? আমাদের দেশ তাহলে কি সংবিধান নয়, মনু স্মৃতি, মনুসংহিতা দিয়ে চলবে? যাঁরা আজ রাষ্ট্রক্ষমতায় তারা কি আমাদের সংবিধানটাকে তুলে এক হিন্দু রাষ্ট্র তৈরি করতে চান, যেখানে চতুর্বর্ণ মেনে সমাজ চলবে। যে সমাজ শাসন করবে ব্রাম্ভণ রাজপুতরা, বৈশ্যরা ব্যবসা করবে আর শূদ্ররা এই তিন বর্ণের মানুষ কে সেবা করবে। লক্ষ কোটি মানুষকে এই কথা পরিষ্কার করে বলা হোক। বলা হোক হিন্দুরাই এ দেশ চালাবে, অন্য ধর্মের ঠাঁই নেই, বা তারা যদি থাকে তাহলে তাদের এই হিন্দু আচার বিচার জীবন প্রণালী মেনে চলতে হবে। বলুন পরিষ্কার করে। এ দেশের হিন্দু শূদ্র, অন্ত্যজরা শুনুক, এ দেশের অন্য ধর্মাবলম্বীরা জানুক। কিন্তু এখন তারা এ বিষয়ে কিচ্ছুটি না বলে কেবল এই লক্ষ্য অর্জন করার জন্য চুপচাপ কাজ করে যাচ্ছে।
একের পর এক বিবৃতি আসছে, আমরা অনেকে হাসছি, দিলীপ ঘোষ বললেন, গরুর কুঁজে সোনা রয়েছে, উনি নিজের মাথা থেকে একথা বলেননি, এই টেক্সট-এর রেফারেন্স ওনার কাছে আছে, হ্যাঁ এমন কথা পুরাণে আছে, যেখানে স্বর্ণ গাভীর কথা লেখা আছে, এমন গাভীর কথাও লেখা আছে যা সারা বছর কেবল দুধ নয়, মিষ্টান্নও দিতে পারে। তিনি তা পড়েছেন, বিশ্বাস করেন এবং তাই বলেছেন। এবার এইসব বিশ্বাসের কথা যদি ব্যক্তিগত স্তরেই থাকত তাহলেও কিছু বলার ছিল না। কিন্তু ক্রমশ তা রাষ্ট্রকে ধারণ করছে। সর্বনাশ হবে সেইদিন যেদিন রাষ্ট্র এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। আজ অন্য বিষয় বাদ দিয়ে মনুসংহিতাতে নারী নিয়ে কী কী বলা হয়েছে আসুন দেখা যাক। এবং এসব বলার আগে বলে নিই যে এর মানে এমন নয় যে অন্য ধর্মগুলো ধোওয়া তুলসি পাতা। না তা নয়। ইসলাম ধর্মে নারীর অমর্যাদাকর অনেক কথা আছে, বহু এমন কথা আছে যা এই শতকে বেড়ে ওঠা কোনও মহিলার মেনে নেবার কথা নয়, খ্রিস্টান ধর্মেও তাই, সেখানেও অবিশ্বাসী বলে জোয়ান অফ আর্ককে পুড়িয়ে মারা হয়, এই ধর্মের মাথাদের নির্দেশে সক্রেটিসকে হেমলক পান করে মরতে হয়েছিল, কোপার্নিকাস বা অ্যারিস্টটলের মতো দার্শনিকদের জেলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আমার দেশ ভারতবর্ষে তো ইসলাম শাসন লাগু হচ্ছে না, বা পোপের শাসনও লাগু হচ্ছে না। একটা ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশকে প্রকাশ্যেই হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর ঘোষণা করা হচ্ছে। তাই আসুন সেই কল্পিত হিন্দু রাষ্ট্রের ভিত্তি মনুসংহিতাতে নারীদের জন্য কী বরাদ্দ রয়েছে তা দেখা যাক।
মনুসংহিতার নির্দেশে কেবল শূদ্রদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠবে তা নয়, সমস্ত বর্ণের মহিলাদের সম্পর্কে মনুর নির্দেশ অসভ্য, অমানবিক। “যেহেতু শাস্ত্রোক্ত বিধি অনুযায়ী মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমেই স্ত্রীজাতির জাতকর্ম সংস্কার পালিত হয় না তাই তাদের অন্তকরণ নির্মল হয় না। স্মৃতি শাস্ত্র ও বেদ প্রভৃতি ধর্ম শাস্ত্রের ওপর স্ত্রীজাতির কোনও অধিকার নেই। তাই তারা ধর্মজ্ঞ হতে পারে না।এমনকী কোনও মন্ত্রের ওপরেও স্ত্রীজাতির অধিকার না থাকায় তারা কোনও পাপ করলে মন্ত্রের সাহায্যে তা স্খলন করতে পারে না। তাই শাস্ত্রমতে স্ত্রীজাতি মিথ্যা অর্থাৎ অপদার্থ।”(৯/১৮ ) মানে হল, মহিলাদের পৈতে হয় না, তারা দ্বিজ নয়, অতএব তাদের শাস্ত্র পাঠের অনুমতি নেই। সেই কারণে তারা মন্ত্রোচ্চারণ করতে পারে না। তাই তারা অপদার্থ। লড়কে লেঙ্গে হিন্দুস্তান বোলনেবালা রূপা, লকেট, রিমঝিম, পার্নোদের একথা জানা আছে তো। দিলুবাবু টাচ মি নট খোকাবাবু এখন তো ঝান্ডা হাতে দেবেন, পাশে নিয়ে ছবিও তুলবেন। কিন্তু অভীষ্ট হিন্দুরাষ্ট্র তৈরির পর নারীর কাজ সন্তান উৎপাদন, এবং পতি সেবা। কেবল এটাই আরও অনেক রত্ন ছড়ানো আছে, শুনুন।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মোদিজির নেতৃত্বে দেশ পিছনের দিকে চলেছে
ইহলোকে পুরুষদের দূষিত করা স্ত্রীলোকেদের স্বভাব। এই জন্য পণ্ডিতেরা স্ত্রীলোকদের সম্পর্কে অসাবধান হন না।”২/২১৩
“স্ত্রীগণ সৌন্দর্য বিচার করেন না। যুবা কী বৃদ্ধ সে ব্যাপারেও তাদের কোনও আপত্তি থাকে না। সুরূপই হোক বা কুরূপই হোক পুরুষ পেলেই তারা তার সঙ্গে সম্ভোগ করেন।” ৯/১৪
“পুরুষের দর্শন মাত্রেই স্ত্রীজাতির মনে তার সঙ্গে মিলনের ইচ্ছা জন্মায়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তাদের চিত্তচাঞ্চল্য থাকে।” ৯/১৫
“শয়ন, আসন, ভূষণ,কাম, ক্রোধ,পুরহিংসা, কুটিলতা ও কুৎসিত ব্যবহার- এইসকল প্রবৃত্তি স্ত্রীলোকের জন্যই সৃষ্টির সময় মনু কল্পনা করেছেন।অর্থাৎ ওইসকল প্রবৃত্তি নারীদের স্বভাবগত ব্যপার।” ৯/১৭
নারীর ‘অন্তকরণ নির্মল হয় না।’ ৯/১৮
শাস্ত্রমতে স্ত্রীজাতি মিথ্যা অর্থাৎ অপদার্থ। ৯/১৮
”মূর্খই হোক আর বিদ্বানই হোক কাম ক্রোধের বশীভূত পুরুষদের অনায়াসেই বিপথে নিয়ে যেতে কামিনীরা সমর্থ হয়।” ২/২১৪
আচ্ছা এই সব কথার সঙ্গে কি দুটো ভালো কথা বলা নেই? আছে। তাও আছে। অ্যাঁও নয় ওঁও নয় ক্যোঁৎ গোছের কথাও আছে। কিন্তু এই কথাগুলোও বলা আছে। এবং হিন্দু রাষ্ট্র চালানোর জন্য মনুসংহিতাই একমাত্র বিধান, নন্যহ পন্থা বিদ্যয়তে, আর কোনও পথ নেই।
নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার, কেন নাহি দিলে অধিকার, হে বিধাতা? কবির এসব কথা মুখে আনাও পাপ। কারণ মনুসংহিতাতে নারীকে কীভাবে বশ করা যায় তার ভূরি ভূরি নির্দেশ আছে, রূপা, রিমঝিম পার্নো লকেট দিদিমণিরা শুনুন।
“বাল্যকালে স্ত্রীলোক পিতার বশে, যৌবনে স্বামীর বশে এবং স্বামীর মৃত্যু হলে পুত্রের বশে থাকবেন।পুত্র না থাকলে স্বামীর সপিণ্ডের বশে থাকবেন। অর্থাৎ স্ত্রীলোক কখনওই স্বাধীনভাবে অবস্থান করবেন না।” ৫/১৪৮
“শাস্ত্রমতে বিবাহের পূর্বে স্ত্রী জাতিকে কন্যা অবস্থায় পিতা রক্ষা করবেন। যৌবন অবস্থায় বিবাহিত স্ত্রীকে স্বামী রক্ষা করবেন। বৃদ্ধকালে পুত্র রক্ষা করবেন। এমনকি পতিপুত্রহীন নারীকেও নিকটস্থ পিতৃ প্রভৃতিরা রক্ষা করবেন, কোনও অবস্থাতেই স্ত্রী জাতি স্বাধীন থাকবেন না।” ৯/৩
“স্বামী প্রভৃতি আত্মীয় পরিজনেরা দিনরাত্রির মধ্যে কখনওই স্ত্রীজাতিকে স্বাধীনভাবে অবস্থান করতে দেবেন না। বরং সর্বদাই নিষিদ্ধ রূপ ও রসের ব্যাপারে তাদের অনাসক্ত করে তাদেরকে নিজের বশে রাখবেন।”৯/২
“কী বালিকা, কী যুবতী, কী বৃদ্ধা গৃহে থাকাকালীন কোনও কাজই স্বতন্ত্রভাবে করতে পারবেন না।” ৫/১৪৭
“স্ত্রীলোক কখনওই পিতা,স্বামী বা পুত্রের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার চেষ্টা করবেন না। কারণ এদের থেকে পৃথক হলে পিতৃকুল ও পতিকুল- উভয় কুলকেই তিনি কলঙ্কিত করবেন।” ৫/১৪৯
এবার কেউ তর্ক করতে পারেন যে সেই হিন্দু ধর্মেই তো সীতা, সাবিত্রী, অহল্যা, দ্রৌপদী ও কুন্তি উল্লেখ রয়েছে। হ্যাঁ রয়েছে তো, মুখ বুজে স্বামীর নির্দেশে বার বার নিজের সূচিতার পরীক্ষা দিয়েছেন সীতা। সাবিত্রীকে বিয়ে করতে হল এই জেনে যে তার স্বামী মারা যাবে, এবং তিনিই তাঁকে বাঁচিয়ে তুলবেন। অহল্যা, যাঁকে ধর্ষণ করছেন দেবরাজ ইন্দ্র, যার পুজো মানুষ এখনও করে। দ্রৌপদী যিনি অর্জুনকে বিয়ে করতে চেয়ে তাঁর পাঁচ ভাইয়ের সঙ্গে জীবন কাটাতে বাধ্য হন এবং কুন্তী যিনি লোকলজ্জার ভয়ে তাঁর সন্তানকে ভাসিয়ে দেন জলে। সেই পুরাণ তো ইতিহাস নয়, কিন্তু এর থেকে যে সময়ে রচনা সেই সময়ে সমাজে মহিলাদের অবস্থা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা করা যায়।
নারীদের মারধর করার ব্যাপারে কিন্তু মনু মশাই বড্ড সদয়।
“পত্নীর সঙ্গে কখনওই তিনি (স্নাতক ব্রাহ্মণ) একপাত্রে ভোজন করবেন না ।” ৪/৪৩
“স্ত্রী,পুত্র,দাস,শিষ্য এবং সহোদর কনিষ্ঠ ভাই অপরাধ করলে সূক্ষ্ম রজ্জু দিয়ে অথবা বেণুদল বা বাঁশের বাখারি দিয়ে শাসনের জন্য তাদের আঘাত করবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে রজ্জু বা বাখারি দিয়ে শরীরের পৃষ্ঠদেশেই একমাত্র আঘাত করতে হবে কখনওই উত্তমাঙ্গে বা মস্তকে আঘাত করা যাবে না।”
পরিষ্কার বলে দিয়েছেন কঞ্চি, বাখারি দিয়ে বা পাতলা দড়ি দিয়ে পিঠে মারা যাবে, মাথায় না মারলেই হলো।
এরপর বাড়িতে মাতাল স্বামীর কাছে বেধড়ক মার খাওয়া স্ত্রী যদি আদালতে যান, আমি অবাক হব না মহামান্য আদালত যদি বলেন যে স্বামী পুরুষটি বাখারি বা কঞ্চি দিয়েই মেরেছে তো? এবং যদি পিঠেই মেরে থাকে তাহলে কোই বাত নহি, মনুসংহিতাতে তো তাই বলা আছে।
তাহলে চলুক, রাষ্ট্র এভাবেই পিছনের দিকে চলতে থাকুক।