Placeholder canvas
কলকাতা সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ |
K:T:V Clock
চতুর্থ স্তম্ভ: জিন্না আর প্যাটেল
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ১২:০৪:৫৫ এম
  • / ২০৬ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

নির্বাচন এসে গিয়েছে৷ বিজেপির বিকাশ যথারীতি গরু চরাতে গিয়েছে মাঠে৷ কোন মাঠে জিজ্ঞেষ করবেন না, জানা নেই। আপাতত রাস্তার পেঁচো মাস্তানের ভাষায় নেমে এসেছে বিজেপি৷ এবার প্রথম নয়৷ এর আগের প্রত্যেক হারা নির্বাচনে এটাই ছিল বিজেপির চেহারা৷ রাস্তার লোফাররা যেভাবে টিটকিরি দেয়, হুবহু সেইভাবে আমরা এই বাংলায় টিটকিরি দিতে শুনেছি মোদিজীকে৷ দিদি ও দিদি, ও দিদি, আমরা ভুলিনি। বাংলার মানুষ ভোলেনি, চরম মমতা বিরোধীও সেদিন ঘৃণায় ফেটে পড়েছিল, ফলাফল সবাই জানে। দিল্লিতে, মনে আছে? ইভিএম কা বাটন এউসা দবাও কি উধর শাহিনবাগ মে উনকো কারেন্ট কা ঝটকা লগে৷ বলেছিল ছোটা মোটাভাই৷ গোলি মারো শালোঁ কো, বলেছিল মোদী মন্ত্রিসভার মন্ত্রী৷ ফলাফল? সব্বার জানা আছে।

এবার ইউপি-তে সেই একই খেলা শুরু হয়েছে৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ভোট খতম হোনে দো, গর্মি উতার দুঙ্গা৷ এক্কেবারে হিন্দি সিনেমার ভিলেনের মুখের বুলি৷ ১০ মার্চ কে বাদ বুলডোজার চলে গা৷ বলেছেন যোগী আদিত্যনাথ৷ মানুষ শুনছে, মানুষ জবাব দেবে, নিশ্চয়ই দেবে। আমরা কেবল যা বলেছেন, বলছেন, তা জানাতে পারি৷ এ নিয়ে আলোচনার কোনও মানে নেই৷ কিন্তু ওই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশেই অমিত শাহ, দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, এক জনসভায় বললেন, ওহ লোগ, মানে সমাজবাদী দল বা জোট, জিন্না কে তরফ হ্যায়৷ হম প্যাটেল কে পুজারি হ্যায়৷ ওহ তো জিন্না কো পুজতে হ্যায়। আসুন উনার এই ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা নিয়ে কিছু কথা বলা যাক৷ উনি মিথ্যেই বলছেন না, ইতিহাস কে বিকৃত করছেন।

১৯৪২, গান্ধীজীর নেতৃত্বে দেশ উত্তাল৷ ইংরেজ ভারত ছাড়ো, একটাই স্লোগান। দেশের হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, দেশবাসী রাস্তায়, একদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, অন্যদিকে ভারতবর্ষের এই ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সামনে, ইংরেজকে অসহায় দেখাচ্ছিল৷ সেই সময় ইংরেজ ভারতীয় রাজনীতিতে দুজনকে সঙ্গে পেয়েছিল৷ দুটো সংগঠন এগিয়ে এসেছিল ইংরেজদের সাহায্য করতে। মহম্মদ আলি জিন্নাহ, তাঁর মুসলিম লিগকে নিয়ে এগিয়ে এলেন৷ আরএসএস সংঘচালক গোলওয়াল্কর এগিয়ে এলেন৷ পাশে দাঁড়ালেন ইংরেজদের৷ তাঁদের সংগঠনের প্রত্যেককে সার্কুলার দিয়ে জানানো হল, ভারত ছাড় আন্দোলনে না নামতে৷ এই বাংলায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আর একধাপ এগিয়ে ইংরেজদের এই আন্দোলন দমন করার জন্য, তিনি বা তাঁর সংগঠন কী কী করতে পারেন তা লিখে জানালেন৷ সেসব চিঠি সার্কুলার তো আছে আমাদের মহাফেজখানায়৷ তার বহু আগেই তো নিজেকে নিজেই বীর বলা সাভারকার, লিখিত মুচলেকায় জানিয়েছিলেন যে তিনি ব্রিটিশদের সাহায্য করতে, ব্রিটিশ শাসন বরকরার রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন৷ সেদিন জিন্না আর সাভারকর, গোলওয়াল্কর, আরএসএস আর মুসলিম লিগ দাঁড়িয়েছিল ইংরেজদের পাশেই৷ তারাই ছিল ভারত ছাড় আন্দোলনের বিরোধী, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের দুই বিশ্বাসঘাতক সংগঠন।

আজ তারা, সেই আরএসএস-এর রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপির দু’নম্বর নেতা বলছেন, বিরোধীরা জিন্নার পুজারি। তার সঙ্গে সংযোজন, তাঁরা, মানে বিজেপি নাকি প্যাটেলের পুজারি৷ আসুন সেই মিথ্যেটা নিয়েও কটা কথা বলা যাক। দেশভাগ নিশ্চিত, দাঙ্গা শুরু হয়েছে৷ দ্বিখন্ডিত দেশে স্বাধীনতা এল৷ কিন্তু চারিদিকে দাঙ্গা৷ যেদিন দেশ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছে, সেদিন গান্ধিজী কোনও অনুষ্ঠানে এলেন না৷ চুপচাপ বসে চরখা কাটছেন৷ পরদিন থেকে আরও দাঙ্গার খবর৷ এরপর গান্ধিজী সেই জায়গায় যেতে লাগলেন, সঙ্গে কিছু অনুগামী, দাঙ্গার শহরে যাচ্ছেন, পদযাত্রা করছেন, দাঙ্গা থামলে আবার অন্য জায়গায়, কলকাতাতেও এলেন, দাঙ্গা থামলো। ওদিকে আরএসএস কী করছে? তাদের সরসংঘচালক কী করছেন, তিনিও ঘুরছেন, জায়গায় জায়গায় গিয়ে বিষ চড়াচ্ছেন, যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে দাঙ্গার আগুন জ্বলে উঠছে, সেদিন আরএসএস বুঝেছিল, গান্ধীজীকে থামাতে হবে৷ মানুষ গান্ধীকে নয়, তাঁর বিচারধারা কে, তাঁর বিচারধারার পিছনে, আদর্শের সামনে ক্রমশ মানুষ জড়ো হচ্ছে, বিষ ধুয়ে যাচ্ছে৷ ৭ ডিসেম্বর ১৯৪৭৷ দিল্লির রামলীলা ময়দানে গোলওয়ালকর বলছেন, শিবাজি আর রাণা প্রতাপের কথা, হিন্দুত্বকে জাগিয়ে তোলার কথা, পাকিস্তানকে শেষ করে দেবার কথা।

সেদিন সন্ধ্যেই, রোহতক রোডে সংঘের এক সভায় তিনি বলছেন, ‘We should be prepared for guerilla warfare on the lines of the tactics of Shivaji. The Sangh will not rest content until it had finished Pakistan. If anyone stood in our way we will have to fight him to, whether it was Nehru Government or any other Government. The Sangh could not be won over.’ তারপর তিনি কী করতে হবে, সেটা জানাচ্ছেন, Mahatma Gandhi wanted to keep the Muslims in India so that the Congress may profit by their votes at the time of election. But, by that time, not a single Muslim will be left in India. … Mahatma Gandhi could not mislead them any longer. We have the means whereby such men can be immediately silenced, but it is our tradition not to be inimical to Hindus. If we are compelled, we will have to resort to that course too. পুলিশের সি আই ডি ইন্সপেক্টর কর্তার সিং এই রিপোর্ট সেদিন জমা করছেন। সেদিনই তিনি গান্ধীজীকে স্তব্ধ করে দেবার কথা বলেছিলেন৷ স্তব্ধ করার পরিকল্পনা তার বহু আগেই শুরু হয়েছিল।

সাভারকরের মন্ত্রশিষ্য নাথুরাম গডসে, একা জোগাড় করেন নি বেরেত্তো পিস্তল৷ বহু লোক ছিল এই ষড়যন্ত্রের পিছনে। তারপর প্রার্থনা সভায়, অসুস্থ, অশক্ত সেই প্রবীণ মানুষের বুকে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন গরম শিসে৷ মরার আগে গান্ধিজী বলেছিলেন, হে রাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই সারা দেশে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে৷ নাগপুরে আরএসএস কার্যালয়ে মিষ্টি বিতরণ হয়৷ কাজ শেষ, গান্ধী শেষ। ২ তারিখে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় রাজঘাটে৷ সেদিন মরদেহের একপাশে বসেছিলেন নেহেরু, অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বল্লবভাই প্যাটেল। ৪ তারিখ সন্ধ্যেয় স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে নির্দেশ জারি করা হল, দেশজুড়ে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। সারা দেশের মেজাজ দেখে তার আগেই আরএসএস নেতারা ঢুকে পড়েছিলেন গর্তে৷ যাদের পক্ষে তা সম্ভব ছিল না, তাদের গ্রেপ্তার করা হল। সরাসরি গান্ধী হত্যার অভিযোগেই গ্রেপ্তার হন সাভারকার।

অনেকে বলেন, বলার চেষ্টা করেন যে হিন্দু মহাসভা আর আর এস এস এর মধ্যে নাকি দারুণ বিরোধ ছিল, অথচ জুলাই মাসে হিন্দু মহাসভার নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি প্যাটেক কে চিঠি লিখে এই ব্যান তুলে নিতে বলছেন, জবাবে ১৮ জুলাই ১৯৪৮, প্যাটেল লিখছেন, “There is no doubt in my mind that the extreme section of the Hindu Mahasabha was involved in the conspiracy [to kill Gandhi]. The activities of the RSS constituted a clear threat to the existence of Government and the State. Our reports show that those activities, despite the ban, have not died down. Indeed, as time has marched on, the RSS circles are becoming more defiant and are indulging in their subversive activities in an increasing measure.” বলছেন কেবল আরএসএস নয়, হিন্দু মহাসভার লোকজন ও এই হত্যা ষড়যন্ত্রের সমান অংশীদার ছিল৷ লিখেছেন আরএসএস ভারতবর্ষ রাষ্ট্রের পক্ষে এক বিপদজনক সংগঠন। ওদিকে গোলওয়ালকর আগে বড় বড় কথা বলার পরে আপাতত নরম সুরে, সাভারকর তার আগেই মুচলেকা দিয়ে চিঠি লিখেছেন, রাজনীতিতেই থাকবেন না, এমন কথাও বলেছেন, মুচলেকা দেওয়া তেনার রক্তেই ছিল।

গোলওয়ালকরের চিঠির জবাবে প্যাটেল যা লিখেছিলেন, তা এখনই ঘাড় ধরে শোনানো উচিত আজকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে। প্যাটেল লিখছেন, “Organising the Hindus and helping them is one thing but going in for revenge for its sufferings on innocent and helpless men, women and children is quite another thing…apart from this, their opposition to the Congress, that to of such virulence, disregarding all considerations of personality, decay of decorum, created a kind of unrest among the people. All their speeches were fill of communal poison. It was not necessary to spread poison in order to enthuse the Hindus and organise for their protection. As a final result of the poison, the country had to suffer the sacrifice of the invaluable life of Gandhiji. Even an iota of the sympathy of the Government, or of the people, no more remained for the RSS. In face opposition grew. Opposition turned more severe, when the RSS men expressed joy and distributed sweets after Gandhiji’s death. Under these conditions, it became inevitable for the Government to take action against the RSS…Since then over six months have elapsed. We had hoped that after this lapse of time, with full and proper consideration, the RSS persons would come to the right path. But from the reports that come to me, it is evident that attempts to put fresh life into their same old activities are afoot.” লিখছেন, আরএসএস-এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গান্ধিজীকে হত্যা করা হয়েছে৷ গান্ধী হত্যার পরে আরএসএসের লোকজন মিষ্টি বিতরণ করেছে৷ লিখছেন ৬ মাস কেটে যাবার পরেও তাঁর কাছে খবর আছে, আরএসএস তার কর্মসূচি বদলায়নি। আজ এতদিন পরে এক তড়িপার অপরাধী নিজেকে প্যাটেলের পুজারি বলছে, যে প্যাটেল তাঁর জীবনের শেষদিন পর্যন্ত গান্ধী হত্যার জন্য আরএসএসকে দায়ী করেছেন, আরএসএসকে ভারতবর্ষ রাষ্ট্রবিরোধী বলেছেন।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২
১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯
২০২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬
২৭ ২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

জঘন্য ফুটবল, সুপার কাপ থেকে বিদায় ইস্টবেঙ্গলের
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
২০২৬ বিশ্বকাপ খেলবেন? বড় ঘোষণা মেসির
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
সোমবার এসএসসি ভবনের সামনে ধরনায় বসবেন চাকরিহারারা
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
অলৌকিক! মন্দির উদ্বোধনের আগেই দিঘায় ভেসে এল জগ্ননাথ মূর্তি
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
পাকিস্তানে আক্রান্ত হিন্দু মন্ত্রী, নিন্দা শেহবাজ শরিফের
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
‘রাম-বাম’ তত্ত্বে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশকে খোঁচা কুণাল ঘোষের
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
নতুন করে অশান্তির খবর নেই, এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার ২৮৯ : জঙ্গিপুর পুলিশ সুপার
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
খেলা হবের পাল্টা ‘নেমে খেলার ডাক’ সেলিমের
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
মুর্শিদাবাদ প্রসঙ্গে সম্প্রীতির বার্তা, ব্রিগেডে কী বললেন সেলিম?
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
ব্রিগেড থেকে তৃণমূল-বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ অনাদি সাহুর
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
দার্জিলিং-এ বিকল্প রাস্তা চাইছে মোর্চা, কেন্দ্রকে চিঠি রোশন গিরির
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
ভুল বোঝাবুঝি থেকে মারাত্মক ঘটনা ভাবতে পারছে না বিহারের বেতিয়ার পুলিশ লাইন
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
আজই প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে পারে লিভারপুল!
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেবেন রাহুল
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
জামাই বরণ করতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের অপেক্ষায় অন্ধ্রের গ্রাম
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team