Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar | বাংলাদেশিরা ভারতে ঢুকে জনবিন্যাস বদলে দিচ্ছে?
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By: 
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:২৫:০৫ পিএম
  • / ২৯ বার খবরটি পড়া হয়েছে

এখন এই ধর্মের তাস ছাড়া বিজেপির হাতে কিছুই নেই, তাই সেই পচে ধসে যাওয়া পুরনো ইস্যুকেই বার করছে পকেট থেকে, সেই ধর্মের তাস ফেলে বৈতরণী পার করার চেষ্টায় আছেন মোদিজি। বিহারের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে বক্তব্য রেখেছেন, তা সেই আলোচনারই এক প্রতিধ্বনি। সেখানে তিনি বলেছেন, দেশের জনসংখ্যার চরিত্র দ্রুত বদলে যাচ্ছে, বিশেষ করে বিহারের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে, এবং এর জন্য তিনি অনুপ্রবেশকারীদের দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বিরোধী দলগুলোকে এই অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করার এবং ভোটের রাজনীতির জন্য তাদের ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন। যা আসলে তিনি বলতে চাইছেন তা হল বাংলাদেশ থেকে মুসলমানদের নিয়ে এসে বিরোধীরা সংখ্যালঘুদের সমর্থন নিয়ে দেশ চালানোর চেষ্টা করচ্ছেন যার ফলে সংখ্যাগুরু হিন্দু খতরে মে হ্যায়। কেবল বলছেন না যে সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিএসএফ গার্ড এবং অফিসারেরা কোন দুববো ঘাস ছিঁড়ছিলেন যখন এই মুসলমানেরা দলে দলে ভারতে ঢুকছিল? পর পর দুটো রাজ্যে রাজনৈতিক জনসভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বললেন, অনুপ্রবেশের কারণে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ডেমোগ্র্যাফি বা জনবিন্যাস পাল্টে গিয়েছে। কিসের ভিত্তিতে বললেন? তিনি আর এক ধাপ এগিয়ে একে এক বিরাট ষড়যন্ত্রও বলে দিলেন, জানালেন, এর প্রতিকারেই নাকি চালু হতে চলেছে জনবিন্যাস মিশন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে হাজার একটা প্রশ্ন তো করাই যায়। প্রথমত, অনুপ্রবেশের প্রশ্নটা তো ছেলেখেলার নয়। ফলে, দেশের সর্বোচ্চ আসন থেকে সে বিষয়ে কিছু বলতে হলে সেই বক্তব্য পক্ষে যথেষ্ট প্রামাণ্য পরিসংখ্যান থাকতে তো হবে। তো উনি কি কোনও পরিসংখ্যান দিয়েছেন?

বেশ তো অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা নিশ্চিতভাবে জানা মুশকিল, কিন্তু অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে কতজন ধরা পড়ছে, তার কোনও হিসেব উনি দিয়েছেন? না, দেননি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হিসেব বলছে, ২০১৬ সালে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় মোট ১,৬০১ জন বাংলাদেশি ধরা পড়েছিল। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে সংখ্যাটা যথাক্রমে ৯০৭ এবং ৮৮৪; ২০১৯ সালে ১,১০৯; ২০২০-তে ৯৫৫। বিএসএফ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২-এর ২৮ এপ্রিল অবধি অন্তত ৪,৮৯৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় আটক করা হয়েছিল; ২০২৩-এ ২,৪০৬ জন আর ২০২৪-এ ২,৪২৫ জনকে। ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত ৫৫৭ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশে, সেখানেও কিছু ক্ষেত্রে ডিসপিউট আছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসাব অনুযায়ী, ভারতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা ২২,৫০০। এই সংখ্যাগুলো একটা দেশের, তাও আবার ভারতের মতো জনবহুল দেশের ‘জনবিন্যাস পাল্টে দেওয়া’র পক্ষে নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর, কেউ এরপরেও জনবিন্যাস বদলে যাওয়ার দাবি করলে তাকে পাগল, বা শয়তান বলা ছাড়া আর কোনও অন্য উপায়ও থাকে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে যদি অনুপ্রবেশকারীর অন্য কোনও সংখ্যা থাকে, তা প্রকাশ করা হোক। না হলে প্রধানমন্ত্রীর কথাগুলো একেবারেই ভিত্তিহীন ছেঁদো রাজনীতির ভাষ্য হিসাবেই থেকে যাবে। এবং মাথায় রাখুন, ২০১১ সালের পর থেকে ভারতে জনগণনাই হয়নি। ফলে, অঞ্চলভিত্তিক জনবিন্যাসে পরিবর্তন ঘটছে কি না, সরাসরি তা জানারও কোনও নিশ্চিত উপায় নেই। ২০১১ সালের জনসুমারির পরিসংখ্যানটার প্রেক্ষিতেও যদি কিছু অনুমান করা হয় আর ২০১৯-২১’এর জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে যেটুকু দেখা যাচ্ছে, তাতে এ কথা বলার কোনও উপায় নেই, বা বলা ভালো একথা বলার পক্ষে কোনও তথ্য যুক্তি নেই যে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলির জনবিন্যাস অনুপ্রবেশের কারণে পাল্টাচ্ছে।

প্রশ্ন হল, অনুপ্রবেশের কথাটা যদি আদৌ প্রমাণ করা না যায়, তা হলে জনসংখ্যায় হিন্দু মুসলমান মানুষের অনুপাত নিয়ে সরকার আদৌ মাথা ঘামাবে কেন? এই পরিস্থিতিতে কোনও অঞ্চলের জনবিন্যাসে কোনও বিশেষ ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর অনুপাত বাড়ছে কি না, তা কীভাবে জানা গেল? রাষ্ট্রীয় মিশন তৈরি করে সেই জা জানাই গেল না তেমন ‘সমস্যা’র সমাধান করতে চাওয়াও এক চরম অগ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ। আসলে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অসম, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে আগুন নিয়ে খেলছেন। এই ধরনের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটাই মাত্র প্রশ্ন: কেন এই মুহূর্তে জনসংখ্যার চরিত্র নিয়ে এত কথা বলা হচ্ছে? দেশের বেকারত্ব বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (MSME) মন্দা এবং আন্তর্জাতিক শুল্কের মতো হাজার একটা অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ যখন সাধারণ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করছে, তখন অর্থনীতির কঠিন বাস্তবতা এই বিতর্কের আড়ালেই চাপা পড়ে যাচ্ছে, এবং এই রাজনৈতিক খেলা শেষ পর্যন্ত দেশের ভবিষ্যতের জন্য এক নতুন বিপদ তৈরি করছে। জনসংখ্যার চরিত্র বদলানো নিয়ে যে রাজনৈতিক প্রচার চলছে, তার এক বড় অংশ তৈরি হয়েছে ভুল বা বিকৃত তথ্যের উপর ভিত্তি করে। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত জনসংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, কোনও সমাজের জন্মহার ২.১ শতাংশের নীচে নেমে গেলে সেই সমাজ বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যায়। একই সুরে, কিছু রাজনৈতিক মহলে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্মহার ৪.৪ শতাংশ বলে দাবি করা হয়েছে, যা জনসংখ্যাগত ভারসাম্যহীনতার কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়। এমনকী সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের একটি রিপোর্টে ১৯৫০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে হিন্দু জনসংখ্যা কমে যাওয়া এবং মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে, যা এই আখ্যানকে আরও জোরদার করেছে। এই ধরনের প্রচারের মূল লক্ষ্য হল জনমনে একটি কৃত্রিম ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা। কিন্তু বাস্তব সরকারি পরিসংখ্যান সম্পূর্ণ আলাদা একটা ছবি তুলে ধরে।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মোদি সরকার কি ইসলাম ধর্মের সংস্কার করতে চায়? না টার্গেট আদতে সংখ্যালঘুরা?

ওই মোদি সরকারেরই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সর্বশেষ জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা (NFHS-5) অনুযায়ী, ভারতের সামগ্রিক জন্মহার (Total Fertility Rate বা TFR) ২.০-তে নেমে এসেছে। এই হার প্রতিস্থাপন স্তরের (replacement level) ২.১-এর থেকেও কম, যা বলে দেয় যে ভারত এখন জনসংখ্যা স্থিতিশীলতার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, মানে ভারতে আর ক’ বছর পর থেকে জন্ম আর মৃত্যুর হার একই হবে, তারপরে জন্মের হারও কমবে, এবং ভবিষ্যতে এক বার্ধক্যমুখী সমাজে পরিণত হবে আমাদের দেশ। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্মহারের তুলনা করলে দেখা যায়, মুসলিমদের জন্মহার (২.৩৬) হিন্দুদের জন্মহারের (১.৯৪) চেয়ে সামান্য বেশি হলেও, এই ব্যবধান দ্রুত কমে আসছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ১৯৯২ সালে মুসলিম ও হিন্দুদের জন্মহারের পার্থক্য ছিল ১.১১, যা ২০১৯ সালে কমে হয়েছে মাত্র ০.৪২। অর্থাৎ, গত দুই দশকে মুসলিমদের জন্মহার কমার গতি হিন্দুদের চেয়েও বেশি ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জন্মহার মূলত ধর্ম দিয়ে নির্ধারিত হয় না, বরং শিক্ষা, আর্থিক অবস্থা, স্বাস্থ্য এবং নারীর ক্ষমতায়নের মতো সামাজিক কারণগুলোই এর পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। যেমন, বিহারের হিন্দুদের জন্মহার (২.৮৮) কেরালার মুসলিমদের জন্মহারের (২.২৫) চেয়ে বেশি। এই উদাহরণটাই পরিষ্কারভাবে প্রমাণ করে যে ধর্ম নয়, বরং কোনও রাজ্যের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নই জন্মহারের আসল নির্ধারক। রাজনৈতিক নেতারা পুরোনো বা বিকৃত তথ্য ব্যবহার করে এই বিতর্কটি তৈরি করছেন। ৪.৪ শতাংশ TFR-এর তথ্যটি আসলে ১৯৯২ সালের, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক।

এই ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ব্যবহার করে জনমনে এক কৃত্রিম বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে, যা আরএসএস-এর মতো সংগঠনের মূল হিন্দুত্ববাদী আদর্শের সঙ্গে খাপ খেয়ে যায়। এই কায়দাটা মূলত মানুষের মনোযোগকে দেশের অর্থনৈতিক বা অন্য কোনও বাস্তব সমস্যা থেকে সরিয়ে দিতে সাহায্যও করছে। আসল সমস্যাগুলোতে আসা যাক, যখন অর্থনীতি হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে, তখন এক অক্ষম সরকারকে এইসব গুজব আর ফেক নিউজ তৈরি করে এক কল্পিত শত্রুর জন্ম দিতে হয়, এ আজ নয়, বহু প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে। সাধারণ মানুষের কাছে কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাব বা আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা এতটাই তীব্র যে এইসব সরকারি তথ্য তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হওয়ার কথা নয়, কিন্তু হাজার হোক ধর্ম তো। ধর্ম নিয়ে যে কোনও ধরনের অসন্তোষকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা খুব সহজ। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে রফতানি হওয়া ৪৮.২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছে। এই চাপানো বিরাট ট্যারিফের ফলে টেক্সটাইল, চিংড়ি এবং অন্যান্য শ্রম-নির্ভর শিল্পগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিরুপ্পুর, নয়ডা এবং সুরাটের মতো জায়গায় অনেক উৎপাদন ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে, কারণ নির্মাতারা ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছে না। এটা একটা আদত অর্থনৈতিক আঘাত যা সরাসরি লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকাকে প্রভাবিত করছে। এই অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো শাসক দলের জন্য রাজনৈতিকভাবে ব্যাকফুটে নিয়ে যাবেই তাই জনগণের হতাশা এবং ক্ষোভকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেবার জন্যই জনসংখ্যা এবং ধর্মের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসা একটা কার্যকর কৌশল। এটা একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ব্যর্থতাকে আড়াল করছে, অন্যদিকে এক শক্তিশালী রাজনৈতিক মেরুকরণ তৈরি করে, যা হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে এককাট্টা করতে সাহায্য করে।

দেশের জাতীয় জনসংখ্যা নীতি (NPP 2000) যেখানে পরিবার পরিকল্পনার অধিকার-ভিত্তিক পদ্ধতির উপর জোর দেয় , সেখানে কিছু রাজ্য এর বিপরীত পথে হেঁটে কঠোর আইন তৈরি করেছে। উত্তরপ্রদেশ এবং অসমের মতো রাজ্যগুলো ‘দুই সন্তান নীতি’ (two-child norm) চালু করেছে। এই নীতি অনুযায়ী, দুইয়ের বেশি সন্তান থাকলে সরকারি সুযোগ-সুবিধা, চাকরি এবং স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হবে। গবেষকরা সতর্ক করেছেন যে এই ধরনের কঠোর নীতি সমাজে লিঙ্গ-নির্বাচিত গর্ভপাত, কন্যা-সন্তানদের বঞ্চনা এবং নারীদের উপর সহিংসতা বাড়াতে পারে। অথচ, শিক্ষার প্রসার, নারীর ক্ষমতায়ন এবং গর্ভনিরোধক ব্যবহারের সহজলভ্যতাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে । আসলে এই আইনগুলো বাস্তবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য যতটা না কার্যকর, তার চেয়ে বেশি কার্যকর রাজনৈতিক বিভাজন তৈরির জন্য। এই আইনগুলো এক নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে, নির্দিষ্ট ধর্মকে লক্ষ্য করে তৈরি, যা আরএসএস–বিজেপির রাজনৈতিক ন্যারেটিভের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। আর এর সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ২০২৬ সালের পর আসন্ন আসন পুনর্বিন্যাস (Delimitation) প্রক্রিয়া। বর্তমানে ভারতের লোকসভা আসন সংখ্যা ১৯৭১ সালের আদমসুমারি অনুযায়ী নির্ধারিত আছে। কিন্তু ২০২৬ সালের পর নতুন আদমসুমারির ভিত্তিতে এই আসনগুলো পুনর্বিন্যাস করা হবে। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলো, যারা সফলভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা আশঙ্কা করছে যে এই নতুন পুনর্বিন্যাসে তারা লোকসভা আসন হারাবে এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা উত্তরের দিকে সরে যাবে।

উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য, যেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি বেশি, তারা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন লাভ করবে। জনবিন্যাস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিতর্কটা কেবল সামাজিক বা ধর্মীয় বিষয় নয়, এটা আদতে রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্যের সঙ্গে জড়িত। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে একটা ধর্মীয় সংকটের মোড়কে উপস্থাপন করে, হিন্দু খতরে মে হ্যায় বলে চিৎকার করে শাসকদল এক ঢিলে দুই পাখি মারছে। একদিকে তারা ধর্মীয় মেরুকরণকে তীব্র করছে, অন্যদিকে তারা ২০২৬ সালের পর আসন্ন রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের বিরুদ্ধে এক লড়াই এখনই শুরু করেছে। এই ধরনের রাজনৈতিক কৌশল দেশের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং সামাজিক সম্প্রীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটা কেবল এক নির্দিষ্ট নির্বাচনের জন্য নয়, বরং এক নতুন সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে রূপ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এটা এমন একটা দেশ তৈরি করতে চায়, যেখানে নাগরিকের পরিচয় তার অর্থনৈতিক বা সামাজিক অবদানের ভিত্তিতে নয়, বরং তার ধর্মীয় পরিচয় ও সংখ্যা দিয়ে নির্ধারিত হবে। কত অনুপ্রবেশ ঘটছে? তা জানা নেই; অনুপ্রবেশকারীরা কারা? জানা নেই। তারা কোন ধর্মের? সেটা বিলক্ষণ জানা আছে। প্রশ্ন হল, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফ-এর হাতে। সেই বাহিনী বিরোধী দলের অঙ্গুলি হেলনেই আজকাল চলে, এমন কথা বলে আসলে প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে বসে থাকাকেই চ্যালেঞ্জ করছেন। তার সঙ্গে তিনি কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই বলতে চান যে, বিরোধী দলগুলি ভোটের স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সমঝোতা করতেও দ্বিধা করে না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এরকম ভিত্তিহীন মারাত্মক অভিযোগ করলে তার পক্ষে প্রমাণ দেওয়ার দায়িত্বও তাঁরই। সেই প্রমাণ না দিলে বুঝতে হবে, তাঁদের মেরুকরণের রাজনীতি প্রবেশ করল এক ভয়ঙ্কর অন্ধকার শাসনের গর্তে, যেখানে থাকবে কিছু চিল চিৎকার, ঘৃণা আর বিদ্বেষ।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭১৮ ১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

পুজোয় যত খুশি যাতায়াত করুন! বিশেষ কার্ড দেবে কলকাতা মেট্রো
বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
যাদবপুরে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের আশ্বাস রাজ্যপাল
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
মহানগরের মহাপুজো, ৬৬ পল্লী
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
পুজোতে ভিড়ে খুঁজে পাচ্ছেন না কাছের মানুষকে? মুশকিল আসান করবে লালবাজার
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় মোদির অবদান গত ১১ বছরে
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ভগবান বিষ্ণু সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য প্রধান বিচারপতির!
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ভাদুকে আপন করে নিয়েছেন পুরুলিয়ার মেয়ে, বউরা
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
কংগ্রেস নেতার নির্বাচন বাতিল করল কর্ণাটক হাইকোর্ট!
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
চালের স্বাদ-সুবাস দুইই ফিকে হচ্ছে? সঠিক পদ্ধতি মেনে ধুচ্ছেন তো?
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
বয়কটের হুমকির পর ফের মাঠের দিকে রওনা দিল পাক ক্রিকেটাররা!
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ! রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চাঁচলের নার্সিংহোমে
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
আইসিসির সেরা হলেন বরুণ, স্মৃতি, শীর্ষে অভিষেক, হার্দিকও
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
আজব অভিযোগ এনে ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাওয়ের হুমকি খালিস্তানিদের!
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
হাইকোর্টের চাপ, মুখ্যসচিবের রিপোর্টে অসন্তুষ্ট বিচারপতি, কী জানাল হাইকোর্ট?
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ভারতীয় সেনার হাতে আসছে নতুন অ্যাটাক হেলিকপ্টার!
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team