এবারে আর কোনও রাখঢাক নয়, সাফ জানিয়েই দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইউক্রেনকে আর কোনও সাহায্য নয়, অর্থাৎ যে সাহায্যের জেরেই এতদিন যুদ্ধ করে গেছে ইউক্রেন আজ সেই সাহায্যের ঝোলা আর আসবে না। কিন্তু ওদিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউরোপের দেশগুলো তাঁদের সাহায্যের কথা বলছেন সব মিলিয়ে একটা নতুন ওয়ার্ল্ড অর্ডার তৈরি হতে চলেছে। স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখে শোনা গেল তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কার কথা। দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিধর দেশের মাথায় বসে থাকা এক সম্পূর্ণ উন্মাদ যখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা বলেন তখন তা নিয়ে আলোচনা জরুরি হয় বইকী। এবং আরও জরুরি হয় নিজের দেশের প্রেক্ষিতে সেই আসন্ন দুর্ভোগে আমাদের অবস্থানটা কোথায় তা জানতে। মানে আজই সেই দুর্ভোগ নেমে এলে ভারত কোনদিকে? বাংলাদেশ বা পাকিস্তান কোনদিকে? কীভাবে ভাগ হবে ইউরোপ, এশিয়া বা আফ্রিকার দেশগুলো? আজকের এই ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের শুরুয়াতটা ঠিক কোন দিক থেকে? আসলে এক বদমায়েসের বিরুদ্ধে জোট হলেই সেই জোটের বাকিরা সব্বাই ধোওয়া তুলসি পাতা তা তো নয়। কাজেই আসুন দেখা যাক সমস্যার সূত্রপাত কোথায়? রাশিয়ার অগ্রগতি আটকাতে বা আরও মোদ্দা কথায় কমিউনিস্টদের অগ্রগতি আটকাতে সেই কবেই এই ন্যাটো তৈরি হয়েছিল। ১৯৪৯-এ ওয়াশিংটনে বসে এই গোষ্ঠীর যাত্রা শুরু, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, কানাডা, পর্তুগাল, ইটালি, নরওয়ে, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড আর আমেরিকা মিলে এক জোট, লিখিত প্রস্তাবে যাই বলা হোক না কেন, ইউরোপ তখন রাশিয়ার বাড়বাড়ন্ত থামাতেই, এই নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন জন্ম নিয়েছিল। তারপর যত দিন গেছে তত দেশ জুড়েছে এই গোষ্ঠীতে, প্রথমে পশ্চিম জার্মানি তারপর মিলিত জার্মানি, ইত্যাদি জুড়ে জুড়ে এখন ৩২টা রাষ্ট্রের সংগঠন।
এদিকে ভেঙে গেছে সোভিয়েত, কিন্তু তারপরেও ন্যাটোর কাজ কী? কাজ গোটা দুনিয়ার দখলদারি, কাজেই রাশিয়ার সঙ্গে তার ঝামেলা কিন্তু থেমে গেল না, উলটে বাড়ল। ন্যাটো গোষ্ঠীর দেশের তরফে রাশিয়াকে ঘেরা শুরু হল, পোলান্ড, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া ইত্যাদি জায়গাতে ন্যাটো রেসপন্স ফোর্সের ঘাঁটি হল, সাবেক সোভিয়েত ভেঙে তৈরি হওয়া স্বাধীন দেশগুলো একের পর এক ন্যাটোর সদস্যতা পেতে শুরু করল, আর ঠিক এই সময়েই ইউক্রেনও সেই তালিকাতে নাম লেখাতে আগ্রহ দেখাল। সোভিয়েত পন্থী রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে সেখানে ন্যাটোপন্থী বা ইউরোপ আমেরিকা পন্থী রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি স্ট্যান্ড আপ কমেডি ছেড়ে হলেন দেশের রাষ্ট্রপতি। এবং তার আগেই সোভিয়েত ক্রাইমিয়া দখলে নেমেছে, ওডেসা দখলে নিয়েছে রাশিয়া ২০১৫-তেই, এবং তা অনায়াসেই, প্রায় কোনও প্রতিরোধ ছাড়াই। এরপরে স্বাভাবিকভাবেই ইউক্রেনে রাশিয়া বিরোধিতা বাড়ে, রাশিয়ার দুটো দাবি ছিল, নো ফার্দার, আর কোনও পড়শি দেশ, ইউক্রেন সমেত, কাউকে ন্যাটোতে নেওয়া যাবে না। ওদিকে ইউরোপ এবং আমেরিকাতেও এক মন্দা চলছে যা সামাল দিতে ওয়ার ইকোনমির প্রয়োজন দেখা দিচ্ছিল, একটা হালকা যুদ্ধ চলুক, তা সব্বার জন্যই জরুরি। কী হবে? তেলের দাম বাড়বে? আমেরিকা বলল আমি দেব, তার ব্যবসা বাণিজ্য বাড়বে, বাণিজ্যে ঘাটতি কমবে। অন্যদিকে রাশিয়া বলল আমিও আছি। সব মিলিয়ে এক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা শুরু হল। আর ২০১৯-এর পর থেকে তা বড় আকার নিতে শুরু করল। এমনিতে রাশিয়ার যা শক্তি তাতে শুরুতে মনে করা হয়েছিল সপ্তাহ দুই তিনের ব্যাপার, কিন্তু দুটো কারণে তা বিলম্বিত হতে শুরু করলো, এক) ইউরোপ আমেরিকার বিরাট সাহায্য, টাকা, মিলিটারি ইকুইপমেন্ট, ইন্টলিজেন্স। ২) রাশিয়ার প্রবল আত্মবিশ্বাস, যার কোনও বাস্তব ভিত্তি ছিল না। এতটাই বিশ্বাস যে সে তার ট্যাঙ্ক বাহিনীকে এগিয়ে দিয়েছিল, পিছনের কোনও ব্যাক আপ না রেখেই, যখন আটকে গেল, তখন সেই ট্যাঙ্ক বাহিনীর কাছে গোলা বারুদ পর্যন্ত ছিল না, তারা অসহায়ের মতো হয় মারা গেল না হয় আত্মসমর্পণ করল।
সব মিলিয়ে ইউক্রেনের যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার জায়গাতে চলে গেল, ইতিমধ্যে ইউক্রেন নিজেদের সামলে নিয়েছে, দখল করা কিছু জমি পুনরুদ্ধার করেছে। বাইডেন থাকাকালীন আমেরিকার পূর্ণ সমর্থন ছিল, ইউরোপের সমর্থন তো ছিলই। রাশিয়া একটা সময়ে মুখরক্ষা করে বেরিয়ে আসার চেষ্টাও মাথায় রেখেছিল। আবার চীনের সমর্থন, ভারতের সঙ্গে তেল আর অস্ত্রের বাণিজ্য ইত্যাদির ফলে খানিক সুবিধে পেতে শুরু করল এবং এইরকম একটা সময়ে বাইডেনের জায়গাতে এলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইনি ট্রাম্প টু, ট্রাম্প ওয়ান জমানার সঙ্গে বিরাট তফাৎ। ইনি ৫ বছর ধরে ফিরে আসার চেষ্টাই শুধু করেননি, বেশ কিছু বড় জিনিস মাথায় রেখেছিলেন, তার মধ্যে প্রথম হল ওসব দুনিয়াদারি গয়া ভাড় মে, আমার দেশের মানুষ ফার্স্ট প্রায়োরিটি, মার্কিন বাণিজ্য ফার্স্ট প্রায়োরিটি। এগুলোকে সামনে রেখেই নতুন মার্কিনি ব্যবস্থা তৈরি হবে। তো ট্রাম্প টু জমানা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা শুরু হয়ে গেছে। সেই পুরনো জমানা শেষ যেখানে দেশে দেশে বিভিন্ন সাহায্য আর সুযোগের বদলে কাঠপুতুল সরকার তৈরি করে এক ইউনি পোলার ওয়ার্ল্ড তৈরির চেষ্টা চলত। সাহায্য আর টাকা দিয়ে লাতিন আমেরিকার দেশে দেশে পুতুল সরকার বসানোর দায়িত্ব আলাদা মন্ত্রক কাজ করত আমেরিকায়। ইউএস এইড দফতর ছিল তৃতীয় বিশ্বে নজরদারি রাখার জন্য, এখন ট্রাম্প জমানাতে সেসব উঠে যাচ্ছে। বলতেই পারেন তাহলে সে তো ভালোই, অন্য দেশে নাক না গলিয়ে নিজের দেশের বাণিজ্যের কথা ভাবা তো ভুল নয়। না, আপাতত ট্রাম্প সাহেবের মনে ধরেছে চীনা মডেল, চীন যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তাকে দ্বিতীয় চয়েজ, দু’ নম্বর অপশন হিসেবে রাখছে, প্রথম অপশন হল দেশে দেশে এমন এক বাণিজ্য শুরু করা যাতে সেই দেশের অর্থনীতি চীনের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, আপনার মাথায় ঝট করে আসবে নেপাল, পাকিস্তান, মালদ্বীপ বা শ্রীলঙ্কার কথা।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মোদিজি ধর্মে, মোদিজি জিরাফে
অবশ্যই, কিন্তু মাথায় রাখুন এই মুহূর্তে চীনের কাছে গচ্ছিত আমেরিকান পেপার মানি, টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিপত্র যা পড়ে আছে তা চীন দাবি করলে এমনকী আমেরিকার ডলার ধসে পড়বে। ওদিকে নিজের দেশেও এক ধরনের মন্দার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে আমেরিকা। তাই পুরনো রাস্তা ছেড়ে ট্রাম্প সাহেব এবারে বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মীকেই আদর্শ বলে মনে করে তাঁরা যাবতীয় পুরনো নীতি আদর্শ ইত্যাদি ফেলে এক নতুন আমেরিকা হয়ে উঠছে। যেখানে তার বাণিজ্যের প্রয়োজনে ফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাক্টকে বাতিলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আপাতত তা স্থগিত করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা থেকে আমেরিকা বেরিয়ে এসেছে, ওসব ফালতু ব্যাপারে খরচ করার প্রয়োজনীয়তা সে দেখছে না। সে ইউক্রেনকে অস্ত্র সাহায্য সব দিতে রাজি আছে যদি ইউক্রেন তাদের বিরাট বহুমূল্য খনিজ ভাণ্ডার আমেরিকার হাতে তুলে দেয়, একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গেও আমেরিকা সম্পর্ক ভালো রেখেই ফার ইস্টে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে চায়। চীনের শি জিনপিং নাকি তাঁর পুরনো বন্ধু, চীনকে সামলাতে ভারতকে সাহায্যের বদলে চীনের সঙ্গেই বাণিজ্য সম্পর্ক ভালো করার দিকে এগোচ্ছে আমেরিকা। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন থেকে সরে আসছে আমেরিকা, ওসব চ্যারিটি করার দায় তারা আর নেবে না, তাছাড়া সেই সংস্থা নাকি চীনেরই স্বার্থ দেখে। এবং এসবে মাঝখানে এই যে ভারতকে চমকানো, হাতকড়া পরিয়ে অবৈধ নাগরিকদের যুদ্ধ বিমানে ফেরত পাঠানো, বাণিজ্য শুল্ক বাড়িয়ে ভারতের আভ্যন্তরীণ বাজারে বিরাট ধাক্কা দেওয়া, সবটাই হল ব্রিক্স থেকে সরে আসুন, ব্রিক্স চলবে না, ডলারের ক্ষতি করতে পারে এমন কোনও সংগঠনকে ট্রাম্প টিকতে দেবে না।
খেয়াল করে দেখুন ব্রাজিল বা ভারত, ব্রিকস-এর অন্যতম দেশ, ব্রিকস নিয়ে আর একটা কথাও বলছে না। ঠিক এই প্রেক্ষিতে ওই ওভাল অফিসে জেলেনস্কি আর ট্রাম্প, জেডি ভান্সের আলোচনাকে আলোচনা করলে সবটা পরিষ্কার হবে। ইউক্রেনের রাশিয়া বিরোধিতা আজকের নয়, সে ন্যাটোভুক্ত দেশ হতে চায়, সেটাও নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই জেলেনস্কি এক যুদ্ধে প্রায় বিধ্বস্ত দেশের নেতা হলেও শিরদাঁড়ার জোর আছে, জোর আছে বলেই তিনি একটা কথাই জোর দিয়ে বলতে চাইছেন, ইউক্রেন ন্যাটোতে যাবে কি না, সেটা অন্য কোনও দেশের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে না। দুই, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির এক পাকাপোক্ত গ্যারান্টি দরকার কারণ রাশিয়া এর আগে চুক্তির পরেও একতরফা যুদ্ধ শুরু করেছে। ইউক্রেন তার খনিজ ভান্ডার মার্কিনিদের হাতে তুলে দিতে রাজি কিন্তু তার এই দুটো শর্ত সে সমানে বলে যাচ্ছে, বলে যাবে। সমস্যা হল ট্রাম্পও জানে পাকাপোক্তভাবে ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত দেশ হিসেবে দেখতে চায় না রাশিয়া, আর একবার সেই জায়গা ইউক্রেন পেলে এরপরে তার সঙ্গে যে কোনও সামরিক বা অসামরিক সংঘাতের ক্ষেত্রে ন্যাটো মাঝখানে এসে পড়বে। কাজেই তারা মুখে চুক্তি চাই বা শান্তি চাই বললেও আসলে চুক্তিও চায় না, শান্তিও চায় না। সেটাই দেখাতে বসেছিল সেই আলোচনার নৌটঙ্কি। রাষ্ট্রপতির সামনেই উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভান্স মোটামুটি সম্বিত পাত্র বা অর্ণব গোস্বামীর ভূমিকাতে নেমেছিলেন, কোনও প্রেক্ষিত ছাড়াই এক রাষ্ট্রপ্রধানকে অপমান করাটাই ছিল সেদিনের বৈঠকে মূল উদ্দেশ্য। জেলেনস্কি বহুক্ষণ ধরেই সেই নাটকটা বুঝতে পেরেই যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন কিন্তু প্রায় পাড়ার ছেনো মাস্তানের মতোই যা ফোট এখান থেকে, হয় কথা মেনে চলবি না হলে জিনা হারাম করে দেব গোত্রের কথা বলে ট্রাম্প বেরিয়ে গেলেন, অগত্যা জেলেনস্কিও।
কিন্তু তারপরের ঘটনা দেখুন, সেখান থেকে বেরিয়ে সেই একই সোয়েট শার্ট আর স্ল্যাক্স পরেই জেলেনস্কি চলে গেলেন ইউকে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী স্টার্মার দরজার বাইরে থেকে তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, কানাডা বা অন্যান্য দেশের তরফেও সমর্থন পেলেন জেলেনেস্কি। হ্যাঁ তিনিই হয়ে উঠতে পারেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই কেন্দ্র যাঁর এপাশে ওপাশে বিভিন্ন দেশ জড়ো হয়ে দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে এক বিপর্যয় ডেকে আনতেই পারে। ইউক্রেনের পাশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউরোপের দেশগুলো থাকতে চান, কেন? কারণ তারা রাশিয়াকে আটকাতে চান, কিন্তু সেই আটকাতে গিয়ে ইউক্রেনকে যে বিপুল সাহায্যের কথা তারা ঘোষণা করছেন বা করতেই হবে তা তাঁদের নিজের দেশের অর্থনীতিকেই ধাক্কা দেবে। অন্যদিকে ট্রাম্প সাহেব যতই নিজেকে বাণিজ্যমুখী করে তুলুন না কেন, বিশ্বের ছোট বড় দেশ মিলে যে কোনও মুহূর্তে এক বিরাট জোটের সূচনা করতেই পারে যা আগামী দিনে আমেরিকার কাছে এক বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি করতে পারে, কাজেই সমস্ত ডিপ্লোম্যাটিক, কূটনৈতিক রাজনৈতিক জোট ছেড়ে কেবল বাণিজ্য নিয়ে এগোতে থাকা ট্রাম্প সাহেব ক’দিনের মধ্যেই বুঝতে পারবেন কত বড় গাড্ডায় তিনি পড়বেন। সবথেকে বড় কথা হল চীন কী চাইছে? একটা সময়ে বিশ্বের যাবতীয় দ্বন্দ্ব ছিল সমাজতান্ত্রিক শিবির আর তথাকথিত আমেরিকান ইউরোপিয়ান পুঁজিবাদী শিবিরের লড়াই। সোভিয়েত ভাঙার পরে পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর পতনের পরে হঠাৎই বিশ্বের দ্বন্দ্ব মুসলিম মৌলবাদ আর বাকি দুনিয়ার মধ্যে গিয়ে দাঁড়াল। আজ বিশ্বের দ্বন্দ্বে একধারে রয়েছে চীন, তার সহযোগী কিছু দেশ, সেই দ্বন্দ্বকে উপেক্ষা করে ট্রাম্প টু জমানাতে ট্রাম্প সাহেব এক পাড়ার মাস্তানের ভূমিকায় নেমেছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিয়ে এক নতুন ওয়ার্ল্ড অর্ডার তৈরি করতে চাইছেন, কিন্তু তা এত সহজ হবে না। আমি গ্রিনল্যান্ড নেব তুমি বাংলাদেশ নাও, আমি কানাডাকে বলবো মূল ভূখণ্ডে মিশে যেতে, রাশিয়া ইউক্রেনকে নিয়ে নিক, আমি গাজা স্ট্রিপ নেব বাকিটা ইজরায়েল নিয়ে নিক গোছের দাদাগিরি কথাবার্তা বলে কিছুদিন দৃষ্টি আকর্ষণ করাই যায়, তারপর সেই উন্মাদের পাঠশালা বন্ধ হয়, বন্ধ হতে বাধ্য। কারণ পৃথিবীর প্রত্যেক শিক্ষিত মানুষ জানে পৃথিবী জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যার থেকেও বেশি আছে পারমাণবিক মারণাস্ত্র আর তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হলে পৃথিবীতে চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধ হবে পাথর ঘষে অস্ত্র তৈরি করে। হ্যাঁ, পৃথিবী অনায়াসে এক প্রস্তরযুগে ঢুকে পড়বে।